সম্পত্তি ফেরত চান ক্ষতিগ্রস্তরা
এইচ এম প্রফুল্ল
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পঞ্চপাণ্ডব বিরুদ্ধে ব্যাপক দখলবাজির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় বানানোর অভিযোগ উঠেছে।তাদের দখলবাজি থেকে রেহাই পায়নি হিন্দু ও উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজনও। নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করে দখল করেছেন বাগান-বাগিচা ও জায়গা। দখল থেকে রেহাই পায়নি, বাজারের প্লট, পুকুর, স্কুল মাঠ,খাল এমন পাবলিক টয়লেট পর্যন্ত।
দখলীয় জায়গায় সরকারি অর্থে রাস্তা,বাগান বিলাস,বাড়ি ও রিসোর্ট নির্মাণ করেছেন। মাত্র সাড়ে ১৫ বছরের ব্যবধানে গাড়ী-বাড়িসহ শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। মানিকছড়ি ছাড়াও ঢাকা,চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি জেলা সদরে নির্মাণ করেছে বিলাস বহুল বাড়ি। জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে নেতারা পালিয়ে গেলেও তাদের অবৈধ সম্পত্তিতে কোন আঁচর লাগেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা এখন চান সম্পত্তি ফেরত ও বিচার।
অভিযোগ রয়েছে,সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা আর্শিবাদপুষ্ট মানিকছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: জয়নাল আবেদীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শফিকুর রহমান ফারুক, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম বাবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: মাঈন উদ্দিন ও দপ্তর সম্পাদক জাহেদুল আলম মাসুদ। এরা মানিকছড়িতে পঞ্চপাণ্ডব নামে পরিচিত। মানিকছড়ি সদর উপজেলার হাজীপাড়ায় দখলীয় জায়গায় এই পাঁচ নেতা গড়ে তুলেছেন বিলাস বহুল বাড়ি। যা স্থানীয়ভাবে কানাডার বেগম পাড়া নামে পরিচিত। এ বাড়ি বানাতে গিয়ে হিন্দু পরিবাসহ অনেককে নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা মো: জয়নালা আবেদীন মানিকছড়ি ছাড়াও ঢাকার উত্তরা,চট্টগ্রাম সেনানিবাস ও খাগড়াছড়িতে বাড়ি,প্লট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
মানিকছড়ির হাজী পাড়ায় অন্যের জায়গা দখল করে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বানিয়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি ও বাংলো। খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশে তিন কোট টাকা মূল্যে ৪ তলা ভবন, রাজু বোডিং-এর পাশে ২০ শতক জায়গায় কোটি টাকা মূল্যের, চট্টগ্রামের বালুছড়া জালালাবাদ এলাকায় ৬ কোটি টাকা মূল্যে দুটি ৪ তলা বিল্ডিং,চট্টগ্রাম সেনানিবাস কোটি টাকা মূল্যে ৫টি ফ্ল্যাট, ঢাকার উত্তরায় দুই কোটি টাকার প্লট, চট্টগ্রামে ল্যান্ড প্রপার্টিজ সিন্ডিকেট ব্যবসায় শেয়ার,কেপিএম ২০ শতক জায়গা,মানিকছড়ি বাজারে সুগন্ধা মার্কেট ২০টি প্লট দখল, মানিকছড়ি বাজারের চাউলের কলঘর দখল করে বাণিজ্যিক প্লট নির্মাণ করে বিক্রি,সবজি বাজারের সেট দখল করে প্লট তৈরি করে বিক্রি, তিনটহরী পুকুর ও বাজার সেট দখল করে প্লট তৈরি করে বিক্রি, সাপমারা এলাকায় ১৫০ একর জায়গা দখল, গাড়িটানা ২০ একর জায়গা, কুমিল্লা লাকসাম নোয়াপাড়া শ্বশুর বাড়িতে দালান নির্মাণ, মহামনিতে একশত ২৪ শত জায়গা দখল লক্ষ্মী মেমোরিয়াল হাসপাতাল,লক্ষ্মী ডায়াগনস্টি সেন্টার, ফুড হাউজ নির্মাণ, মানিকছড়ি বাজারে মা ভবন,সিনেমা হলের সামনে ভবন, মহামুনি পুলিশ বক্স ও টয়লেরে জায়গা দখল, মহামনিতে ডাঃ অরুণের দোকান দখল ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের পাশে জায়গা দখল। স্থাবর ও অস্থাবর মিলে জয়নাল আবেদীনের সম্পদ প্রায় ৭শত কোটি টাকা।
