মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ার মেসার্স মরিয়ম ট্রেডার্স দীর্ঘদিন ধরে সরকারি অনুমোদনবিহীনভাবে সার বিক্রি করছে। দোকানটিতে সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে বস্তাপ্রতি ৬৫০–৭৫০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা বিষয়টি জানলেও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

গত ২০ নভেম্বর দুপুরে দেখা যায়, কৃষকরা দোকানে ভিড় করেছেন। ঘিওরের আব্দুল বারেক দুই বস্তা ডিএপি কিনেছেন ১,৭০০ টাকায়। টাঙ্গাইলের মজিবর রহমান ডিএপি নিয়েছেন ১,৮০০ টাকায় এবং টিএসপি ১,৭৫০ টাকায়। এছাড়া, বালিয়াটির রাসেল মিয়ার কাছ থেকেও ডিএপি বিক্রি হয়েছে ১,৮০০ টাকায়।

উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ খোরশেদ আলম জানান, দোকানটির কোনো লাইসেন্স নেই, তাই তদারকির আওতায় পড়ে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. তানিয়া তাবাসসুম বিষয়টি দেখেন। অভিযোগ আছে, স্থানীয় বিএনপি নেতা আবুল বাশার দোকানটিকে সমর্থন দিয়েছেন। জেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহজাহান সিরাজ বলেন, অতিরিক্ত দামে বিক্রি হলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ফার্টিলাইজার এসোসিয়েশনের জেলা সভাপতি মিজানুর রহমান, দোকান মালিক সিদ্দিকুর রহমান ও কৃষি কর্মকর্তা খোরশেদ আলম সংবাদকের সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সার শুধুমাত্র বিএডিসি ও বিসিআইসির অনুমোদিত ডিলারদের মাধ্যমে বিক্রি করা যেতে পারে। কিন্তু মরিয়ম ট্রেডার্সের তিনটি গোডাউনে নিয়মিত বড় পরিমাণে সার মজুদ থাকে। তদন্তে জানা গেছে, লাইসেন্সধারী কিছু ডিলার তাদের বরাদ্দকৃত সার কালোবাজারে বিক্রি করে এই দোকানকে অতিরিক্ত দামে সরবরাহ করছে।

সার নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৬ অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া সার বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ, শাস্তি ছয় মাসের কারাদণ্ড বা জরিমানা। ভোক্তা অধিকার আইনে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলে এক বছর কারাদণ্ড বা ৫০,০০০ টাকা জরিমানা হতে পারে। অভিযোগ আছে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নীরবতা এবং স্থানীয় তদবিরের কারণে অবৈধ ব্যবসা বন্ধ হয়নি। কৃষকরা দাবি করছেন, তদন্ত হলে এ ব্যবসার পেছনের লোকজন চিহ্নিত করা সম্ভব হবে।