মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সর্বশেষ
  • বিশ্ব
  • বিশেষ সংবাদ
  • রাজনীতি
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • খেলা
  • বাংলাদেশ
  • অর্থনীতি
  • ইপেপার
  • ইপেপার
nikhad logo
অনুসরণ করুন
facebooktwittertiktokpinterestyoutubelinkedininstagramgoogle
  • নিখাদ খবর
  • বিজ্ঞাপন
  • সার্কুলেশন
  • শর্তাবলি ও নীতিমালা
  • গোপনীয়তা নীতি
  • যোগাযোগ
স্বত্ব: ©️ দৈনিক নিখাদ খবর|প্রকাশক ও সম্পাদক: পারভীন আফরোজ খান
অর্থনীতি
ব্যাংক

জনতা ব্যাংক ডুবিয়েছে যারা

প্রতিনিধি
মোঃ মাজহারুল পারভেজ
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ৫৬
logo

জনতা ব্যাংক ডুবিয়েছে যারা

মোঃ মাজহারুল পারভেজ

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩: ৫৬
Photo
ছবি: সংগৃহীত

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের সময় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। সেই জায়গা থেকে আজ তা প্রায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকায়। গুটিকয়েক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে গিয়ে গোটা ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে গেছে। বিশৃঙ্খলায় খেলাপি ঋণের যাঁতাকলে পড়ে ডুবতে বসছে রাষ্ট্রীয় খাতের এক সময়ের উদীয়মান প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক। নতুন ঋণ বিতরণে গতি হ্রাস পাওয়ায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন অর্থায়ন থেকে এবং সাধারণ আমানতকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট বাড়ছে।

পতিত প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্যিক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানই এই ব্যাংক থেকে বের করে নিয়েছেন ২৭ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক খেকো এস আলম বের করে নিয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। এভাবে নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদার, থার্মেক্স গ্রুপ, অ্যাননটেক্সসহ ডজন খানেক ব্যবসায়ী মাফিয়া ব্যাংকটি থেকে অর্থ বের করে আর ফেরত দিচ্ছেন না। শুধু তা-ই নয় বছরের পর বছর সুদ পরিশোধ না করে উলটো তা মওকুফ করে নিয়েছেন। শুধু নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদারের ২৬১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করে নিয়েছেন। এভাবে এক সময়ের শক্ত মূলধনের ওপর গড়ে ওঠা জনতা ব্যাংক গত এক বছরে লোকসান করেছে ২২ শ কোটি টাকা। আর জানুয়ারি থেকে মার্চ তিন মাসে লোকসান করেছে ৯০০ কোটি টাকা।

গত ১৫ বছরে জনতা ব্যাংকের এই অনিয়ম,জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হিমশিম খাচ্ছে। এসব ঘটনায় একাধিক অনুসন্ধান টিম কাজ করলেও কার্যকর অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে একটি বিশেষ টিম বিগত এক দশকের বেশি সময়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির পৃথক অনুসন্ধান শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। অনুসন্ধান টিম ইতোমধ্যে জনতা ব্যাংক সংক্রান্ত সব ঋণের নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এর মধ্যে কিছু নথি দুদকের কাছে পৌঁছেছে। প্রাথমিক যাচাইয়ে দেখা গেছে, কিছু জালিয়াতির ঘটনায় আগেই মামলা ও চার্জশিট হয়েছে। সে কারণে ওই বিষয়গুলো বাদ দিয়ে টিম নতুন অনিয়মগুলো আলোচনায় রেখেছে।

ব্যাংকিং খাতের শীর্ষ খেলাপি প্রতিষ্ঠান সমূহের তালিকায় রয়েছে আব্দুল কাদের মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ। গ্রুপটির কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রুপালীসহ ১ ডজন কমার্শিয়াল ব্যাংকের পাওনা রয়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা । যা গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো টাকাই ক্লাসিফায়েড হয়েছে । সোনালী ব্যাংকের এই ঋণ আদায়ে করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। বছর বছর বিশাল পরিমাণ সুদযুক্ত হয়ে এ টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি পেয়ে সরকারী ব্যাংকগুলোর জন্য ক্যান্সারে রূপ ধারন করছে। বেসরকারি ব্যাংকংগুলোর জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞদের অনেকে। সূত্র মতে, আইনি ফাঁক ফোকর বের করে কোর্টের মাধ্যমে আব্দুল কাদির মোল্লা তার সিআইবি ক্লিন রাখার কৌশল অবলম্বন করে টিকে আছেন । এটিকে কোনো দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান মনে করছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যাংকাররা ।