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান ফারুকের মানিকছড়ির হাজী পাড়ায় রয়েছে, ৫কোটি টাকার বিলাস বহুল বাড়ি, খাদ্য গুদামের পাশে কোটি টাকার ৪ তলা বাড়ি, হাজীপাড়ায় সজল বরণ সেনের বাড়ি পাশে কোটি টাকার জমি ক্রয়, মানিকছড়ি বাজারে আবাসিক প্লট ক্রয়,বড়বিল এলাকায় লেকসহ শত একরের জায়গায় বাগান বাড়ি,চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একাধিক বাড়ি,মানিকছড়ির গরুর বাজারে দখলীয় সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করে দুই কোটি টাকায় বিক্রিসহ দেশে বিদেশে একাধিক বাড়ি নির্মাণ,ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।
মানিকছড়ি হাজী পাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন দখলি জায়গায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বানিয়েছেন আলিশান বাড়ি, মানিকছড়ি উপজেলায় তিনটহরী ইউনিয়নে কুমারী পাড়াতে ৫০ একর বাগান বাড়ি,রাঙাপাড়িতে খেজাঅং মারমার জায়গা দখল জায়গায় ফলজ বাগান ও বাড়ির নির্মাণ এবং পুকুর খনন,মানিকছড়ি বাজারে ২টি দোকান, চট্টগ্রামে কোটি টাকার ফ্ল্যাট,জনসেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শেয়ার,দুবাইয়ে জুয়েলারি দোকান,অক্সিজেন এলাকায় কোটি আবাসিক ভবন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ আবাসিক এলাকায় প্লট, মানিকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের পাশে ১০ গন্ডা জায়গা দখল, চট্টগ্রাম অনন্যা আবাসিক এলাকায় কোটি টাকার,ফ্ল্যাট ক্রয়,মানিকছড়ি চাউল স্যাড দখল করে দু’তলা ভবন নির্মাণ,পরিষদের পাশে ৫টি দোকানের প্লট,কুমিল্লায় কয়েক কোটি বাড়ি ও মানিকছড়ির যোগ্যছোলা বাজারে বিশাল মার্কেট নির্মাণ করেছেন।
মানিকছড়ি উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বাবুলের রয়েছে,মানিকছড়ির হাজী পাড়ায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিলাস বহুল বাড়ির,গবামারা এলাকায় ওসমানপল্লীতে হিন্দু জায়গায় দখল করে বাগান বাড়ির নির্মাণ,আকাশপুরীতে দ্বিতল ভবন নির্মাণ,পুরোনো চাউল বাজার সেড দখল ২টি প্লট নির্মাণ,গরু বাজারে আবাসিক ভবন নির্মাণ,গরু বাজারে এনামুল হক ও আব্বাস মিয়া জায়গায় দখল করে দ্বিতল ভবন নির্মাণ,গরু বাজারে পূর্ব রাস্তার পাশে জায়গায় দখল করে দুই কোটি ব্যয়ে মার্কেট নির্মাণ,বড়বিল এলাকায় ১০০ একর জায়গায় বাগান বাড়ি নির্মাণ চট্টগ্রাম কুমিল্লাতে একাধিক ফ্ল্যাট বাড়ি ও প্লট ক্রয়। মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জাহেদুল আলম মাসুদ-এর রয়েছে,তিনটহরীর হিন্দু পাড়ায় কোটি টাকা সম্পদ,গোদাতলীতে পাক্কাটিলাতে বাগান বাড়ির নির্মাণ,হাজী পাড়ায় এক হিন্দু পরিবারকে তাড়িয়ে দিয়ে সরকারি অর্থে বাড়ি নির্মাণ,পমসজিদ প্রায় দুই কোটি মূল্যের জায়গা ক্রয়,৬০ শতাংশ জায়গা জায়গায় ক্রয়,কেপিএম-এর পাশে দুই কোটি টাকা মূল্যে ৮০ শতাংশ জায়গা ক্রয়,মানিকছড়ি খাল দখল করে কোটি টাকার বহুতল ভবন নির্মাণ,চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের হাউজিং এলাকায় কোটি টাকার ফ্ল্যাট বাড়ির নির্মাণ ও মানিকছড়ি বাজারে সুগন্ধার পাশে প্লট ক্রয়।
