টাঙ্গাইলে অনুমোদন ছাড়া তৈরি হচ্ছে শত শত ব্যাটারিচালিত রিকশা ও অটোরিকশা। এতে পৌরসভার প্রায় সব সড়কেই চলাচল করছে ধারণক্ষমতার চেয়ে বহু বেশি যানবাহন, ফলে শহরে সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ যানজট। অফিস সময় ও স্কুল–কলেজের ব্যস্ত সময়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পড়ে সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে পড়ছে।

পৌরসভার লাইসেন্স শাখার তথ্য অনুযায়ী, আগের মেয়র সিরাজুল হক আলমগীরের সময় ৬ হাজার প্যাডেল রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হলেও অসাধু কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় সেগুলো এখন ব্যাটারিচালিত রিকশায় ব্যবহার করা হচ্ছে—যা নিয়ম বহির্ভূত। অনেক মালিক একই নামে একাধিক লাইসেন্স নিয়ে ব্যাটারি রিকশা চালকদের কাছে ভাড়ায় দিচ্ছেন। বাস্তবে শহরে অনুমোদিত সংখ্যার তিন থেকে চার গুণ ব্যাটারিচালিত রিকশা চলছে।

টাঙ্গাইলে মা-মটরস, বিসমিল্লাহ মটরস, একতা মটরসসহ ৩০টিরও বেশি অনুমোদনহীন কারখানায় এসব রিকশা তৈরি হচ্ছে। এসব কারখানায় কারিগরদের কারিগরি বা শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। ফলে নিম্নমানের রিকশা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যাটারি চার্জে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের কারণে লোডশেডিংও বাড়ছে।

চিলাবাড়ির মা-মটরসে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষতার অভাবে ভাড়া করা কারিগর ও এক কিশোরকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বডি তৈরি করতে হচ্ছে। কারখানার মালিক দুলাল মিয়া জানান, তাঁর কোনো অনুমোদন বা কারিগরি সার্টিফিকেট নেই, রিকশা মেকার হিসেবে আগের অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি এই কাজ করছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সোরহাব হোসেনও স্বীকার করেন, কারখানাটি অনুমোদিত কিনা তিনি জানেন না এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। স্থানীয় শিক্ষক, আইনজীবী ও সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ করেন, অতিরিক্ত ও অনুমোদনহীন ব্যাটারি রিকশার কারণে শহর অচল হয়ে পড়ছে। চালকদের প্রশিক্ষণ না থাকায় যত্রতত্র পার্কিং ও যাত্রী তোলার কারণেও যানজট বাড়ছে। এসব অবৈধ কারখানা বন্ধের দাবি জানান তারা।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীন মিয়া বলেন, তাঁর দায়িত্বকালে এমন কারখানার সন্ধান মিললে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পৌর প্রশাসক মো. শিহাব রায়হান জানান, নতুন কোনো ব্যাটারি রিকশার লাইসেন্স দেওয়া হয়নি এবং অবৈধ রিকশা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে শিগগিরই যৌথ অভিযানে এসব অবৈধ রিকশা আটক ও ডাম্পিংয়ের উদ্যোগ নেওয়া হবে।