৪ দিনেও জ্ঞান ফেরেনি মাগুরার শিশুটির

এজাহারে লোমহর্ষক বর্ণনা

প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image
শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়

মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটির চার দিনেও জ্ঞান ফেরেনি। ওই ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই ও তার বাবাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শিশুটির অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ থাকায় গতকাল শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। লাইফ সাপোর্টে কৃত্রিম যন্ত্রের সাহায্যে শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে তার।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনার তিন দিন পর শনিবার মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী শিশুটির মা। মামলায় অভিযোগ করেন, তার মেয়ে জামাইয়ের সহায়তায় তার বাবা (শ্বশুর) শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি মেয়ের শাশুড়ি ও ভাশুর জানত। ঘটনা ধামাচাপা দিতে তারা শিশুটিকে হত্যার চেষ্টাও চালায়।

এ ঘটনায় শনিবার বিকেল ৩টার দিকে মামলা রেকর্ড হয়। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়েছে। তারা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিল।

এজাহারে বাদী আরও উল্লেখ করেন, বুধবার (৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাত আড়াইটার দিকে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখেন, ছোট বোন পাশে নেই, মেঝেতে পড়ে আছে। তখন শিশুটি বড় বোনকে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হচ্ছে। কিন্তু বড় বোন মনে করে, শিশুটি ঘুমের মধ্যে আবোলতাবল বলছে। এরপর সকাল ৬টার দিকে শিশুটি আবার বোনকে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়ার কথা বলে। কারণ জিজ্ঞেস করলে সে বোনকে জানায়, রাতে দুলাভাই (বোনের স্বামী) দরজা খুলে দিলে তার বাবা (শ্বশুর) তার মুখ চেপে ধরে তার কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করে। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়।

এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনা জানার পর শিশুটির বড় বোন তার মাকে মোবাইলে বিষয়টি জানাতে গেলে তার স্বামী ফোন কেড়ে নিয়ে তাকে মারধর করে। এ কথা কাউকে বললে শিশুটিকে হত্যার হুমকি দেয় এবং তাদের দুই বোনকে আলাদা দুটি কক্ষে আটকে রাখে। সকালে এক নারী প্রতিবেশী বাড়িতে এলে বোনের ভাশুর দরজা খুলে দেন। তখন শিশুটির মাথায় পানি দিয়ে সুস্থ করানোর চেষ্টা করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিশুটি আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে বোনের শাশুড়ি অন্য প্রতিবেশীদের সহায়তায় মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে মেয়েটিকে জিনে ধরেছে বলে চিকিৎসকদের জানান। তবে, চিকিৎসক ও অন্যরা বিষয়টি টের পেলে শাশুড়ি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বোনের শ্বশুরবাড়ি মাগুরা শহরের নান্দুয়ালী এলাকায় বেড়াতে গিয়ে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের (৫০) লালসার শিকার হয় শিশুটি। ওইদিন বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। ওই দিন দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাতেই পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। শুক্রবার রাতে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

অপরাধ নিয়ে আরও পড়ুন

স্বামী রেভিলিয়াম রোয়াজার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি(জিডি) করেছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিরুনা ত্রিপুরা।

৩ ঘণ্টা আগে

নীলফামারীর সৈয়দপুরে দুইজন গুণী প্রধান শিক্ষককে অবসর ও বদলিজনিত কারণে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।

৬ ঘণ্টা আগে

মাদক ব্যাবসা ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসাননগর ইউনিয়নবাসী প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসীরা প্রতিবাদকারীদের কুপিয়ে জখম করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

৬ ঘণ্টা আগে

ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে অপপ্রচার করায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক ও সরকারী কেসি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার মাহমুদ।

৬ ঘণ্টা আগে