লক্ষ্মী ভট্টাচার্যি’র অভিযোগ,দুই একর জায়গার উপর চোখ পড়েছিল আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল ও মাঈন উদ্দিনের। তাকে ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭টি মামলা দিয়েছে। মামলা চালাতে গিয়ে প্রায় ৪৫ লাখ খরচ হয়েছে। এখন তিনি নি:স্ব।
খেজাঅং মারমার অভিযোগ,আওয়ামী লীগ মাঈন উদ্দিন রাঙাপানি এলাকায় পাঁচ একর জায়গা কিনে পরবর্তীতে আশ-পাশের আরো ২৭ একর পাহাড়িদে জায়গা দখল করে বিলাস বহুল বাগান-বাগিচা গড়ে তুলে। তার ধান্য জমি দখল করে পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করে।
স্থানীয় স্রোতি ময় চাকমার অভিযোগ, মাঈন উদ্দিনের অত্যাচার ও জমি দখল করতে গিয়ে অনেককে এলাকা ছাড়া করেছেন। কিন্তু বিচার পায়নি।
সাপমারার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বেপারীর অভিযোগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল চেয়ারম্যান তার পাঁচ একরসহ এলাকায় ২০/২৫ জনের দেড়শ একর জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়ে বাগান বিলাস গড়ে তুলেছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে সবাইকে এলাকা ছাড়া করেছে।
হাজী মো: আরিফুল ইসলামের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতা মো: জয়নাল আবেদীন তাদের চার একর জায়গা দখল করে সেখানে বিলাস বহুল বাড়ি নির্মাণ,মহামনিতে একশত ২৪ শত জায়গা দখল করে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টি সেন্টার,ফুড হাউজ নির্মাণ করা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে বিরোধী দলসহ সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হতো।
মানিকছড়ি সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুকুমার চন্দ্র নাথের অভিযোগ, তিনি কয়েক যুগ আগে তিনি মানিকছড়ির মংরাজ পরিবারের কাছ থেকে তার ও মেয়ের নামে দুটি কিনেছিলেন। কয়েক বছর আগে রাতের আধারে জয়নাল ও মাঈনসহ তার প্লট দুটি দখল করে নেয়। প্লট উদ্ধারের জন্য তিনি সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি বাড়ি ধরনা দিয়েছেন। বিচারতো পায়নি বরং তার সাথে কুকুরের মতো ব্যবহার করা হয়েছে।
টিনটহরী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মোর্শেদ আলমের অভিযোগ,জয়নাল চেয়ারম্যান ও মাঈন উদ্দিন মানিকছড়ি রাজ পরিবারের দান করা পুকুর,বাজার সেড ও স্কুল মাঠ দখল করে নিয়ে প্লট বানিয়ে ১২ লাখ করে বিক্রি করে দিয়েছে।
টিনটহরী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার মো: মিজানুর রহমানের অভিযোগ,গত সাড়ে ১৫ বছর পুরো মানিকছড়িতে আওয়ামী লীগের রাম রাজত্ব চলেছে। তারা মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। সাধারণ মানুষ ও সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিজেরা শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। মানুষ বিচার পায়নি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, মানিকছড়িতে বেশ কিছু মানুষের অভিযোগ রয়েছে। লিখিতভাবে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে