শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • সর্বশেষ
  • বিশ্ব
  • বিশেষ সংবাদ
  • রাজনীতি
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • খেলা
  • বাংলাদেশ
  • অর্থনীতি
  • ইপেপার
  • ইপেপার
nikhad logo
অনুসরণ করুন
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
  • নিখাদ খবর
  • বিজ্ঞাপন
  • সার্কুলেশন
  • শর্তাবলি ও নীতিমালা
  • গোপনীয়তা নীতি
  • যোগাযোগ
স্বত্ব: ©️ দৈনিক নিখাদ খবর|ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: পারভীন আফরোজ খান ওপ্রকাশক: আ. হ. ম তারেক উদ্দীন
অপরাধ
দুর্নীতি

রাজউকে ঘুষ ছাড়া মেলে না কোনো সেবা

প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৯
logo

রাজউকে ঘুষ ছাড়া মেলে না কোনো সেবা

বিশেষ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৯
Photo

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) রাজউক যেন এখন ‘ভাঙাভাঙি’র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভবন নির্মাণের পর ব্যত্যয় খুঁজে ওই স্থাপনা ভাঙতে রাজউক যতটা তৎপরতা দেখায়, নির্মাণের সময় ওই স্থাপনা ঠিকভাবে তৈরি হচ্ছে কি না, সেটা আর ঠিকমতো তদারক করে না। ঘুষ ছাড়া এখানে ফাইল এগোয় না—রাজউকে অলিখিত নিয়ম অনেকটা এমনই। নির্ধারিত নিয়ম ও কাগজপত্র ঠিক থাকলেও প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করে ঘুষ আদায়ের চেষ্টা চলে বলে অভিযোগ বহু পুরোনো। সংস্থাটি দেশের নগর-পরিকল্পনা ও ভবন নির্মাণ অনুমোদনের প্রধান সংস্থা হলেও সাধারণ নাগরিকের অভিজ্ঞতা প্রায়ই হতাশাজনক।

সেবা নিয়ে গবেষণা করছিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ওই গবেষণায় বলা হয়েছিল, এই সংস্থা ঢাকার উন্নয়নের মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতির প্রতীকেও পরিণত হয়েছে। পাঁচ বছর আগে প্রকাশিত ওই গবেষণায় আরও বলা হয়, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, অংশগ্রহণ ও দায়িত্বের অপব্যবহার—এসবের কারণে রাজউকের সার্বিক প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা ঢাকার উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করছে। ইতোমধ্যে রাজউক পরিচিত হয়ে উঠেছে হয়রানি আর ঘুষ–বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে। এটি এখন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতীক হয়েও দাঁড়িয়েছে। রাজউকের কার্যক্রমে সেবার চেয়ে অভিযানের প্রতি আগ্রহ বেশি বলেই মনে করছেন নগর–পরিকল্পনাবিদ ও সেবাগ্রহীতারা। বাস্তবতা হলো, একদিকে যথাসময়ে সেবা মেলে না, অন্যদিকে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে ভবন ভাঙা বা দখল উচ্ছেদকেই বড় কাজ হিসেবে দেখানো হয়।

রাজউকের অন্যতম বড় কাজ হলো রাজধানীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) বাস্তবায়ন করা। এই পরিকল্পনায় নির্ধারিত হয়েছে কোন এলাকায় কত তলা ভবন হবে, কোথায় খোলা জায়গা থাকবে, রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা কেমন হবে ইত্যাদি।

রাজউক সূত্র বলছে, ২০২২ সালে ড্যাপ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল রাজধানীকে পরিকল্পিত, বাসযোগ্য ও নাগরিকবান্ধব শহরে রূপান্তর করা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পরিকল্পনা পাস হওয়ার তিন বছর পরও এর বাস্তবায়ন দৃশ্যমান নয়। উল্টো একবার সংশোধনের পর আবারও সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ড্যাপ তৈরি ও পর্যালোচনায় কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে বিশেষজ্ঞ, নগর–পরিকল্পনাবিদ, সরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন অংশীজনের মতামত নিয়েই পরিকল্পনাটি প্রণয়ন করা হয়েছিল। অথচ বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই। এখনো এলোমেলোভাবে ভবন নির্মিত হচ্ছে, জলাবদ্ধতা, যানজট, খোলা জায়গার সংকট—সব আগের মতোই রয়ে গেছে।

