শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • সর্বশেষ
  • বিশ্ব
  • বিশেষ সংবাদ
  • রাজনীতি
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • খেলা
  • বাংলাদেশ
  • অর্থনীতি
  • ইপেপার
  • ইপেপার
nikhad logo
অনুসরণ করুন
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
  • নিখাদ খবর
  • বিজ্ঞাপন
  • সার্কুলেশন
  • শর্তাবলি ও নীতিমালা
  • গোপনীয়তা নীতি
  • যোগাযোগ
স্বত্ব: ©️ দৈনিক নিখাদ খবর|ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: পারভীন আফরোজ খান ওপ্রকাশক: আ. হ. ম তারেক উদ্দীন
অপরাধ
দুর্নীতি

হাজার কোটি টাকার সম্পদ ফেলে

আত্মগোপনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল

প্রতিনিধি
এইচ এম প্রফুল্ল
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৩২
logo

আত্মগোপনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল

এইচ এম প্রফুল্ল

প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৩২
Photo
ছবি: প্রতিনিধি

শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আত্মগোপনে চলে গেছেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। ফেলে গেছেন, বাড়ি, গাড়ি ও রির্সোটসহ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। দখল, প্রতিপক্ষকে নির্যাতন, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ছিল নারী কেলেঙ্কারি,মদ ও জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ।

কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার এ বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জনের পিছনে ছিল জেলা পরিষদের নিয়োগ বাণিজ্য,জমি দখল, গুচ্ছগ্রামে প্রকল্প চেয়ারম্যান নিয়োগ ও টেন্ডারবাজি। এত দিন মুখ না খুললেও কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার শাসন অবসানের পর মুখ খুলতে শুরু করেছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি ভুক্তভোগীদের। কিন্তু তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দৃশ্যমান কোন তৎপরতা গত এক বছরেও চোখে পড়েনি।

খাগড়াছড়ির মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তার কথায় যেন শেষ কথা। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে সাংবাদিকদের সামনে পতিপক্ষকে কীভাবে ঘায়েল করা হবে সে হুংকার দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে দিনব্যাপী তার নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি শহরে তাণ্ডব চলে। ভাংচুরের পর আগুন দেওয়া হয় খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে।

তার বাহিনীর হামলা থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাভিশনের সাংবাদিক এইচ এম প্রফুল্ল। হামলা হয় তার বাসা ও অফিসে। শহরের শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটেও হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। কিন্তু পরের দিন দুপুরের পর খাগড়াছড়ির চিত্র পুরো পাল্টে যায়।

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বাসা, রিসোর্ট ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরীর বাসাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে হামলে পড়ে দীর্ঘদিনের নিপীড়িত বিক্ষুব্ধ জনতা।

বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও শত শত সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। বাসায় হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছেন। মামলা নেয়নি পুলিশ। বরং উল্টো মিথ্যা মামলায় পালিয়ে ছিলেন। মা-বাবার মৃত্যুতেও জানাজায় অংশ নিতে পারেনি। বাবার কবরে মাটি দিতে পারেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ভূক্তভোগিদের। বিচার চান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার। তবে সহযোগী ও সুবিধাবাদীরা এখনো খাগড়াছড়িতে সক্রিয়। এমন কি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এখনো জব্দ করা হয়নি।

ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া ছিলেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি এক সময় ছিলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের কর্মচারী। পরবর্তীতে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ২০১০ সালে ফ্যাক্স বার্তায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের অন্তবর্তীকালীন চেয়ারম্যান ও পরবর্তীতে তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও সর্বশেষ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার দাম্ভিকতা রেড়ে যায়।