মানিকছড়ির আওয়ামী লীগের পঞ্চপান্ডবসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে নেতারা গা-ঢাকা দিলেও হুমকি-ধমকী দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল বলেন,যারা গত ১৫ বছর মানিকছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালির উপর নির্যাতন চালিয়ে জায়গা দখল বাড়ী,বাগান ও রিসোর্ট বানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলা ও হামলার ভয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা এলাকা ছাড়া হলেও তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রয়েছে। আর অভিযোগের তীর কয়েকজন বিএনপির নেতার দিকে।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরার পঞ্চপাণ্ডব বিরুদ্ধে ব্যাপক দখলবাজির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় বানানোর অভিযোগ উঠেছে।তাদের দখলবাজি থেকে রেহাই পায়নি হিন্দু ও উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকজনও। নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করে দখল করেছেন বাগান-বাগিচা ও জায়গা। দখল থেকে রেহাই পায়নি, বাজারের প্লট, পুকুর, স্কুল মাঠ,খাল এমন পাবলিক টয়লেট পর্যন্ত।
দখলীয় জায়গায় সরকারি অর্থে রাস্তা,বাগান বিলাস,বাড়ি ও রিসোর্ট নির্মাণ করেছেন। মাত্র সাড়ে ১৫ বছরের ব্যবধানে গাড়ী-বাড়িসহ শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। মানিকছড়ি ছাড়াও ঢাকা,চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি জেলা সদরে নির্মাণ করেছে বিলাস বহুল বাড়ি। জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবে নেতারা পালিয়ে গেলেও তাদের অবৈধ সম্পত্তিতে কোন আঁচর লাগেনি। ক্ষতিগ্রস্তরা এখন চান সম্পত্তি ফেরত ও বিচার।
অভিযোগ রয়েছে,সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা আর্শিবাদপুষ্ট মানিকছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: জয়নাল আবেদীন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো: শফিকুর রহমান ফারুক, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো: তাজুল ইসলাম বাবুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: মাঈন উদ্দিন ও দপ্তর সম্পাদক জাহেদুল আলম মাসুদ। এরা মানিকছড়িতে পঞ্চপাণ্ডব নামে পরিচিত। মানিকছড়ি সদর উপজেলার হাজীপাড়ায় দখলীয় জায়গায় এই পাঁচ নেতা গড়ে তুলেছেন বিলাস বহুল বাড়ি। যা স্থানীয়ভাবে কানাডার বেগম পাড়া নামে পরিচিত। এ বাড়ি বানাতে গিয়ে হিন্দু পরিবাসহ অনেককে নির্যাতন, মিথ্যা মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতা মো: জয়নালা আবেদীন মানিকছড়ি ছাড়াও ঢাকার উত্তরা,চট্টগ্রাম সেনানিবাস ও খাগড়াছড়িতে বাড়ি,প্লট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন।