রাজউকের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ শাখা সূত্র বলছে, গত এক বছরে সংস্থাটি চার শতাধিক উচ্ছেদ অভিযান বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ ভবন ভাঙা, স্থাপনা অপসারণ ও জরিমানা আদায় করলেও সেবা কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়নি।

রাজউকে বিভিন্ন শাখায় সেবা নিতে আসা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বরাদ্দ পাওয়া প্লটের ফাইল রাজউক থেকে গায়েব হয়ে হগছে। গত ১০ বছর ধরে তিনি সংশ্লিষ্ট শাখায় দৌড়াদৌড়ি করছেন। সম্প্রতি সংস্থাটির চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে এর একটা সুরাহার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

রাজধানীর কেরানীগঞ্জে রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ প্লট বরাদ্দের তালিকায় উঠে এসেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ জন গাড়িচালকের নাম। তাঁদের নামে তিন ও পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দ দিতে রাজউককে চিঠি দিয়েছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। যদিও বিশেষ বিবেচনায় প্লট বরাদ্দ দিতে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ‘অসামান্য অবদানের’ জন্য চার শ্রেণির মানুষকে নির্বাচন করার কথা ছিল।

সম্প্রতি রাজউকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযানে এ তথ্য উঠে আসে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।

২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় রাজউকের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো একটি চিঠিতে শেখ হাসিনার কার্যালয়ে কর্মরত ১৫ গাড়িচালকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের মাঝে তিন ও পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দের ‘অনুমতি’ দেওয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, চিঠিটি স্বাক্ষর করেছিলেন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন যুগ্ম সচিব মো. মিজানুর রহমান। তাতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ১৫ জন গাড়িচালক কর্তৃক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজউকের আওতাধীন ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে প্রতি দুজন আবেদনকারীর অনুকূলে একটি করে ৩ কাঠার প্লট এবং তিনজন আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ৫ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তালিকাভুক্ত চালকদের মধ্যে আছেন ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের গাড়িচালক, বিভিন্ন সচিব, প্রটোকল অফিসার ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীদের চালকেরা।

দুদকের অভিযানে রাজউকের পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দসংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ২০০৯ সালের নীতিমালার আলোকে সেখানে ৯৩৪টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নীতিমালার ১৩/এ ধারা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। বরাদ্দে একাধিক অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় রাজধানীর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার ও তার স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশনের অস্থাবর সম্পদ জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ১৯ মে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দুদকের পক্ষে সংস্থার পরিচালক আবুল হাসনাত এসব অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ছিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র মোতাবেক জানা যায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার ও তার স্ত্রী রেবেকার নামীয় সর্বমোট ১৩টি বিও অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্রে বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের নামীয় অস্থাবর সম্পদগুলো থেকে টাকা উত্তোলন করতেন। বিদেশে পাচারের চেষ্টা করছেন বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে। তারা অর্থ বিদেশে পাচার করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়ত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Thumbnail image

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) রাজউক যেন এখন ‘ভাঙাভাঙি’র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভবন নির্মাণের পর ব্যত্যয় খুঁজে ওই স্থাপনা ভাঙতে রাজউক যতটা তৎপরতা দেখায়, নির্মাণের সময় ওই স্থাপনা ঠিকভাবে তৈরি হচ্ছে কি না, সেটা আর ঠিকমতো তদারক করে না। ঘুষ ছাড়া এখানে ফাইল এগোয় না—রাজউকে অলিখিত নিয়ম অনেকটা এমনই। নির্ধারিত নিয়ম ও কাগজপত্র ঠিক থাকলেও প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করে ঘুষ আদায়ের চেষ্টা চলে বলে অভিযোগ বহু পুরোনো। সংস্থাটি দেশের নগর-পরিকল্পনা ও ভবন নির্মাণ অনুমোদনের প্রধান সংস্থা হলেও সাধারণ নাগরিকের অভিজ্ঞতা প্রায়ই হতাশাজনক।

