বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি, সেনা পাহারায় কার্যালয় ত্যাগ

প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন- বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবি করেছেন সংস্থার কর্মচারীরা। সেনাসদস্য ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের পাহারায় রাশেদ মাকসুদ ও কমিশনের সদস্যরা কার্যালয় ছাড়ার সময় কর্মচারীরা তার পদত্যাগ দাবি করে স্লোগান দেন। অন্যদিকে চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা পদত্যাগ না করলে কাল থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

তার আগে আজ বুধবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত বিএসইসির মূল ফটক বন্ধ ছিল। কেউ ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। সাড়ে ৩টার কিছু আগে সেনাবাহিনীর একটি দল এসে ভেতরে অবস্থান নেয়।

আজ বুধবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে বিএসইসি ভবনের নিচতলায় সকল কর্মীর পক্ষে ব্রিফিং করেন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম। এ সময় নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল আলম, রেজাউল করিম, রিপন কুমার দেবনাথসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমরা উনাদের (পুরো কমিশনের) পদত্যাগ চাচ্ছি। উনাদের পরিবর্তে যোগ্য লোক চাই। পদত্যাগ না করলে কাল থেকে কর্মবিরতিতে যাব আমরা।’

আজ সকাল থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিএসইসি ভবনের ৪ তলায় জড়ো হয়ে পুরো বিএসইসি কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। বিএসইসির প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় পুলিশ এসেও প্রবেশ করতে পারেনি। পরে দুপুর ২টার দিকে ছয় গাড়ি সেনাবাহিনী আসে। তাদেরকেও ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা জোরপূর্বক প্রবেশ করেন।

এর আগে বিএসইসির বোর্ড রুমে চেয়ারম্যান ও কমিশনারদেরকে বিভিন্ন ইস‍্যুতে ব‍্যাখ‍্যা চায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওই সময় চেয়ারম্যানকে ডিম ও পানির বোতল ছুড়ে মারেন কর্মচারীরা। পরে পদত্যাগ ছাড়াই সেনাবাহিনীর পাহারায় বিকেল ৩টা ৩৬ মিনিটে বিএসইসি ত‍্যাগ করেন চেয়ারম্যান ও কমিশনাররা। যাদেরকে আগামীকাল থেকে কমিশনে প্রবেশ করতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে পরে ৪টি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো—জরুরি সভা ডেকে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসরের অবৈধ আদেশ প্রত্যাহার, তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের শোকজ বন্ধ করা এবং পূর্বে প্রদত্ত শোকজ প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাওয়া, ১২৭ জনের নিয়োগের ব্যাপারে কমিশন বিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ এবং ৩ দিনের মধ্যে আপিল করে কমিশনের অবস্থান পরিষ্কার করা, কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে অশোভন-অপেশাদারমূলক দুর্ব্যবহার বন্ধ করা।

কর্মকর্তারা জানান, বর্তমান চেয়ারম্যানসহ কমিশনাররা কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। বিভিন্ন তদন্তকাজে হুমকির মুখে পড়লে কোনো ধরনের সহায়তা করেন না। এ জন্যই তাঁরা বর্তমান কমিশনের সদস্যদের পদত্যাগ চান।

মূলত ঘটনার সূত্রপাত গতকাল মঙ্গলবার নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারির পর থেকে। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদসহ পুরো কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর মঙ্গলবার (৪ মার্চ) জারি করা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ স্বাক্ষরিত আদেশে উল্লেখ রয়েছে, যেহেতু বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান এর চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং যেহেতু কমিশন জনস্বার্থে তাকে চাকরি হতে অবসর প্রদান করা প্রয়োজন মর্মে বিবেচনা করে, সেহেতু বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের কর্মচারী চাকরি বিধিমালা, ২০২১ এর ৬৩ বিধি এবং তৎসংশ্লিষ্ট সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪৫ ধারার ক্ষমতাবলে ৪ মার্চ, ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ৯৪৫ তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাকে চাকরি হতে অবসর প্রদান করা হলো। তিনি বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধা প্রাপ্য হবেন।

এর আগে রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন দায়িত্ব নিয়েই গত বছরের ২২ আগস্ট সাইফুর রহমানকে ইস্যুয়ার কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স বিভাগ থেকে আরঅ্যান্ডডি বিভাগের দায়িত্ব দেয়। তখনই মূলত তাকে এক প্রকার ওএসডি করা হয়। তবে, ৯ সেপ্টেম্বর সেই দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে সাইফুর রহমান নিয়মিত অফিসে এসেছেন, কিন্তু কোনো কাজ করতে পারেননি।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

শেয়ার বাজার নিয়ে আরও পড়ুন

পঞ্চগড়ে প্রতিটি কৃষকের বাড়িতে সুপারির গাছ লাগানোসহ এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বাগান আকারে সুপারি চাষ করা হচ্ছে। এবারে সুপারির ফলনও হয়েছে ভালো,বাজারে সুপারির দামও ভালো। এবছর সুপারি বিক্রি করে চাষি ও বাগান মালিকরা বেশ লাভবান হচ্ছেন।

৪ ঘণ্টা আগে

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে টানা ১০ দিন বন্ধ থাকবে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম। তবে এই সময়ে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে পাসপোর্টধারী যাত্রী চলাচল স্বাভাবিক থাকবে।

১১ দিন আগে