কান্নার রোল থামছে না ময়মনসিংহের ভালুকার কাইচান গ্রামে। বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজের লাশ যখন গ্রামের বাড়ি পৌঁছায়, তখন যেন পুরো গ্রাম শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে। সন্তানের নিথর দেহ দেখে বারবার মুর্ছা যাচ্ছেন মা পারভিন আক্তার, আহাজারিতে ভেঙে পড়েছেন বোন জুঁই। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি প্রবাসী বাবা জসিম উদ্দিনও।

কুয়েত প্রবাসী জসিম উদ্দিন তাঁর একমাত্র ছেলে ও মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিগত আট বছর ধরে প্রবাসে জীবন কাটাচ্ছেন। ছেলের লাশ দেখে তিনি বলেন, সন্তানদের সুখের আশায় নিজেকে বিসর্জন দিয়েছি। আজ সেই ছেলেই আর ফিরবে না। হত্যাকারীদের ভিডিও আছে, তা জেনেও এখনো কেন ওরা ধরা পড়ছে না?" এই কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

নিহত পারভেজের মামা সবুজ বলেন, "আমার ভাগিনাকে সন্ত্রাসীরা মেরে ফেলেছে। আমরা এই নির্মম হত্যার বিচার চাই, চাই হত্যাকারীদের ফাঁসি।"

জানা যায়, জাহিদুল ইসলাম পারভেজ ছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মেধাবী ছাত্র। গ্রামের কাইচান পাঠকবাড়ীর ছেলে পারভেজ ছিলেন শান্ত, ভদ্র ও নিরীহ প্রকৃতির।

তার সহপাঠী মাসুদ জানান, "পরীক্ষা সামনে, সে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঢাকায় যাওয়ার সময় কেউ ভাবেনি, এটাই তার শেষ যাত্রা হবে।"

পারভেজের লাশ কাইচান পাঠকবাড়ী ঈদগাহ মাঠে রাখা হয়েছে একটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে। তাকে এক নজর দেখতে সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছেন শত শত মানুষ।

জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আজ রোববার রাত ৯টায়, এরপর পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে।

এদিকে শোকসন্তপ্ত পরিবারকে শান্তনা জানাতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যের এক প্রতিনিধি দল রবিবার বিকেলে পারভেজের গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়।

উল্লেখ্য, শনিবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল ৪টায় ঢাকার প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নির্মমভাবে খুন হন জাহিদুল ইসলাম পারভেজ। এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সহপাঠী ও এলাকাবাসী। তারা দ্রুত হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।