সেবা নিয়ে গবেষণা করছিল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ওই গবেষণায় বলা হয়েছিল, এই সংস্থা ঢাকার উন্নয়নের মূল দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা হওয়ার পাশাপাশি দুর্নীতির প্রতীকেও পরিণত হয়েছে। পাঁচ বছর আগে প্রকাশিত ওই গবেষণায় আরও বলা হয়, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি, অংশগ্রহণ ও দায়িত্বের অপব্যবহার—এসবের কারণে রাজউকের সার্বিক প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা ঢাকার উন্নয়নকেও বাধাগ্রস্ত করছে। ইতোমধ্যে রাজউক পরিচিত হয়ে উঠেছে হয়রানি আর ঘুষ–বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে। এটি এখন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার প্রতীক হয়েও দাঁড়িয়েছে। রাজউকের কার্যক্রমে সেবার চেয়ে অভিযানের প্রতি আগ্রহ বেশি বলেই মনে করছেন নগর–পরিকল্পনাবিদ ও সেবাগ্রহীতারা। বাস্তবতা হলো, একদিকে যথাসময়ে সেবা মেলে না, অন্যদিকে নিয়মিত অভিযান চালিয়ে ভবন ভাঙা বা দখল উচ্ছেদকেই বড় কাজ হিসেবে দেখানো হয়।

রাজউকের অন্যতম বড় কাজ হলো রাজধানীর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) বাস্তবায়ন করা। এই পরিকল্পনায় নির্ধারিত হয়েছে কোন এলাকায় কত তলা ভবন হবে, কোথায় খোলা জায়গা থাকবে, রাস্তাঘাট, নালা-নর্দমা কেমন হবে ইত্যাদি।

রাজউক সূত্র বলছে, ২০২২ সালে ড্যাপ গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছিল। লক্ষ্য ছিল রাজধানীকে পরিকল্পিত, বাসযোগ্য ও নাগরিকবান্ধব শহরে রূপান্তর করা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, পরিকল্পনা পাস হওয়ার তিন বছর পরও এর বাস্তবায়ন দৃশ্যমান নয়। উল্টো একবার সংশোধনের পর আবারও সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ড্যাপ তৈরি ও পর্যালোচনায় কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরে বিশেষজ্ঞ, নগর–পরিকল্পনাবিদ, সরকারি সংস্থা ও বিভিন্ন অংশীজনের মতামত নিয়েই পরিকল্পনাটি প্রণয়ন করা হয়েছিল। অথচ বাস্তবায়নে কার্যকর কোনো অগ্রগতি নেই। এখনো এলোমেলোভাবে ভবন নির্মিত হচ্ছে, জলাবদ্ধতা, যানজট, খোলা জায়গার সংকট—সব আগের মতোই রয়ে গেছে।

রাজউকের উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ শাখা সূত্র বলছে, গত এক বছরে সংস্থাটি চার শতাধিক উচ্ছেদ অভিযান বা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে। এসব অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ ভবন ভাঙা, স্থাপনা অপসারণ ও জরিমানা আদায় করলেও সেবা কার্যক্রমে উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়নি।

রাজউকে বিভিন্ন শাখায় সেবা নিতে আসা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে বরাদ্দ পাওয়া প্লটের ফাইল রাজউক থেকে গায়েব হয়ে হগছে। গত ১০ বছর ধরে তিনি সংশ্লিষ্ট শাখায় দৌড়াদৌড়ি করছেন। সম্প্রতি সংস্থাটির চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলে এর একটা সুরাহার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

রাজধানীর কেরানীগঞ্জে রাজউকের ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে ‘বিশেষ বিবেচনায়’ প্লট বরাদ্দের তালিকায় উঠে এসেছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের ১৫ জন গাড়িচালকের নাম। তাঁদের নামে তিন ও পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দ দিতে রাজউককে চিঠি দিয়েছিল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। যদিও বিশেষ বিবেচনায় প্লট বরাদ্দ দিতে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে ‘অসামান্য অবদানের’ জন্য চার শ্রেণির মানুষকে নির্বাচন করার কথা ছিল।

সম্প্রতি রাজউকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয় থেকে পরিচালিত একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযানে এ তথ্য উঠে আসে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির মহাপরিচালক আক্তার হোসেন।

২০২৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় রাজউকের চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো একটি চিঠিতে শেখ হাসিনার কার্যালয়ে কর্মরত ১৫ গাড়িচালকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের মাঝে তিন ও পাঁচ কাঠার প্লট বরাদ্দের ‘অনুমতি’ দেওয়া হয়।

দুদক সূত্র জানায়, চিঠিটি স্বাক্ষর করেছিলেন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন যুগ্ম সচিব মো. মিজানুর রহমান। তাতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কর্মরত ১৫ জন গাড়িচালক কর্তৃক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজউকের আওতাধীন ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পে প্রতি দুজন আবেদনকারীর অনুকূলে একটি করে ৩ কাঠার প্লট এবং তিনজন আবেদনকারীর অনুকূলে একটি ৫ কাঠার প্লট বরাদ্দ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তালিকাভুক্ত চালকদের মধ্যে আছেন ভিভিআইপি ও ভিআইপিদের গাড়িচালক, বিভিন্ন সচিব, প্রটোকল অফিসার ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারীদের চালকেরা।

