শেখ হাসিনার বেয়াইর রোষানলে

বরিশালে দুই ডজন মামলার আসামি স্বামী-স্ত্রী

প্রতিনিধি
স্টাফ রিপোর্টার
Thumbnail image
ছবি: প্রতিনিধি

জাল দলিল তৈরি করে প্রকৃত জমির মালিকের কাছ থেকে জালিয়াতি পূর্বক জমি নেয়ার চেষ্টার পাশাপাশি পরিকল্পিতভাবে পৃথক হামলাসহ প্রায় দুই ডজন মামলা দায়ের করেছে প্রতিপক্ষ। এমন অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বরিশাল চকবাজার বিউটি রোডের বাসিন্দা সৈয়দ জুলফিকার উদ্দিন চৌধুরীর ছেলে আমেরিকান প্রবাসি সৈয়দ আশিক চৌধুরি ও তার স্ত্রী আমিনা বেগম সুমি। শনিবার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১২ টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি (বিআরইউ) কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

লিখিত বক্তব্যে আশিক চৌধুরি বলেন, বরিশাল চকবাজার রোডস্থ বিউটি সিনেমা হলে অনেকেই ছবি দেখেছেন। ঘটনাচক্রে আজ বিউটি হলের জমি নিয়ে যে সব ঘটনা ঘটে চলেছে তা সিনেমার তুলনায় কোন অংশে কম নয়। সিনেমা হলের ৩৮.৫০ শতাংশ জমির মালিক আমি এবং আমার বোন। এই জমিসহ পার্শ্ববর্তী অংশ মিলিয়ে মোট ৫৩.৭০ শতাংশ জমির রেকর্ডে মালিক আমি আমার মা ও বোন।

কিন্তু এই জমির অনুকূলে খুলনা ইসলামকাঠি থেকে জালিয়াতি পূর্বক তিনটি জাল দলিল তৈরি করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে যার মালিক হলেন- মৃত. কাদের মল্লিক, রাশিদা বেগম ও মো. মফিজুল ইসলাম (কাজী কামাল)। যা একই দিনে করা হয়েছে। আর বরিশাল সদর তহশিল অফিস ও এসিল্যান্ড অফিসের রেকর্ড বুক থেকে ১৭ নং খতিয়ান পৃষ্ঠাটি নেই। যা রহস্যজনকভাবে ছিড়ে ফেলা হয়েছে। তবে অনলাইন রেকর্ডে সব তথ্য রয়েছে।

উক্ত জমি নিয়ে আদালতে নিষেধাজ্ঞা ছিল, কিন্তু সম্প্রতি আদালত আমার পক্ষে রায় দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি চলতি মাসের ৯ মে চকবাজার বিউটি রোডস্থ আমার জমিতে কার্যক্রম শুরু করেছি। ১০ মে সকালে কার্যক্রম করতে বাধা দেয় আবুল হাসান কুদ্দুসসহ কয়েক জন। ঘটনাস্থলে কোতয়ালি থানা পুলিশ পরিদর্শন করেছে।

ঘটনার শুরুতে আমার পিতার মত আমাকেও জিম্মি করে ১০০ টাকার ৩টি স্টাম্পে ১২ কোটি টাকা আমি নিয়েছি এই মর্মে লিখিত চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করতে বলেন কাজী কামাল। তার অফিসে আমাকে ডেকে নেয়ার পর টেবিলের সামনে থাকা চুক্তিনামায় ওই লেখা দেখার পর, আমি তা না দেখার ভান করে জরুরি কাজ আছে, কাল কথা বলবো, এই বলে রুম থেকে বেড়িয়ে দ্রুত পালিয়ে যাই। পরে ডাকার পরও আমি কাজী কামালের কাছে না যাওয়ার পর শুরু হতে থাকে একের পর এক মামলা। কাজী কামাল ও তার নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি বাদী হয়ে আমি ও আমার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদের আসামি করে প্রায় দুই ডজন মামলা দায়ের করেছে। আমি ও আমার স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা করার অনুকূলে যে মামলা দায়ের করেছি। তার তদন্ত রিপোর্টসহ ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।