দেশে সর্বশেষ জুন মাসের শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের প্রায় চার ভাগের এক ভাগের বেশিই ইতিমধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে। গত মার্চের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। তখন খেলাপি ঋণের হার ছিল ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। তিন মাস আগেই, মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। সেই তুলনায় মাত্র তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যান এমডিরাই জনতা ব্যাংকটিকে ডুবাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলেন, জনতা ব্যাংকের সাবেক ও পলাতক এমডি আব্দুস সালাম আজাদ। তার আমলেই ব্যাংকটি থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ বের হয়ে গেছে। নিজে নিরাপদে থেকে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সেই টাকা পাচার করে দুবাইয়ে বাড়ি বানিয়েছেন। বিপরীতে ডুবিয়েছেন জনতা ব্যাংককে। সর্বশেষ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে থেকে সাড়ে পাঁচ বছরে দ্বিগুণ করেছেন খেলাপি ঋণ। এর বেশির ভাগই পুঞ্জীভূত হয়েছে বড় গ্রাহকদের কাছে।

দেশে সবচেয়ে বেশি মন্দ ঋণ জনতা ব্যাংকের। এক সময়ের জনপ্রিয় জনতা ব্যাংক সুনাম হারায় অ্যাননটেক্স, থার্মেক্স,ক্রিসেন্ট, নাসা,বেক্সিমকো, ও এস আলম গ্রুপের ধারাবাহিক আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে । বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে সবচেয়ে বেশি মন্দ ঋণ জনতা ব্যাংকের। মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত জনতা ব্যাংক মোট ৯৪ হাজার ৭৩৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এরমধ্যে ৭০ হাজার ৮৪৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা খেলাপি হয়েছে। মাত্র নয় মাসে খেলাপি ঋণ ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের জুনে তা ছিল ৪৮ হাজার কোটি টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ২৯ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের ৪১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ন্যাশনাল ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৭ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির বকেয়া ঋণের ৬৪ শতাংশ। নয় মাস আগে তা ছিল ২০ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা।

দেশের প্রথম বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক ঋণ অনিয়ম, দুর্বল প্রশাসন ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে লোকসানে পড়ে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে ব্যাংকটির ওপর সিকদার গ্রুপের আধিপত্য ছিল। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২২ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এটি বিতরণ করা মোট ঋণের ৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ১৪ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৮ শতাংশ। ইউনিয়ন ব্যাংকের খেলাপি ২৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের প্রায় ৯০ শতাংশ। আইএফআইসি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ২৫ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। এটি গত বছরের জুনে ছিল তিন হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ব্যাংকটিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছিলেন।

অপর রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১৯ হাজার ৯১ কোটি টাকা। এটি বিতরণ করা ঋণের ২১ দশমিক ১১ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ১৭ হাজার ১২২ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ।

Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের সময় খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। সেই জায়গা থেকে আজ তা প্রায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকায়। গুটিকয়েক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীকে সুবিধা দিতে গিয়ে গোটা ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে গেছে। বিশৃঙ্খলায় খেলাপি ঋণের যাঁতাকলে পড়ে ডুবতে বসছে রাষ্ট্রীয় খাতের এক সময়ের উদীয়মান প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক। নতুন ঋণ বিতরণে গতি হ্রাস পাওয়ায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা বঞ্চিত হচ্ছেন অর্থায়ন থেকে এবং সাধারণ আমানতকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট বাড়ছে।

পতিত প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্যিক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানই এই ব্যাংক থেকে বের করে নিয়েছেন ২৭ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক খেকো এস আলম বের করে নিয়েছে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা। এভাবে নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদার, থার্মেক্স গ্রুপ, অ্যাননটেক্সসহ ডজন খানেক ব্যবসায়ী মাফিয়া ব্যাংকটি থেকে অর্থ বের করে আর ফেরত দিচ্ছেন না। শুধু তা-ই নয় বছরের পর বছর সুদ পরিশোধ না করে উলটো তা মওকুফ করে নিয়েছেন। শুধু নাসা গ্রুপের নজরুল ইসলাম মজুমদারের ২৬১ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করে নিয়েছেন। এভাবে এক সময়ের শক্ত মূলধনের ওপর গড়ে ওঠা জনতা ব্যাংক গত এক বছরে লোকসান করেছে ২২ শ কোটি টাকা। আর জানুয়ারি থেকে মার্চ তিন মাসে লোকসান করেছে ৯০০ কোটি টাকা।

গত ১৫ বছরে জনতা ব্যাংকের এই অনিয়ম,জালিয়াতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হিমশিম খাচ্ছে। এসব ঘটনায় একাধিক অনুসন্ধান টিম কাজ করলেও কার্যকর অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে একটি বিশেষ টিম বিগত এক দশকের বেশি সময়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির পৃথক অনুসন্ধান শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। অনুসন্ধান টিম ইতোমধ্যে জনতা ব্যাংক সংক্রান্ত সব ঋণের নথিপত্র চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এর মধ্যে কিছু নথি দুদকের কাছে পৌঁছেছে। প্রাথমিক যাচাইয়ে দেখা গেছে, কিছু জালিয়াতির ঘটনায় আগেই মামলা ও চার্জশিট হয়েছে। সে কারণে ওই বিষয়গুলো বাদ দিয়ে টিম নতুন অনিয়মগুলো আলোচনায় রেখেছে।