মানিকছড়ির হাজী পাড়ায় অন্যের জায়গা দখল করে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বানিয়েছেন বিলাসবহুল বাড়ি ও বাংলো। খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের পাশে তিন কোট টাকা মূল্যে ৪ তলা ভবন, রাজু বোডিং-এর পাশে ২০ শতক জায়গায় কোটি টাকা মূল্যের, চট্টগ্রামের বালুছড়া জালালাবাদ এলাকায় ৬ কোটি টাকা মূল্যে দুটি ৪ তলা বিল্ডিং,চট্টগ্রাম সেনানিবাস কোটি টাকা মূল্যে ৫টি ফ্ল্যাট, ঢাকার উত্তরায় দুই কোটি টাকার প্লট, চট্টগ্রামে ল্যান্ড প্রপার্টিজ সিন্ডিকেট ব্যবসায় শেয়ার,কেপিএম ২০ শতক জায়গা,মানিকছড়ি বাজারে সুগন্ধা মার্কেট ২০টি প্লট দখল, মানিকছড়ি বাজারের চাউলের কলঘর দখল করে বাণিজ্যিক প্লট নির্মাণ করে বিক্রি,সবজি বাজারের সেট দখল করে প্লট তৈরি করে বিক্রি, তিনটহরী পুকুর ও বাজার সেট দখল করে প্লট তৈরি করে বিক্রি, সাপমারা এলাকায় ১৫০ একর জায়গা দখল, গাড়িটানা ২০ একর জায়গা, কুমিল্লা লাকসাম নোয়াপাড়া শ্বশুর বাড়িতে দালান নির্মাণ, মহামনিতে একশত ২৪ শত জায়গা দখল লক্ষ্মী মেমোরিয়াল হাসপাতাল,লক্ষ্মী ডায়াগনস্টি সেন্টার, ফুড হাউজ নির্মাণ, মানিকছড়ি বাজারে মা ভবন,সিনেমা হলের সামনে ভবন, মহামুনি পুলিশ বক্স ও টয়লেরে জায়গা দখল, মহামনিতে ডাঃ অরুণের দোকান দখল ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের পাশে জায়গা দখল। স্থাবর ও অস্থাবর মিলে জয়নাল আবেদীনের সম্পদ প্রায় ৭শত কোটি টাকা।
খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুর রহমান ফারুকের মানিকছড়ির হাজী পাড়ায় রয়েছে, ৫কোটি টাকার বিলাস বহুল বাড়ি, খাদ্য গুদামের পাশে কোটি টাকার ৪ তলা বাড়ি, হাজীপাড়ায় সজল বরণ সেনের বাড়ি পাশে কোটি টাকার জমি ক্রয়, মানিকছড়ি বাজারে আবাসিক প্লট ক্রয়,বড়বিল এলাকায় লেকসহ শত একরের জায়গায় বাগান বাড়ি,চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একাধিক বাড়ি,মানিকছড়ির গরুর বাজারে দখলীয় সরকারি জায়গায় মার্কেট নির্মাণ করে দুই কোটি টাকায় বিক্রিসহ দেশে বিদেশে একাধিক বাড়ি নির্মাণ,ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ শত কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।
মানিকছড়ি হাজী পাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন দখলি জায়গায় প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে বানিয়েছেন আলিশান বাড়ি, মানিকছড়ি উপজেলায় তিনটহরী ইউনিয়নে কুমারী পাড়াতে ৫০ একর বাগান বাড়ি,রাঙাপাড়িতে খেজাঅং মারমার জায়গা দখল জায়গায় ফলজ বাগান ও বাড়ির নির্মাণ এবং পুকুর খনন,মানিকছড়ি বাজারে ২টি দোকান, চট্টগ্রামে কোটি টাকার ফ্ল্যাট,জনসেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে শেয়ার,দুবাইয়ে জুয়েলারি দোকান,অক্সিজেন এলাকায় কোটি আবাসিক ভবন, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ আবাসিক এলাকায় প্লট, মানিকছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের পাশে ১০ গন্ডা জায়গা দখল, চট্টগ্রাম অনন্যা আবাসিক এলাকায় কোটি টাকার,ফ্ল্যাট ক্রয়,মানিকছড়ি চাউল স্যাড দখল করে দু’তলা ভবন নির্মাণ,পরিষদের পাশে ৫টি দোকানের প্লট,কুমিল্লায় কয়েক কোটি বাড়ি ও মানিকছড়ির যোগ্যছোলা বাজারে বিশাল মার্কেট নির্মাণ করেছেন।
মানিকছড়ি উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তাজুল ইসলাম বাবুলের রয়েছে,মানিকছড়ির হাজী পাড়ায় ২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিলাস বহুল বাড়ির,গবামারা এলাকায় ওসমানপল্লীতে হিন্দু জায়গায় দখল করে বাগান বাড়ির নির্মাণ,আকাশপুরীতে দ্বিতল ভবন নির্মাণ,পুরোনো চাউল বাজার সেড দখল ২টি প্লট নির্মাণ,গরু বাজারে আবাসিক ভবন নির্মাণ,গরু বাজারে এনামুল হক ও আব্বাস মিয়া জায়গায় দখল করে দ্বিতল