এ সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতি,সরকারি জমি দখল, ট্রেন্ডারবাজী,অর্থের বিনিময়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য, দলের পদ ও কমিটি বাণিজ্য করে কয়েক হাজার টাকার সম্পদের মালিক হন। খাগড়াছড়ি শহরের খাগড়াপুরে কয়েক কোটি টাকার বাড়ি,আলুটিলা পর্যটন এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে কয়েক কোটি টাকার খাসরাং রির্সোট ও সাজেকে খাসরাং নামে আরো একটি বিলাস বহুল রিসোর্ট বানিয়েছেন। যেখানে চলত নারী দেহের খেলা। ঢাকার অনেক মন্ত্রী, এমপি ও ব্যবসায়ীরা এখানে এসে ফুর্তি করতেন। ঢাকায় রয়েছে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা একাধিক ফ্ল্যাট বাড়ি। কিন্তু এ সব স্থাপনা এখন খালি। বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। একই অবস্থা তার খাগড়াছড়ির আলুটিলার বিলাস বহুল রির্সোটসহ জেলা সদরের তার স্থাপনাগুলে। তবে সাজেকের বিলাস বহুল খাসরাং রিসোর্টটি অক্ষত রয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার ইউপি চেয়ারম্যান শান্তি প্রিয় চাকমা জানান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এতই নারী লোভী ছিলেন, চোখে যাকে পছন্দ হতো তাকে ভোগ করার জন্য মরিয়া ছিলেন। ঐ নারী বিবাহিত হলেও রেহাই পেতে না। এইভাবে অনেক নারীকে বাড়ি বানিয়ে দিয়েছেন। কাউকে দিয়েছেন চাকুরি কিংবা প্রতিষ্ঠানে বসিয়েছেন।

প্রতিবাদী দলীয় নেতা কর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরকারি আমলারাও এক ধরনের অসহায় ছিল তার ক্ষমতার কাছে। কিন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার রামরাজত্ব তছনছ হয়ে গেছে। যারা তাকে ফুলের মালা ও ফুলের পাপড়ি ছিটাতেন তারাও গা-ঢাকা দিয়েছে।

প্রতিবেশী খনি রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, এক সময় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (এনএলএফটির) পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা,খাগড়াছড়ির খাগড়াপুর ও পানছড়িতে অবস্থিত এনএলএফটির ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত করতেন এবং ঐ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য রসদ সরবরাহ করতে করতেন। এ কারণে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংসদ।

খাগড়াছড়ি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন জানান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ব্যাপক দুর্নীতির সম্পদের পাহাড় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কয়েকবার উদ্যোগ নিলে প্রভাব খাটিয়ে উল্টো তদন্ত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল বলেন, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো তদন্তের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

খাগড়াছড়িতে কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি:

খাগড়াছড়ি সদরের খাগড়াপুর, খবংপুড়িয়া ও দীঘিনালায় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বাড়ি রয়েছে তিনটি। হলফনামায় যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৭১ হাজার ৩৬৬ টাকা। শুল্কমুক্ত ল্যান্ডক্রুজার, জিপসহ আছে ২ কোটি ৩ লাখ টাকা মূল্যের কয়েকটি গাড়ি।

দুইবারের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ২০২৩ এর হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির কলামে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫ হাজার ১৫৬ টাকার এফডিআর, ১৪ লাখ ১৭ হাজার ৮৪১ টাকার ডিপিএস, সংসদ সদস্য ও টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান থেকে বাৎসরিক আয় ২৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া কৃষি খামারের জন্য ১০৭ একর জমির তথ্যও উল্লেখ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে যার পরিমাণ ছিল ৭০ একর।

Thumbnail image
ছবি: প্রতিনিধি

শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর আত্মগোপনে চলে গেছেন সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। ফেলে গেছেন, বাড়ি, গাড়ি ও রির্সোটসহ হাজার কোটি টাকার সম্পদ। দখল, প্রতিপক্ষকে নির্যাতন, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ছিল নারী কেলেঙ্কারি,মদ ও জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগ।

কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার এ বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদ অর্জনের পিছনে ছিল জেলা পরিষদের নিয়োগ বাণিজ্য,জমি দখল, গুচ্ছগ্রামে প্রকল্প চেয়ারম্যান নিয়োগ ও টেন্ডারবাজি। এত দিন মুখ না খুললেও কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার শাসন অবসানের পর মুখ খুলতে শুরু করেছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। আইনের আওতায় এনে বিচার দাবি ভুক্তভোগীদের। কিন্তু তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দৃশ্যমান কোন তৎপরতা গত এক বছরেও চোখে পড়েনি।