ব্যাংকিং খাতের শীর্ষ খেলাপি প্রতিষ্ঠান সমূহের তালিকায় রয়েছে আব্দুল কাদের মোল্লার থার্মেক্স গ্রুপ। গ্রুপটির কাছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রুপালীসহ ১ ডজন কমার্শিয়াল ব্যাংকের পাওনা রয়েছে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা। সোনালী ব্যাংকের পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকা । যা গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে পুরো টাকাই ক্লাসিফায়েড হয়েছে । সোনালী ব্যাংকের এই ঋণ আদায়ে করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়েছে। বছর বছর বিশাল পরিমাণ সুদযুক্ত হয়ে এ টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি পেয়ে সরকারী ব্যাংকগুলোর জন্য ক্যান্সারে রূপ ধারন করছে। বেসরকারি ব্যাংকংগুলোর জন্য অশনি সংকেত বলে মনে করছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞদের অনেকে। সূত্র মতে, আইনি ফাঁক ফোকর বের করে কোর্টের মাধ্যমে আব্দুল কাদির মোল্লা তার সিআইবি ক্লিন রাখার কৌশল অবলম্বন করে টিকে আছেন । এটিকে কোনো দীর্ঘ মেয়াদী সমাধান মনে করছেন না সংশ্লিষ্ট ব্যাংকাররা ।

দেশে সর্বশেষ জুন মাসের শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ২৭ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। অর্থাৎ ব্যাংক খাতের বিতরণ করা মোট ঋণের প্রায় চার ভাগের এক ভাগের বেশিই ইতিমধ্যে খেলাপি হয়ে গেছে। গত মার্চের শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। তখন খেলাপি ঋণের হার ছিল ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। তিন মাস আগেই, মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। সেই তুলনায় মাত্র তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যান এমডিরাই জনতা ব্যাংকটিকে ডুবাতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলেন, জনতা ব্যাংকের সাবেক ও পলাতক এমডি আব্দুস সালাম আজাদ। তার আমলেই ব্যাংকটি থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ বের হয়ে গেছে। নিজে নিরাপদে থেকে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। সেই টাকা পাচার করে দুবাইয়ে বাড়ি বানিয়েছেন। বিপরীতে ডুবিয়েছেন জনতা ব্যাংককে। সর্বশেষ ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) দায়িত্বে থেকে সাড়ে পাঁচ বছরে দ্বিগুণ করেছেন খেলাপি ঋণ। এর বেশির ভাগই পুঞ্জীভূত হয়েছে বড় গ্রাহকদের কাছে।

দেশে সবচেয়ে বেশি মন্দ ঋণ জনতা ব্যাংকের। এক সময়ের জনপ্রিয় জনতা ব্যাংক সুনাম হারায় অ্যাননটেক্স, থার্মেক্স,ক্রিসেন্ট, নাসা,বেক্সিমকো, ও এস আলম গ্রুপের ধারাবাহিক আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে । বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক কেলেঙ্কারির কারণে সবচেয়ে বেশি মন্দ ঋণ জনতা ব্যাংকের। মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত জনতা ব্যাংক মোট ৯৪ হাজার ৭৩৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ঋণ বিতরণ করেছে। এরমধ্যে ৭০ হাজার ৮৪৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা খেলাপি হয়েছে। মাত্র নয় মাসে খেলাপি ঋণ ৪৮ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের জুনে তা ছিল ৪৮ হাজার কোটি টাকা।

রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ছিল ২৯ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের ৪১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। ন্যাশনাল ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৭ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির বকেয়া ঋণের ৬৪ শতাংশ। নয় মাস আগে তা ছিল ২০ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা।

দেশের প্রথম বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক ন্যাশনাল ব্যাংক ঋণ অনিয়ম, দুর্বল প্রশাসন ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে লোকসানে পড়ে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরের শাসনামলে ব্যাংকটির ওপর সিকদার গ্রুপের আধিপত্য ছিল। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টু ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ২২ হাজার ৬৪৬ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এটি বিতরণ করা মোট ঋণের ৩৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের খেলাপি ১৪ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা বা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৩৮ শতাংশ। ইউনিয়ন ব্যাংকের খেলাপি ২৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। এটি ব্যাংকটির বিতরণ করা ঋণের প্রায় ৯০ শতাংশ। আইএফআইসি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়ে হয় ২৫ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা। এটি গত বছরের জুনে ছিল তিন হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা।