ভবন নির্মাণ,গরু বাজারে পূর্ব রাস্তার পাশে জায়গায় দখল করে দুই কোটি ব্যয়ে মার্কেট নির্মাণ,বড়বিল এলাকায় ১০০ একর জায়গায় বাগান বাড়ি নির্মাণ চট্টগ্রাম কুমিল্লাতে একাধিক ফ্ল্যাট বাড়ি ও প্লট ক্রয়। মানিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক জাহেদুল আলম মাসুদ-এর রয়েছে,তিনটহরীর হিন্দু পাড়ায় কোটি টাকা সম্পদ,গোদাতলীতে পাক্কাটিলাতে বাগান বাড়ির নির্মাণ,হাজী পাড়ায় এক হিন্দু পরিবারকে তাড়িয়ে দিয়ে সরকারি অর্থে বাড়ি নির্মাণ,পমসজিদ প্রায় দুই কোটি মূল্যের জায়গা ক্রয়,৬০ শতাংশ জায়গা জায়গায় ক্রয়,কেপিএম-এর পাশে দুই কোটি টাকা মূল্যে ৮০ শতাংশ জায়গা ক্রয়,মানিকছড়ি খাল দখল করে কোটি টাকার বহুতল ভবন নির্মাণ,চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের হাউজিং এলাকায় কোটি টাকার ফ্ল্যাট বাড়ির নির্মাণ ও মানিকছড়ি বাজারে সুগন্ধার পাশে প্লট ক্রয়।
লক্ষ্মী ভট্টাচার্যি’র অভিযোগ,দুই একর জায়গার উপর চোখ পড়েছিল আওয়ামী লীগ নেতা জয়নাল ও মাঈন উদ্দিনের। তাকে ও পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অন্তত ৭টি মামলা দিয়েছে। মামলা চালাতে গিয়ে প্রায় ৪৫ লাখ খরচ হয়েছে। এখন তিনি নি:স্ব।
খেজাঅং মারমার অভিযোগ,আওয়ামী লীগ মাঈন উদ্দিন রাঙাপানি এলাকায় পাঁচ একর জায়গা কিনে পরবর্তীতে আশ-পাশের আরো ২৭ একর পাহাড়িদে জায়গা দখল করে বিলাস বহুল বাগান-বাগিচা গড়ে তুলে। তার ধান্য জমি দখল করে পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করে।
স্থানীয় স্রোতি ময় চাকমার অভিযোগ, মাঈন উদ্দিনের অত্যাচার ও জমি দখল করতে গিয়ে অনেককে এলাকা ছাড়া করেছেন। কিন্তু বিচার পায়নি।
সাপমারার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বেপারীর অভিযোগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জয়নাল চেয়ারম্যান তার পাঁচ একরসহ এলাকায় ২০/২৫ জনের দেড়শ একর জমি জোরপূর্বক দখল করে নিয়ে বাগান বিলাস গড়ে তুলেছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে সবাইকে এলাকা ছাড়া করেছে।
হাজী মো: আরিফুল ইসলামের অভিযোগ আওয়ামী লীগ নেতা মো: জয়নাল আবেদীন তাদের চার একর জায়গা দখল করে সেখানে বিলাস বহুল বাড়ি নির্মাণ,মহামনিতে একশত ২৪ শত জায়গা দখল করে হাসপাতাল, ডায়াগনস্টি সেন্টার,ফুড হাউজ নির্মাণ করা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িতে বিরোধী দলসহ সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হতো।
মানিকছড়ি সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুকুমার চন্দ্র নাথের অভিযোগ, তিনি কয়েক যুগ আগে তিনি মানিকছড়ির মংরাজ পরিবারের কাছ থেকে তার ও মেয়ের নামে দুটি কিনেছিলেন। কয়েক বছর আগে রাতের আধারে জয়নাল ও মাঈনসহ তার প্লট দুটি দখল করে নেয়। প্লট উদ্ধারের জন্য তিনি সাবেক পার্বত্য প্রতিমন্ত্রীসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি বাড়ি ধরনা দিয়েছেন। বিচারতো পায়নি বরং তার সাথে কুকুরের মতো ব্যবহার করা হয়েছে।
টিনটহরী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: মোর্শেদ আলমের অভিযোগ,জয়নাল চেয়ারম্যান ও মাঈন উদ্দিন মানিকছড়ি রাজ পরিবারের দান করা পুকুর,বাজার সেড ও স্কুল মাঠ দখল করে নিয়ে প্লট বানিয়ে ১২ লাখ করে বিক্রি করে দিয়েছে।
