আদালতে হত্যা মামলার আসামি এক আওয়ামী লীগ নেতার রিমান্ড শুনানিকালে অপ্রীতিকর পরিস্থিতির মুখে এজলাস ত্যাগ করেছেন সাতক্ষীরার আমলি-৩নং আদালতের বিচারক মারুফা আক্তার। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার সময় এজলাস ত্যাগের পর দিনভর ওই আদালতের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিচারপ্রার্থীরা পড়েন দুর্ভোগে।

সাতক্ষীরা জজকোর্টের কয়েকজন আইনজীবী জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন আশাশুনির প্রতাপনগরে হিজলিয়া গ্রামের রহিম আলী সরদারের ছেলে আলমসহ তিনজন মারা যান। গুলিতে আহত হন আরও সাতজন।

এ ঘটনায় আলমের বাবা রহিম আলী বাদী হয়ে ওই বছরের ১৫ আগস্ট চেয়ারম্যান জাকির হোসেনসহ অজ্ঞাত ১৫ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয় আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিলকে।

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক মারুফা আক্তার আসামি আবু হেনা শাকিলকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের সঙ্গে শুনানিতে অংশ নেওয়া নুরুল আমিন বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন, তিনি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর। আওয়ামী সরকারের সময় তার নিয়োগ, তিনি ওই চেয়ারে বসার যোগ্য নন। এ ধরনের একটি মামলায় কেন আবু হেনা শাকিলকে কারাফটকে রিমান্ড মঞ্জুর করলেন, তা তাদের জানতে বাকি নেই।

একপর্যায়ে বিচারক ১১টার দিকে এজলাস ছেড়ে নিজের খাস কামরায় চলে যান। বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত ওই বিচারক এজলাসে না ওঠায় বিচার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।

এ ব্যাপারে অ্যাড. নুরুল আমিন বলেন, বিচারক একটি স্পর্শকাতর হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা আবু হেনা শাকিলের থানা হেফাজতে রিমান্ড মঞ্জুর না করে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়াটা তারা মেনে নিতে পারেননি। সে কারণে তিনি ওই বিচারককে উদ্দেশ করে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর বলেছেন।

সাতক্ষীরা বিচারিক আদালতের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বিচারক মারুফা আক্তারের বরাত দিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আদালত থেকে বিচারক নেমে যাওয়ার পর শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আর এজলাসে উঠতে পারেননি।