ব্যাংকটির কর্মকর্তাদের অভিযোগ, আইএফআইসি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ব্যাংকটিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যবহার করেছিলেন।

অপর রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১৯ হাজার ৯১ কোটি টাকা। এটি বিতরণ করা ঋণের ২১ দশমিক ১১ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ১৭ হাজার ১২২ কোটি টাকা বা মোট ঋণের ৩৬ শতাংশ।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

ব্যাংক নিয়ে আরও পড়ুন

হজযাত্রীদের জন্য বিমান টিকিটে শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা

হজযাত্রীদের জন্য বিমান টিকিটে শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা

সরকারি উদ্যোগে হজযাত্রীদের জন্য বিমান ভ্রমণে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে। হজ মৌসুমে বিমান টিকিটের ওপর প্রযোজ্য আবগারি শুল্ক সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হচ্ছে, যা হজযাত্রীদের খরচ কমিয়ে পবিত্র হজ পালনের পথ আরও সহজ করবে।

৫ দিন আগে
তিন মাস পর ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু

তিন মাস পর ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু

প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি ফের চালু হয়েছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় নতুন চালান দেশে আসে। প্রথম দফায় ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে রকি এন্টারপ্রাইজ, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির আমদানিকারক আব্দুল মালেক বাবু।

৯ দিন আগে
ছোট আমানতকারীদের টাকা ফেরত শুরু এই সপ্তাহেই

ছোট আমানতকারীদের টাকা ফেরত শুরু এই সপ্তাহেই

দেশের পাঁচ সমস্যাগ্রস্ত ইসলামি ব্যাংককে একীভূত করার প্রক্রিয়ায় আমানতকারীদের উদ্বেগ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক পিএলসি’ অধিগ্রহণের কাজ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়েছে—যেসব গ্রাহকের হিসাব এই পাঁচ ব্যাংকে রয়েছে, তাঁদের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দ্রুত ফেরত দে

৯ দিন আগে
দেশে তারাই বড়লোক, যারা ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত দেয় না

দেশে তারাই বড়লোক, যারা ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত দেয় না

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, যারা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করেন না এবং গ্যাস–বিদ্যুৎ বিল দিতে অনীহা দেখান, তারাই দেশের বড়লোক। তবে তার এই মন্তব্যে ব্যবসায়ীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, সম্পদ সঞ্চয় ও টাকা পাচারের ক্ষেত্রে কেবল ব্যবসায়ীরা নয়, সরকারি কর্মকর্তারাও জড়িত

১২ দিন আগে
হজযাত্রীদের জন্য বিমান টিকিটে শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা

হজযাত্রীদের জন্য বিমান টিকিটে শুল্কমুক্ত সুবিধা ঘোষণা

সরকারি উদ্যোগে হজযাত্রীদের জন্য বিমান ভ্রমণে গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে। হজ মৌসুমে বিমান টিকিটের ওপর প্রযোজ্য আবগারি শুল্ক সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা হচ্ছে, যা হজযাত্রীদের খরচ কমিয়ে পবিত্র হজ পালনের পথ আরও সহজ করবে।

৫ দিন আগে
তিন মাস পর ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু

তিন মাস পর ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি শুরু

প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি ফের চালু হয়েছে। দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে রোববার (৭ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টায় নতুন চালান দেশে আসে। প্রথম দফায় ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানি করেছে রকি এন্টারপ্রাইজ, বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রতিষ্ঠানটির আমদানিকারক আব্দুল মালেক বাবু।

৯ দিন আগে
ছোট আমানতকারীদের টাকা ফেরত শুরু এই সপ্তাহেই

ছোট আমানতকারীদের টাকা ফেরত শুরু এই সপ্তাহেই

দেশের পাঁচ সমস্যাগ্রস্ত ইসলামি ব্যাংককে একীভূত করার প্রক্রিয়ায় আমানতকারীদের উদ্বেগ কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন গঠিত ‘সম্মিলিত ইসলামি ব্যাংক পিএলসি’ অধিগ্রহণের কাজ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে জানানো হয়েছে—যেসব গ্রাহকের হিসাব এই পাঁচ ব্যাংকে রয়েছে, তাঁদের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দ্রুত ফেরত দে

৯ দিন আগে
দেশে তারাই বড়লোক, যারা ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত দেয় না

দেশে তারাই বড়লোক, যারা ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ফেরত দেয় না

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, যারা ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করেন না এবং গ্যাস–বিদ্যুৎ বিল দিতে অনীহা দেখান, তারাই দেশের বড়লোক। তবে তার এই মন্তব্যে ব্যবসায়ীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, সম্পদ সঞ্চয় ও টাকা পাচারের ক্ষেত্রে কেবল ব্যবসায়ীরা নয়, সরকারি কর্মকর্তারাও জড়িত

১২ দিন আগে