খাগড়াছড়ির মূর্তিমান আতঙ্ক ছিলেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তার কথায় যেন শেষ কথা। ৪ আগস্ট সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে সাংবাদিকদের সামনে পতিপক্ষকে কীভাবে ঘায়েল করা হবে সে হুংকার দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে দিনব্যাপী তার নেতৃত্বে খাগড়াছড়ি শহরে তাণ্ডব চলে। ভাংচুরের পর আগুন দেওয়া হয় খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়ার বাসভবনে।

তার বাহিনীর হামলা থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাভিশনের সাংবাদিক এইচ এম প্রফুল্ল। হামলা হয় তার বাসা ও অফিসে। শহরের শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাটেও হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। কিন্তু পরের দিন দুপুরের পর খাগড়াছড়ির চিত্র পুরো পাল্টে যায়।

শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের অফিস, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বাসা, রিসোর্ট ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরীর বাসাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাসা-বাড়িতে হামলে পড়ে দীর্ঘদিনের নিপীড়িত বিক্ষুব্ধ জনতা।

বিগত সাড়ে ১৫ বছরে বিএনপির নেতাকর্মী ছাড়াও শত শত সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের হাতে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। বাসায় হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছেন। মামলা নেয়নি পুলিশ। বরং উল্টো মিথ্যা মামলায় পালিয়ে ছিলেন। মা-বাবার মৃত্যুতেও জানাজায় অংশ নিতে পারেনি। বাবার কবরে মাটি দিতে পারেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ভূক্তভোগিদের। বিচার চান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার। তবে সহযোগী ও সুবিধাবাদীরা এখনো খাগড়াছড়িতে সক্রিয়। এমন কি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এখনো জব্দ করা হয়নি।

ক্ষমতার দাপটে বেপরোয়া ছিলেন কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা। তিনি এক সময় ছিলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের কর্মচারী। পরবর্তীতে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। ২০১০ সালে ফ্যাক্স বার্তায় খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের অন্তবর্তীকালীন চেয়ারম্যান ও পরবর্তীতে তিন দফা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার ভারত প্রত্যাগত শরণার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান ও সর্বশেষ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর ক্ষমতার দাম্ভিকতা রেড়ে যায়।

এ সময়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতি,সরকারি জমি দখল, ট্রেন্ডারবাজী,অর্থের বিনিময়ে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ বাণিজ্য, দলের পদ ও কমিটি বাণিজ্য করে কয়েক হাজার টাকার সম্পদের মালিক হন। খাগড়াছড়ি শহরের খাগড়াপুরে কয়েক কোটি টাকার বাড়ি,আলুটিলা পর্যটন এলাকায় সরকারি জায়গা দখল করে কয়েক কোটি টাকার খাসরাং রির্সোট ও সাজেকে খাসরাং নামে আরো একটি বিলাস বহুল রিসোর্ট বানিয়েছেন। যেখানে চলত নারী দেহের খেলা। ঢাকার অনেক মন্ত্রী, এমপি ও ব্যবসায়ীরা এখানে এসে ফুর্তি করতেন। ঢাকায় রয়েছে কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা একাধিক ফ্ল্যাট বাড়ি। কিন্তু এ সব স্থাপনা এখন খালি। বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। একই অবস্থা তার খাগড়াছড়ির আলুটিলার বিলাস বহুল রির্সোটসহ জেলা সদরের তার স্থাপনাগুলে। তবে সাজেকের বিলাস বহুল খাসরাং রিসোর্টটি অক্ষত রয়েছে।

খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালার ইউপি চেয়ারম্যান শান্তি প্রিয় চাকমা জানান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এতই নারী লোভী ছিলেন, চোখে যাকে পছন্দ হতো তাকে ভোগ করার জন্য মরিয়া ছিলেন। ঐ নারী বিবাহিত হলেও রেহাই পেতে না। এইভাবে অনেক নারীকে বাড়ি বানিয়ে দিয়েছেন। কাউকে দিয়েছেন চাকুরি কিংবা প্রতিষ্ঠানে বসিয়েছেন।

