মানিকগঞ্জে কালীমন্দিরে অগ্নিকাণ্ড, স্থানীয়রা বলছেন রহস্যজনক

প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জ
Thumbnail image
ছবি: প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের ঘোনা সদরপুর এলাকার একটি কালীমন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের দাবি, এটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হতে পারে।

এদিকে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে নাকি বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।

স্থানীয়রা জানান, ভোর পাঁচটার দিকে হাঁটতে বের হয়ে প্রথমে মন্দিরে আগুন দেখতে পান তারা। পরে আশপাশের মানুষজন ছুটে এসে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

২

মন্দিরসংলগ্ন বাড়ির বাসিন্দা কমলা রানী (৫৫) বলেন, ‘ফজরের আজানের পর হাঁটতে বের হই। মন্দিরে গিয়ে দেখি আগুন জ্বলছে। সবাইকে ডেকে আনি, এরপর সবাই মিলে আগুন নিভাই।’

দক্ষিণ পাশের আরেক বাসিন্দা দিলীপ কুমার দাস (৫১) বলেন, ‘ঘুমে ছিলাম। স্ত্রী ডেকে তুললে দেখি মন্দিরে আগুন। তখন গিয়ে নেভাই।’

মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিতাই চন্দ্র দাস জানান, ‘মন্দিরে তালা ছিল, চাবি আমার কাছেই ছিল। খবর পেয়ে এসে দেখি গেট তালাবদ্ধ, ভেতরে প্রতিমা জ্বলছে, টিনের চালা খসে পড়ছে।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, ‘সকালবেলা হাটতে বের হয়েছিলাম। পরে খবর পেয়ে ফিরে এসে লোকজন নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি।’

তবে কিভাবে আগুন লেগেছে, সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘোনা সদরপুরে প্রায় ৬০০ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকের বসবাস। মন্দিরের চারপাশে বেশির ভাগ পরিবারই হিন্দু। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই তারা আতঙ্কে রয়েছেন। সন্ধ্যার পর এলাকায় লোক চলাচল কমে যায়।

স্থানীয় দোকানদার বীরেন জানান, ‘কয়েকদিন ধরে মাঝরাতে একটি হাইচ গাড়ি আসে। মন্দির থেকে প্রায় ১০০ গজ উত্তরে থামে। ৮–১০ জন লোক মন্দিরের আশপাশে ঘোরাঘুরি করে। আমার ধারণা, পরিকল্পিতভাবেই এই আগুন দেওয়া হয়েছে।’

৪

তিনি আরও বলেন, ‘মন্দিরের পেছনের দুটি ছোট জানালা দিয়ে আগুন ধরানো হয়ে থাকতে পারে।’ বীরেনের দাবি, শিল্পী মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে যাঁরা আগুন দিয়েছিল, তারাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।

ঘটনার পরপরই মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মেজবাহ উল সাবেরিন এবং সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম আমান উল্লাহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘মন্দিরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে কিংবা শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে কিনা, তা তদন্ত না করে নিশ্চিত হওয়া যাবে না।’

পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুন বলেন, ‘ঘটনাটি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

অপরাধ নিয়ে আরও পড়ুন