কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় পাহাড় ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পকেন্দ্রিক ভয়াবহ অপহরণ ও মানবপাচারের দৌরাত্ম্য থামছে না। সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের হাতে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে পর্যটক, এমনকি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও নিরাপদ নয়। কুখ্যাত ডাকাত শফি, হাসান, আবু বক্কর ও কেফায়েতের মতো অপরাধীদের নেতৃত্বে একটি বিশাল সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে উঠেছে, যারা আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত।

এই ভয়ঙ্কর চক্র দিনের পর দিন অপহরণের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সর্বশেষ ঘটনায় মৌচনী নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড় থেকে দুইজনকে অপহরণ করা হয়। নির্যাতনের পর মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায় করে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, বাহারছড়ার পাহাড়ে বর্তমানে পাঁচজন ডাকাতদের হাতে বন্দি রয়েছে। তাদের স্বজনদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই চক্রের সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একাধিক অপরাধী বাহিনীও জড়িত।

টেকনাফের প্রতিটি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও পার্বত্য এলাকায় ডাকাতদের শক্তিশালী আস্তানা রয়েছে। এসব বাহিনীর কাছে ভারী অস্ত্রশস্ত্র থাকায় তারা প্রশাসনের জন্যও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসন চক্রটিকে দমন করার চেষ্টা করলেও, তারা বারবার গা ঢাকা দিচ্ছে এবং নতুন কৌশলে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় অব্যাহত রেখেছে।

অপহৃতদের উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হয়েছে। টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ বাহারছড়ার পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে।

র‍্যাব-১৫ কমান্ডার তৌহিদুল মুবিন খান জানিয়েছেন, অপহৃতদের উদ্ধারে এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তার করতে র‍্যাবের বিশেষ অভিযান চলমান রয়েছে।

টেকনাফের সাধারণ মানুষ চায়, এই ভয়াবহ অপহরণ বাণিজ্যের স্থায়ী সমাধান। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে এবং পাহাড়ি এলাকায় সন্ত্রাস দমনে টেকসই অভিযান চালাতে হবে। অন্যথায়, এই চক্র আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা আরও হুমকির মুখে পড়বে।

টেকনাফের পাহাড়ে কখন শেষ হবে এই অপহরণের দুঃস্বপ্ন? সেটাই এখন স্থানীয়দের সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।