দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে স্বল্পমূল্যের ভরসা হয়ে উঠেছে টিসিবির পণ্য। কিন্তু প্রতি মাসের প্রথম সপ্তাহের দুই দিনের এই কার্যক্রমে লাইনের দীর্ঘ ভিড়ে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকেই পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত পণ্য।

ভোর থেকে শুরু হয় চাল, ডাল, তেল, চিনি, সাবানসহ প্রয়োজনীয় পণ্য কেনার অপেক্ষা। কিন্তু সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও শেষমেশ বহু মানুষ ফিরে যাচ্ছেন খালি হাতে।

মাঠ পরিদর্শনে দেখা যায়—রোদে-বৃষ্টিতে ক্লান্ত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নারী-পুরুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছেন টিসিবির দোকানের সামনে।

বৃদ্ধা মরিয়ম বিবি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

“সকাল ৮টা থেকে দাঁড়িয়ে আছি, বিকেল ৫টায় বলল আর পণ্য দেবে না। বড়লোকরা কি জানে ক্ষুধার কষ্ট কী!”

তিনি জানান, দুই দিন কাজ করতে না পারায় সংসার চালাতে বিপাকে পড়েছেন, অসুস্থ স্বামীর জন্যও ওষুধ কিনতে পারছেন না।

রিকশা চালক কুদ্দুসের অভিযোগ আরও করুণ—

“স্ত্রীকে বলেছিলাম টিসিবির জিনিস এনে রান্না বসাতে। গত রাত থেকে পরিবার না খেয়ে আছে। কিন্তু বিকেলে জানানো হলো—পণ্য শেষ!”

কুন্দল এলাকার মকবুল বলেন,

“আমরা তো ফ্রি নিতে আসি না। টাকা দিয়েই কিনি। তারপরও কেন এমন হয়? ডিলাররা প্রায়ই এমন সমস্যার সৃষ্টি করে—এটা কি প্রশাসন দেখে না?”

ডিলার সাকিল আহমেদের দাবি,
সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পণ্য বিতরণ করা হয়। ১৪০০ কার্ডধারীর জন্য বরাদ্দ থাকলেও অতিরিক্ত লোকজনকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। তবুও কেউ না পেলে তাদের কিছু করার নেই।

দ্রব্যমূল্যের চাপে সাধারণ মানুষের ভরসা যেখানে টিসিবি, সেখানে পণ্য সংকট, বিশৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা নতুন করে প্রশ্ন তুলছে—এই সহায়তা কি প্রকৃত ভোক্তার কাছে পৌঁছাচ্ছে?