বরিশালের নৌপথে আবারও স্টিমার সার্ভিস চালু হবে: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

প্রতিনিধি
বরিশাল
Thumbnail image

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। শনিবার বিকেলে বরিশাল সার্কিট হাউসে

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা

দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে বরিশালের নৌপথগুলোতে আবারও স্টিমার সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে বরিশাল সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানান নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরিশাল-খুলনা স্টিমার সার্ভিস শুরু হয়েছিল ১৮৮৪ সালে। সেই হিসাবে সময়কাল ১৩৯ বছরের হলেও এর পেছনে রয়েছে আরও ইতিহাস, যার সূচনাকাল ১৮২৯ সাল। ব্রিটিশ সরকার ১৮২৯ সালে মেরিন বোর্ডের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রক জন স্টোনকে এ অঞ্চলের নদীগুলোর উপযোগী স্টিমার নির্মাণের তাগিদ দেয়। এর ১৫ বছর পর অর্থাৎ ১৮৪৪ সালে ব্রিটিশ মালিকানাধীন দ্য ইন্ডিয়ান জেনারেল স্টিম নেভিগেশন কোম্পানি (আইজিএসএন) বরিশালে অঞ্চলে জরিপ শুরু করে। তার পরও চলে যায় আরও ৩০ বছর। ১৮৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রিভার স্টিম নেভিগেশন বা আরএসএন কোম্পানি। ওই কোম্পানি বিভিন্ন নৌ রুট পর্যালোচনা করে এবং ১৮৮৪ সালে ফ্লোটিলা কোম্পানি বরিশাল-খুলনা রুটে স্টিমার শুরু করেছিল। বরিশাল-ঢাকা, বরিশাল-খুলনা নৌপথে সরকারি সংস্থা বিআইডব্লিউটিসির রকেট স্টিমার সেবা ২০২২ সালের অক্টোবরে বন্ধ হয়ে যায়।

নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বন্ধ হয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্যবাহী স্টিমার সার্ভিস আবার চালুর কথা জানান মতবিনিময় সভায়। তিনি বলেন, নৌপথে চলাচলকারী চারটি স্টিমার সংস্কারের কাজ চলছে। আগামী পাঁচ-ছয় মাসের মধ্যে অন্তত দুটি স্টিমার আবার চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। স্টিমারে ভ্রমণকারীদের জন্য এটি একটি বড় সুখবর হবে। নৌপথকে সক্রিয় ও সুরক্ষিত রাখতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নতুন করে অন্তত আটটি লঞ্চঘাট ও পন্টুন নির্মিত হচ্ছে। এর মধ্যে বরিশালের লাহারহাট ও ভোলা জেলার মনপুরাও রয়েছে।

দক্ষিণাঞ্চলের আরেক আলোচিত বিষয় ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনার বিষয়ে নৌপরিবহন উপদেষ্টা বলেন, ‘ভোলা-বরিশাল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হলেও ইলিশের অভয়ারণ্য রক্ষার্থে সেখানে নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল নির্মাণের চিন্তা করা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, সেতুর ফলে নদীতে চর পড়ে গেছে। তাই ভোলার ক্ষেত্রে টানেলের ভাবনা রয়েছে, যাতে ইলিশের অভিবাসন ব্যাহত না হয়।’

ভাঙা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত ছয় লেনের মহাসড়ক প্রকল্পের প্রস্তাব ইতিমধ্যে অনুমোদন পেয়েছে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, এটি প্রাথমিকভাবে এটি কুয়াকাটা পর্যন্ত না গিয়ে পটুয়াখালী পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকবে। এ ছাড়া আড়িয়াল খাঁ নদের মীরগঞ্জ এলাকায় সেতু নির্মাণের প্রকল্প প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, এই সেতু হলে বরিশালের সঙ্গে আশপাশের তিনটি উপজেলার সড়ক যোগাযোগ সহজ হবে।

বরিশালের ক্রীড়াঙ্গনের অবস্থা প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‌বরিশাল বিপিএল চ্যাম্পিয়ন হলেও এখানকার স্টেডিয়ামে খেলা হয় না। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্টেডিয়ামের কাজ শেষ হবে বলে ঠিকাদার জানিয়েছেন। বিসিবির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এখানে প্রতিনিধি পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।

হিজলা ও মেহেন্দীগঞ্জে সরেজমিন ঘুরে দেখে উন্নয়নের ঘাটতি চোখে পড়েছে উল্লেখ করে এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, মেহেন্দীগঞ্জে নদীভাঙন রোধে ৯০০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, শিগগিরই এই কাজ শুরু হবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ সময় উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বরিশালের নদীতীরে বস্তি গড়ে উঠেছে, এগুলো উচ্ছেদ করতে গেলে অনেক সমস্যা হবে; কিন্তু নদীর পাড় রক্ষা ও নগর উন্নয়নের স্বার্থে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পায়নের জন্য গ্যাস–সংযোগ অপরিহার্য বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তাঁর ভাষায়, গ্যাস ছাড়া কেউ আসবে না। গ্যাস টানেলের সঙ্গেও আসতে পারে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

জেলা নিয়ে আরও পড়ুন

চলমান বিশেষ অভিযানে নাশকতার মামলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক মোশাররফ হোসেন মিরাজসহ ৪ জনকে আটক করেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ।

৫ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাসরত মুসলমানদের একটি অংশকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো দিয়ে বাংলাদেশে পুশইনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

৫ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে চিহ্নিত করে ভারতের গুজরাট রাজ্যে বসবাসরত মুসলমানদের একটি অংশকে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে সম্প্রতি বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

৭ ঘণ্টা আগে