প্রতিবাদী দলীয় নেতা কর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সরকারি আমলারাও এক ধরনের অসহায় ছিল তার ক্ষমতার কাছে। কিন্ত ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার রামরাজত্ব তছনছ হয়ে গেছে। যারা তাকে ফুলের মালা ও ফুলের পাপড়ি ছিটাতেন তারাও গা-ঢাকা দিয়েছে।

প্রতিবেশী খনি রঞ্জন ত্রিপুরা জানান, এক সময় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট অব ত্রিপুরা (এনএলএফটির) পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা,খাগড়াছড়ির খাগড়াপুর ও পানছড়িতে অবস্থিত এনএলএফটির ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত করতেন এবং ঐ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের জন্য রসদ সরবরাহ করতে করতেন। এ কারণে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সংসদ।

খাগড়াছড়ি জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন জানান, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ব্যাপক দুর্নীতির সম্পদের পাহাড় নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কয়েকবার উদ্যোগ নিলে প্রভাব খাটিয়ে উল্টো তদন্ত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল বলেন, সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলো তদন্তের শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

খাগড়াছড়িতে কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি:

খাগড়াছড়ি সদরের খাগড়াপুর, খবংপুড়িয়া ও দীঘিনালায় কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার বাড়ি রয়েছে তিনটি। হলফনামায় যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ১৭ লাখ ৭১ হাজার ৩৬৬ টাকা। শুল্কমুক্ত ল্যান্ডক্রুজার, জিপসহ আছে ২ কোটি ৩ লাখ টাকা মূল্যের কয়েকটি গাড়ি।

দুইবারের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা ২০২৩ এর হলফনামায় অস্থাবর সম্পত্তির কলামে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫ হাজার ১৫৬ টাকার এফডিআর, ১৪ লাখ ১৭ হাজার ৮৪১ টাকার ডিপিএস, সংসদ সদস্য ও টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান থেকে বাৎসরিক আয় ২৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া কৃষি খামারের জন্য ১০৭ একর জমির তথ্যও উল্লেখ করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে যার পরিমাণ ছিল ৭০ একর।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

দুর্নীতি নিয়ে আরও পড়ুন

বিএনপি কর্মীর বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, ২ আটক

বিএনপি কর্মীর বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, ২ আটক

চট্টগ্রামের রাউজানে র‍্যাবের অভিযানে এক বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে বন্দুকসহ বড় পরিমাণ ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে

১৫ ঘণ্টা আগে
সুনামগঞ্জে শিশু শ্লীলতাহানিতে শিক্ষক গ্রেফতার

সুনামগঞ্জে শিশু শ্লীলতাহানিতে শিক্ষক গ্রেফতার

মা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে

১৫ ঘণ্টা আগে
সুন্দরবনের বনদস্যু বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী আটক

সুন্দরবনের বনদস্যু বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী আটক

করিম শরীফ বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী ওই ব্যাক্তি হারবাড়িয়া সংলগ্ন নন্দবালা খাল এলাকা দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করবে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে নামে কোস্টগার্ড

১৯ ঘণ্টা আগে
গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৪৩২

গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৪৩২

সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১,৪৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে

২ দিন আগে
বিএনপি কর্মীর বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, ২ আটক

বিএনপি কর্মীর বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, ২ আটক

চট্টগ্রামের রাউজানে র‍্যাবের অভিযানে এক বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে বন্দুকসহ বড় পরিমাণ ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে

১৫ ঘণ্টা আগে
সুনামগঞ্জে শিশু শ্লীলতাহানিতে শিক্ষক গ্রেফতার

সুনামগঞ্জে শিশু শ্লীলতাহানিতে শিক্ষক গ্রেফতার

মা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে

১৫ ঘণ্টা আগে
সুন্দরবনের বনদস্যু বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী আটক

সুন্দরবনের বনদস্যু বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী আটক

করিম শরীফ বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী ওই ব্যাক্তি হারবাড়িয়া সংলগ্ন নন্দবালা খাল এলাকা দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করবে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে নামে কোস্টগার্ড

১৯ ঘণ্টা আগে
গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৪৩২

গত ২৪ ঘণ্টায় গ্রেফতার ১৪৩২

সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১,৪৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে

২ দিন আগে