দুদকের অভিযানে রাজউকের পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দসংক্রান্ত নথিপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, ২০০৯ সালের নীতিমালার আলোকে সেখানে ৯৩৪টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে প্রাথমিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, নীতিমালার ১৩/এ ধারা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়নি। বরাদ্দে একাধিক অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় রাজধানীর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর সাবেক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার ও তার স্ত্রী গাজী রেবেকা রওশনের অস্থাবর সম্পদ জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত।

গত ১৯ মে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দুদকের পক্ষে সংস্থার পরিচালক আবুল হাসনাত এসব অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ছিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পসহ বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ করে নিজ নামে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগটি অনুসন্ধানাধীন রয়েছে। অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র মোতাবেক জানা যায় অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মো. ছিদ্দিকুর রহমান সরকার ও তার স্ত্রী রেবেকার নামীয় সর্বমোট ১৩টি বিও অ্যাকাউন্টে বিপুল পরিমাণ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, এফডিআর ও সঞ্চয়পত্রে বিপুল পরিমাণ অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা তাদের নামীয় অস্থাবর সম্পদগুলো থেকে টাকা উত্তোলন করতেন। বিদেশে পাচারের চেষ্টা করছেন বলে গোপন সূত্রে জানা গেছে। তারা অর্থ বিদেশে পাচার করলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়ত বা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

দুর্নীতি নিয়ে আরও পড়ুন

ঘুমন্ত স্ত্রীর শরীরে অ্যাসিড ঢেলে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

ঘুমন্ত স্ত্রীর শরীরে অ্যাসিড ঢেলে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

জেসমিন আক্তারকে ৯ সেপ্টেম্বর গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় চার দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর স্বজনেরা মামলা করেন। এরপর আজ ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তোহাকে গ্রেফতার করা হয়েছে

৬ ঘণ্টা আগে
গ্রেফতার  হলেন পুলিশের সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম

গ্রেফতার হলেন পুলিশের সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ কে এম নাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গত রাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে

৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এমডিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এমডিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এ ঘটনায় আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওয়াজিদুর রহমান মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পিবিআইকে। আগামী ৬ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি

৯ ঘণ্টা আগে
স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা, আহত অবস্থায় গ্রেফতার

স্ত্রীকে হত্যা করে স্বামীর আত্মহত্যার চেষ্টা, আহত অবস্থায় গ্রেফতার

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। একই সঙ্গে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে

১০ ঘণ্টা আগে
রাজউকে ঘুষ ছাড়া মেলে না কোনো সেবা

রাজউকে ঘুষ ছাড়া মেলে না কোনো সেবা

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) রাজউক যেন এখন ‘ভাঙাভাঙি’র প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ভবন নির্মাণের পর ব্যত্যয় খুঁজে ওই স্থাপনা ভাঙতে রাজউক যতটা তৎপরতা দেখায়, নির্মাণের সময় ওই স্থাপনা ঠিকভাবে তৈরি হচ্ছে কি না, সেটা আর ঠিকমতো তদারক করে না। ঘুষ ছাড়া এখানে ফাইল এগোয় না

৩ ঘণ্টা আগে
ঘুমন্ত স্ত্রীর শরীরে অ্যাসিড ঢেলে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

ঘুমন্ত স্ত্রীর শরীরে অ্যাসিড ঢেলে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

জেসমিন আক্তারকে ৯ সেপ্টেম্বর গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় চার দিন চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় তিনি শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর স্বজনেরা মামলা করেন। এরপর আজ ভোরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তোহাকে গ্রেফতার করা হয়েছে

৬ ঘণ্টা আগে
গ্রেফতার  হলেন পুলিশের সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম

গ্রেফতার হলেন পুলিশের সাবেক ডিআইজি নাহিদুল ইসলাম

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ কে এম নাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ছিল। সেটির পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গত রাতে নিজ বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাকে তদন্ত-সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে

৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এমডিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের এমডিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা

এ ঘটনায় আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. ওয়াজিদুর রহমান মামলা তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন পিবিআইকে। আগামী ৬ নভেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি

৯ ঘণ্টা আগে