সাতক্ষীরায় মোবাইল কোর্টে জেল ও জরিমানা

প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির হাতে ধরা পড়লো খাবার অনুপযোগী নিম্নমানের দুর্গন্ধযুক্ত খাসি ও ধাড়ী ছাগলের মাংস। রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ৮ টায় সাতক্ষীরা শহরের লাবণী মোড় থেকে এ মাংস জব্দ করা হয়। সম্প্রতি জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারি অলিউর রহমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ফেইসবুকে প্রচার করেন যে, খাবার অনুপযোগী নিম্নমানের মাংস সাতক্ষীরা শহরের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করে এবং ওই সব মাংস হোটেল রেস্তোরায় বিক্রি করা হয়।

হোটেল রেস্তোরাঁর মালিকরা মাংস ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাংস কিনছে না বলে অভিযোগ করে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির ওই বক্তব্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভা করে। প্রতিবাদ সভায় নেতৃবৃন্দরা জানান, তারা রুচিসম্মত ও উন্নত মানের খাবার পরিবেশনের জন্য যেসব দোকান থেকে মাংস ক্রয় করে সেসব দোকানের মেমো সংগ্রহ করে থাকেন। সেই সাথে উন্নত রুচিসম্মত খাবার পরিবেশনে আমরা বদ্ধপরিকর।

এরপর থেকে মাংস ব্যবসায়ীরা বাইরে থেকে আগত নিম্নমানের মাংস শহরে যেন ঢুকতে না পারে সেজন্য তারা গোপনে বিভিন্ন জায়গায় পাহারা দিতে থাকে। এরই ফলে এই নিম্নমানের খাওয়ার অনুপযোগী দুর্গন্ধযুক্ত, মাংসের কালার নষ্ট খাসি ও ধাড়ী ছাগলের ৩০ কেজি মাংস তারা জব্দ করে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কবির মিট এর প্রোপাইটার মোঃ আব্দুল কাদের জানায়, সে কুলিয়া বাজারে ছাগল জবাই করে সে মাংস শহরের কাচ্চি ডাইনসহ কয়েকটি হোটেলে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিয়ে এসেছিল। কবির মিট নামে তার মাংসের দোকান কামালনগর বউ বাজারে আছে বলে জানিয়েছে সে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পৌরসভার স্যানেটারী ইন্সপেক্টর মো. রবিউল আলম লাল্টু বলেন, ৩০ কেজি মাংস জব্দ তালিকা করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুল কাদের ও সেক্রেটারি অলিউর রহমান জানান, অভিযুক্ত মাংস ব্যবসায়ী আমাদের সমিতি ভুক্ত নয়। শহরের বাইরের থেকে কোন মাংস শহরে বিক্রি করা যাবে না। আমরা বেশ কয়েকদিন ধরে শহরের বিভিন্ন স্থানে পাহারা দিচ্ছিলাম কোন ধরনের যেন নিম্নমানের মাংস শহরে প্রবেশ করতে না পারে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি সাতক্ষীরা জেলা শাখার সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রেজাউল ইসলাম জানান, আমরা চাই এই অভিযুক্ত ব্যক্তি দুর্গন্ধযুক্ত মাংস কোন কোন হোটেলে সাপ্লাই দেয়। সেইসব হোটেল মালিকদের নাম জানতে চেয়েছিলেন , যারা খাওয়ার অনুপযোগী অধিক লাভের আশায় দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে মৃত ছাগলের পচা বাঁশি দুর্গন্ধযুক্ত মাংস ক্রয় করে, আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই সকল মাংস ক্রয়কারী হোটেল গুলোকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করবো। রুচিসম্মত ও মানসম্মত খাবার পরিবেশন করতে আমরা নিরলকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ ধরনের মাংস ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে শাস্তি প্রদান করতে হবে। যেন তারা এ ধরনের খাওয়ার অনুপযোগী মাংস বিক্রয় করতে না পারে।

নিম্নমানের খাওয়ার অনুপোযোগী মাংস জব্দ করার সময় উপস্থিত ছিলেন মোবাইল কোটের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রট মো. তাজুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকার সাতক্ষীরার সরকারি পরিচালক মেহেদী হাসান, নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তর এর কর্মকর্তা দীপঙ্কর দত্ত, সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি অফিসার ডা. বিপ্লব জিৎ মন্ডল ও সাতক্ষীরা কাটিয়া ফাঁড়ির এসআই শেখ বোরহান এবং সাতক্ষীরার বহু প্রিন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রাণিসম্পদ অফিসের ভেটেনারি ডা. বিপ্লব জিৎ মন্ডল জব্দকৃত মাংস পরীক্ষা করার পর মোবাইল কোর্টের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম মেয়াদ উত্তীর্ণ, মাংসের রং নষ্ট ও দুর্গন্ধ ছড়ানো মাংস সরবরাহের জন্য ৬৭০/২০২৫ নং মামলায়।৪৫ ধারায় দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামের রুহুল কুদ্দুসের ছেলে মোঃ আব্দুল কাদেরকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা অর্থদণ্ড করেন এবং ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে জব্দকৃত মাংস উপস্থিত সকলের সামনে বিনষ্ট করা হয়।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

গ্রেফতার নিয়ে আরও পড়ুন

এরপর থেকে মাংস ব্যবসায়ীরা বাইরে থেকে আগত নিম্নমানের মাংস শহরে যেন ঢুকতে না পারে সেজন্য তারা গোপনে বিভিন্ন জায়গায় পাহারা দিতে থাকে। এরই ফলে এই নিম্নমানের খাওয়ার অনুপযোগী দুর্গন্ধযুক্ত, মাংসের কালার নষ্ট খাসি ও ধাড়ী ছাগলের ৩০ কেজি মাংস তারা জব্দ করে

১৪ ঘণ্টা আগে

চট্টগ্রামের বাসিন্দা ও ৫৭ মামলার আসামি মোহাম্মদ রুহুল আমিন(৫৫), প্রায় পাঁচ বছর ধরে দুবাইতে পলাতক ছিলেন। গ্রেফতার এড়াতে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে দেশে ফিরছিলেন। তবে সেখান থেকেই তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়েছেন।

১৪ ঘণ্টা আগে

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশের (আটাব) এর অনিয়ম ও দুর্নীতি বের করে পুরস্কার হিসেবে ওএসডি হয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোতাকাব্বরি আহমেদ। গত ৩০ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে চিঠি দিয়েছে।

২ দিন আগে

পরিবারের শিশুদের ঝগড়া থেকে শুরু হয় অভিভাবকদের সংঘর্ষ, একপর্যায়ে বড় ভাই গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছোট ভাইকে

২ দিন আগে