ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু খাগড়াছড়িতে রং ছড়িয়েছে

আপডেট : ১১ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ১৬
Thumbnail image

"হিংসা নয়, সম্প্রীতির খাগড়াছড়ি" এমন শ্লোগানে বর্ণিল আয়োজনে শুরু হলো ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের চার দিরব্যাপী বৈসু উৎসব। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু রং ছড়িয়েছে পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়িতে।

পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব “বৈসাবি”-কে ঘিরে খাগড়াছড়িতে চলছে বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর বর্ণিল আয়োজন। চাকমাদের বিঝু,মারমাদের সাংগ্রাই আর ত্রিপুরাদের বৈসু ও তনচংগ্যাদের বিহু নিয়ে বৈসাবি।

WhatsApp Image 2025-04-11 at 4.54.53 PM (1)

তারই ধারাবাহিকতায় আজ শুরু ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব বৈসু।

দুপুরে খাগড়াছড়ি টাউন হল প্রাঙ্গণে বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রধান ও প্রাণের উৎসব উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো: আমান হাসান। এর পরে পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়ে উৎসবের রং।

ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মতে, পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরে সুখ-শান্তি প্রত্যাশাই বৈসু। সকলের সুখ-শান্তি ও ত্রিপুরা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য বৈসু’র র‍্যালি বলে জানালেন কেন্দ্রীয় ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি কমল বিকাশ ত্রিপুরা।

WhatsApp Image 2025-04-11 at 4.54.52 PM

বৈসাবি মানেই রঙে-বর্ণে বৈচিত্র্যময় এক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। বিজু-সাংগ্রাই-বৈসু, যে নামেই বলা হোক না কেনো, এই উৎসব যেন পাহাড়িদের প্রেরণা, পাহাড়ের জাগরণ।

আগামী ১২ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায়ের তরুণ-তরুণী, কিশোরী-ছোট ছোট ছেলে-মেয়েরা ফুল তুলে নদী-খালে গঙ্গা দেবীর উদ্দেশ্যে ফুল নিবেদনের মধ্য দিয়ে পুরাতন বছরের গ্লানি মুছে নতুন বছরের শুভ কামনায় ফুল বিজু পালন করবে। ফুল দিয়ে ঘরের প্রতিটি দরজার মাঝখানে মালা গেঁথে সাজানো হয়। ১৩ এপ্রিল চাকমা সম্প্রদায়ের মূল বিজু আর পরের দিন ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা পালন করবে। একই দিন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের হারি বৈসু, বিযুমা, বিচিকাতাল, ফুল বিজু, মূলবিজু ও বিচিকাতাল নামে নিজস্ব বৈশিষ্টতায়। ১৪ এপ্রিল খাগড়াছড়িতে মারমা সম্প্রদায় সাংগ্রাইং উৎসবে ঐতিহ্যবাহী জলকেলি বা পানি খেলা ও জেলা প্রশাসনে উদ্যোগে হবে বর্ষবরণের র‍্যালি। এ উৎসবে আনন্দের আমেজ ছড়ায়।

WhatsApp Image 2025-04-11 at 4.54.51 PM

ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু উৎসবের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির খাগড়াছড়ি গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ মো: আমান হাসান।

১৯৮৫ সাল থেকে খাগড়াছড়িসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত তিন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সম্মিলিত উদ্যোগে ‘বৈসাবি’ নামে এ উৎসব পালন করে আসছে। সময়ের ব্যবধানে নিজ নিজ সম্প্রদায়ের লোকদের কাছে ‘বৈসাবি’ শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ত্রিপুরা, মারমা ও চাকমা সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব নামে ত্রিপুরা ভাষায় বৈসু, মারমা ভাষায় সাংগ্রাই এবং চাকমা ভাষায় বিজু নামে এ উৎসব পালন হয়ে থাকে। এ তিন সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষার নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ‘বৈসাবি’ নামকরণ করা হয়। প্রতিবছর বাংলা নববর্ষের পাশাপাশি পাহাড়ের বসবাসরত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী ঐতিহ্যবাহী দিনটি পালন করে থাকে।

WhatsApp Image 2025-04-11 at 4.54.54 PM

অপরদিকে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার ত্রিপুরা সম্প্রদায়ে বৈসু উৎসবকে মহা-উৎসব, সর্বজনীন উৎসব, প্রাণের উৎসব ও মিলনের উৎসব আখ্যায়িত করে বলেন, আজকের উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে মনে হয়ে ত্রিপুরা সম্প্রদায় প্রকৃতির পূজারি।

এবারের বৈসাবি উৎসব বিগত বছরগুলোর চেয়ে ভিন্ন ও উৎসব মুখর পরিবেশে বাড়তি আয়োজনে পালিত হচ্ছে। ফলে আধুনিকতার ছোঁয়া আর বাংলা’র মিশেলে বৈসাবি হয়ে উঠেছে সর্বজনীন উৎসবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সাহিত্য ও সংস্কৃতি নিয়ে আরও পড়ুন

‘যারা আমাকে বা অন্য যে কারো নামে ৮-১০টা বিবাহ করেছে বলে খারাপ মন্তব্য করেন। তাদেরকে একটি কথা বলব: আজ নাস্তিক, মুরতাদদের সুরে সুর মিলিয়ে আপনিও যদি অনেকগুলো বিবাহ এবং তালাককে জঘন্য বলেন, আর বর্তমান সময় এটা বুঝিয়ে দেন যে, যাদের জীবনে অনেকগুলো বিয়ে হয়েছে তারা খারাপ মানুষ

১০ দিন আগে

চারটি সহকারী হাই কমিশনার পদে ভারত যাদের মনোনীত করেছে, সেই কূটনীতিবিদদের নামের তালিকাও বাংলাদেশ সরকারের কাছে বেশ কয়েক সপ্তাহ আগেই পাঠানো হয়েছে। ঢাকা থেকে এখন সেই নামগুলোতে সবুজ সংকেত এলেই এই চারজন সহকারী হাই কমিশনার তাদের নতুন কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব নেবেন

২২ দিন আগে

নিহতদের সবার বাড়ি বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলায়। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন। ইংরেজি দৈনিক টাইমস অব ওমান এক প্রতিবেদনে ওমানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে

২২ দিন আগে

জাতি ধর্ম নির্বিশেষে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ১৯২৫ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব শিশু কল্যাণ সম্মেলনে প্রথম আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ঘোষিত হয়। পরে ১৯৫০ সাল থেকে বেশিরভাগ কমিউনিস্ট ও পোস্ট-কমিউনিস্ট দেশে ১ জুন দিনটি পালন শুরু হয়

২৫ দিন আগে