চকরিয়া উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউসার উদ্দিন কছিরসহ তার দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি ও অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের জমি দখল, সশস্ত্র হামলা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনায় চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট আবুল কালামের মেয়ে হাসিনা বেগম জানান, ২০১২ সালে তিনি চকরিয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভরামুহুরী মৌজায় ১১.৩৩ শতক জমি ক্রয় করেন। সেখানে দুটি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেন এবং পরে একটি দোতলা ভবন নির্মাণ করে পরিবারসহ বসবাস করতে থাকেন।

কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে যুবলীগ নেতা কছির, তার ভাই সাবেক যুবলীগ সভাপতি আব্বাছ উদ্দিন ও মোহাম্মদ খোকন তার জমির ওপর নজর দেন। জমি দখল নিতে তারা ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন এবং একপর্যায়ে ২০১৫ সালের ৪ মে সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে এসে বসতভিটার একটি অংশ দখল করে নেন।

হাসিনা বেগম অভিযোগ করেন, জমি ছাড়ার বিনিময়ে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় তার বসতবাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়। তিনি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করলেও তৎকালীন সংসদ সদস্য জাফর আলমের প্রভাবে কোনো অগ্রগতি হয়নি।

২০২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি হাসিনা বেগম চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যুবলীগ নেতা কছির, তার দুই ভাই আব্বাছ উদ্দিন, মোহাম্মদ খোকনসহ আরও দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন (মামলা নং: সিআর ২৩০/২৪)। আদালত চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

২০২৪ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা দখলের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলা দায়েরের পর থেকে হাসিনা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা আরও বেশি হুমকির মুখে পড়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যুবলীগ নেতা কছির ও তার ভাইরা মামলা তুলে নিতে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এবং এখনো দখলকৃত বাড়িটি ছাড়েননি বলে জানান হাসিনা বেগম।

এ ছাড়া কছিরের বিরুদ্ধে অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ উঠেছে। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, তিনি ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তরুণদের বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতেন। ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন জানিয়েছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কছির তাকে সমকামিতার প্রস্তাব দেন, যার প্রমাণ হিসেবে একটি স্ক্রিনশটও রয়েছে।

এ বিষয়ে যুবলীগ নেতা কছিরসহ অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।