প্রতিপক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে যে সব মামলা দায়ের করেছে, সেই সব মামলার বাদি ভিন্ন ভিন্ন হলেও মামলাগুলোর একমাত্র আইনজীবী হলেন মেহেদী হাসান। এতে স্পষ্ট করে বোঝা যায় আমার প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে এক আইনজীবী দিয়েই একের পর এক মামলা দায়ের করিয়েছেন।

ভুয়া জমির দলিল দিয়ে জমির মালিকানা দাবিতে গত ১১/১০/২০২২ তারিখে বরিশাল অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল। আদালত গত ২৭/০২/২০২৩ তারিখে বিবাদি আমি সৈয়দ আশিক চৌধুরীর পক্ষে রায় দেন।

মূলত গত ০২/০৩/২৩ তারিখ রাত সাড়ে ১০ টায় মফিজুল ইসলাম কামাল এর ম্যানেজার রাকিব মল্লিক ও তার পিতা কালাম মল্লিক সহ আবুল হাসান কুদ্দুস বিউটি রোডে এসে মিনি ট্রাকে (মাদারীপুর ট- ১১-০৩২৫) রড উঠানোর সময় সিটি করপোরেশন ট্রাক সহ মালামাল জব্দ করে নিয়ে যায়। তখন চালক খোকন জানিয়েছিল, মেয়র সাদেক সাহেবের নির্দেশে ট্রাকের মালামাল জব্দ করা হয়েছে।

এ ঘটনায় গত ১৮/৪/২০২৩ তারিখে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি-১ আদালতে আমাকে ও আবুল হাসান কুদ্দুস সহ ৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন মফিজুল ইসলাম। এক বছর পর আমার সাথে হওয়া আসামি আবুল হাসান কুদ্দুস ওই রডের মালিক সেজে আমার বিরুদ্ধে রড চুরির মামলা দায়ের করেন। আর এ মামলার প্রধান সাক্ষী কাজী মফিজুল ইসলাম।

অপরদিকে বরিশাল সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে টাউন প্লানার সানজিত হোসেন গত ২০/০৩/২০২৩ তারিখে বরিশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়েরকৃত বিউটি রোডে রড চুরির মামলায় (নং-২১২/২৩) মফিজুল ইসলাম কামাল এর ম্যানেজার রাকিব মল্লিক ও তার পিতা কালাম মল্লিক এবং ম্যানেজারের মামা মিজানুর রহমান টিটু গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে খোকন সেরনিয়াবাত মেয়র পদে এসে মফিজুল ইসলাম কামালের সাথে যৌথ হয়ে করে মামলাটি পরিকল্পিতভাবে শেষ করে দেয়া হয়।

এরপর মফিজুল ইসলাম কামালের নেতৃত্বে গত ০৭/০৬/২০২৩ইং তারিখে রাকিব মল্লিক, কালাম মল্লিক, হোসনেয়ারা আক্তার ও শাহিনুর আক্তার সহ ২০/২৫ জন মিলে বিউটি রোডে থাকা আমার অফিস রুম ভাঙচুর করে। বাধা দেয়ার সময় আমাকে সহ আমার স্ত্রীকে বেদম মারধর করে এবং গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। উলটো কাজী মফিজুল ইসলাম কামাল শেয়ার অংশে পরিচালিত 'কে এমসি হাসপাতাল' থেকে একটি জখমের মিথ্যা সনদ নিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে হয়রানি করছেন। প্রতিপক্ষ একটি মামলায় আমাকে প্রধান সাক্ষি করে অভিনব কায়দায় জেলহাজতে পাঠিয়েছিল।

উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হামলা মামলার কাগজপত্রসহ জাল দলিলের তথ্য প্রমাণ তুলে ধরেন আশিক চৌধুরি।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

জেলা নিয়ে আরও পড়ুন

চলমান বিশেষ অভিযানে নাশকতার মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মিরাজসহ ৪ জনকে আটক করেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ।

২ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাসরত মুসলমানদের একটি অংশকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো দিয়ে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

৩ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাসরত মুসলমানদের একটি অংশকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

৪ ঘণ্টা আগে