সেনাপ্রধানের এক বিশেষ উদ্যোগ: পাল্টে যাচ্ছে পাহাড়ের জীবন

প্রতিনিধি
খাগড়াছড়ি
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

খাগড়াছড়ির দুর্গম অঞ্চলের দুই গ্রাম হলো কারিগর পাড়া ও রেজামনি পাড়া। পাঁচ শতাধিক লোকের বসবাস এখানে । তবে রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই, এমনকি নেই বিশুদ্ধ খাওয়ার পানির ব্যবস্থা। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এই দুটি গ্রামে। প্রায় তিন মাস আগে রেজামনি পাড়া আর্মি ক্যাম্প পরিদর্শনে এসেছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। এ সময় তিনি কথা বলেন গ্রামবাসীর সঙ্গে। জানতে চান তাদের সুবিধা-অসুবিধার কথা। গ্রামবাসী রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যার কথা জানান। বিশুদ্ধ পানির অভাবে গ্রামবাসীসহ শিশুরা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

একমুহূর্ত দেরি না করে গ্রামবাসীর সামনেই বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন সেনাপ্রধান। কয়েক দিনের মধ্যেই নেওয়া হয় বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি সরবরাহের জন্য সোলার প্যানেল প্রকল্প। ১ জুলাই থেকে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। শেষ হবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর। এরই মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে গ্রামবাসীর উচ্ছ্বাস-আনন্দ। বাস্তবায়ন হতে যাওয়া এই প্রকল্প তাদের জীবনমান পাল্টে দেবে। সেনাপ্রধানের উদ্যোগকে তারা উপরওয়ালার আশীর্বাদ বলে মনে করছেন।

প্রকল্পটির কাজ বাস্তবায়ন করছে রাজলক্ষ্মী অ্যান্ড রাজ পিউ ইঞ্জিনিয়ারিং সল্যুশন। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব বড়ুয়া বলেন, ‘সোলার প্যানেল সিস্টেমে এখান থেকে প্রতিদিন চার হাজার লিটার বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা যাবে। প্রকল্প এলাকায় স্থাপন করা হচ্ছে ১ হাজার লিটারের দুইটা পানির ট্যাংকি ও ২ হাজার লিটারের একটি পানির ট্যাংকি।’ তিনি বলেন, পাঁচ শতাধিক মানুষ এখান থেকে বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি পাবে।

সাম্প্রতিক সময়ে সেনাবাহিনী কর্তৃক পার্বত্য সীমান্ত সড়ক নির্মাণ যোগাযোগব্যবস্থায় নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। যেসব জায়গায় পৌঁছাতে দুই-তিন দিন হাঁটতে হতো, সেসব জায়গায় এখন দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছানো যাচ্ছে।

এ ছাড়া দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন তারা। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নামকরা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও নিরাপত্তার মাধামে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে সেনাবাহিনী সহযোগিতা করে যাচ্ছে। বাজারগুলোতে সেনাবাহিনী নিয়মিত টহল পরিচালনা করে। পর্যটনশিল্পের বিকাশে সেনাবানিহী অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে বলে জানান তারা।

স্থানীয়রা জানান, দুর্গম অঞ্চল থেকে মুমূর্ষু রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসতেও সেনাবাহিনী সহযোগিতা করে। কিছু ক্ষেত্রে মুমূর্ষু রোগীদের নিজস্ব হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চট্টগ্রামের হাসপাতালে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত এক বছরে ১৯ হাজার ৯১২ জনকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে সেনাবাহিনী। এর মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রয়েছে ১২ হাজার ৫৫৪ আর বাঙালি ৭ হাজার ৩৫৮ জন।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

জেলা নিয়ে আরও পড়ুন

হামিদুল সরকার খাগড়াছড়ি জেলার মোহাম্মদপুর এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় একজন ভ্যানচালক। গত ১৯ জুলাই ঢাকার বাড্ডা এলাকায় তিনি তলপেটে গুলিবিদ্ধ হন এবং বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন

৩৬ মিনিট আগে

ব্রিটিশ আমলে এই রাজবাড়িতে বিচার কাজ, পুঁথিপাঠ, এবং পূজা-পার্বণ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠিত হত। বাড়িটির নামানুসারে পুরো গ্রামের নাম হয় ‘হরিশ্চন্দ্র পাঠ’।

৩ ঘণ্টা আগে

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকারের সভাপতিত্বে আগামী ৫ আগষ্ট পর্যন্ত জুলাই“৩৬” পালন নিয়ে মতামত নেওয়া হয়

৩ ঘণ্টা আগে

প্রেসক্রিপশনে রোগীর বিশেষ করে নারী রোগী গোপনীয় তথ্যসহ নানা নির্দেশনা থাকে। অনেক সময় পারিবারিক তথ্যও থাকে। কিন্তু কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির চ্যাটিং গ্রুপসহ বিভিন্ন জায়গায় তা আপলোড করা হয়।

৪ ঘণ্টা আগে