টিনটহরী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি মেম্বার মো: মিজানুর রহমানের অভিযোগ,গত সাড়ে ১৫ বছর পুরো মানিকছড়িতে আওয়ামী লীগের রাম রাজত্ব চলেছে। তারা মানুষের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। সাধারণ মানুষ ও সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিজেরা শত শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। মানুষ বিচার পায়নি।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, মানিকছড়িতে বেশ কিছু মানুষের অভিযোগ রয়েছে। লিখিতভাবে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে মানিকছড়ির আওয়ামী লীগের পঞ্চপান্ডবসহ অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে নেতারা গা-ঢাকা দিলেও হুমকি-ধমকী দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার মো: আরেফিন জুয়েল বলেন,যারা গত ১৫ বছর মানিকছড়িতে পাহাড়ি-বাঙালির উপর নির্যাতন চালিয়ে জায়গা দখল বাড়ী,বাগান ও রিসোর্ট বানিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলা ও হামলার ভয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা এলাকা ছাড়া হলেও তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সচল রয়েছে। আর অভিযোগের তীর কয়েকজন বিএনপির নেতার দিকে।
নিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য শত বছরের মন্দিরের জায়গা দখল করেছেন। কাজ না করে কালী বাড়ি মন্দিরের উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অন্যের জমি দখল করে অন্তত ৫ শত একর পাহাড়-টিলায় গড়ে তুলেছেন বাগান-বাগিচা।
৩৬ মিনিট আগেগ্রেফতারকৃতদের বুধবার (২৭ আগস্ট) বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
২ ঘণ্টা আগেকৃষি বীজ বিতরণে নয়ছয়,কর্মশালার অর্থ আত্মসাৎ ও প্রায় চার কোটি টাকার কৃষি সরঞ্জাম বিতরণ প্রকল্পে অনিয়ম এবং ধান কাটার মেশিন বিতরণে অনিয়ম অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)
৮ ঘণ্টা আগেউপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের হরিচরন আমতলা এলাকায় সেকেন্দার আলীর ক্রয়কৃত সরকারী গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে শামিমসহ কয়েকজন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে ব্যবসায়ী থানায় মামলা করলে পুলিশ শামিমকে গ্রেফতার করে
৯ ঘণ্টা আগেনিজের বাড়িতে যাওয়ার জন্য শত বছরের মন্দিরের জায়গা দখল করেছেন। কাজ না করে কালী বাড়ি মন্দিরের উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অন্যের জমি দখল করে অন্তত ৫ শত একর পাহাড়-টিলায় গড়ে তুলেছেন বাগান-বাগিচা।
গ্রেফতারকৃতদের বুধবার (২৭ আগস্ট) বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ।
কৃষি বীজ বিতরণে নয়ছয়,কর্মশালার অর্থ আত্মসাৎ ও প্রায় চার কোটি টাকার কৃষি সরঞ্জাম বিতরণ প্রকল্পে অনিয়ম এবং ধান কাটার মেশিন বিতরণে অনিয়ম অভিযোগে খাগড়াছড়ি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)
উপজেলার অন্নদানগর ইউনিয়নের হরিচরন আমতলা এলাকায় সেকেন্দার আলীর ক্রয়কৃত সরকারী গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে শামিমসহ কয়েকজন ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। পরে ব্যবসায়ী থানায় মামলা করলে পুলিশ শামিমকে গ্রেফতার করে