ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার লঞ্চঘাটকে শহীদ শরীফ ওসমান বিন হাদি-এর নামে নামকরণ করা হয়েছে, যিনি শৈশব ও কৈশোরের অমলিন স্মৃতিগুলো এই এলাকার নদীর তীর ও ঘাটের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। বরিশাল বিআইডব্লিউটি-এর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন বৃহস্পতিবার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, “ওসমান হাদির জন্মস্থান নলছিটি। তার শৈশব, বেড়ে ওঠা এবং জীবন সংগ্রামের সঙ্গে এই লঞ্চঘাটের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তাই এলাকার লঞ্চ টার্মিনাল সংস্কার ও রঙের কাজের পাশাপাশি নামকরণ করা হয়েছে। আগামী রোববার নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন টার্মিনাল পরিদর্শন করবেন।”

স্থানীয়রা জানান, লঞ্চঘাটের নদী তীরের এই এলাকা শহীদ হাদির জীবন ও শৈশবের অবিচ্ছেদ্য অংশ। নদীর ধারে দাঁড়িয়ে মানুষের আসা-যাওয়া দেখা, লঞ্চের ভিড়ে সময় কাটানো—এগুলো ছিল তার বেড়ে ওঠার নীরব সাক্ষী। স্থানীয় ব্যবসায়ী রব হাওলাদার বলেন, “শহীদ হাদির স্মরণে এমন কিছু স্থায়ী করা হয়েছে যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম মনে রাখবে। ঘাটের নাম তার নামে হওয়া অত্যন্ত স্মরণীয় সিদ্ধান্ত।”

ওসমান হাদির প্রতিবেশী বেলায়েত হোসেন নান্নু বলেন, “এই ঘাট, এই নদী, এই মানুষ—সবকিছুতেই হাদির স্মৃতি ছড়িয়ে আছে। ঘাটের নাম তার নামে হওয়া মানে সে চিরদিন বেঁচে থাকবে।”

উল্লেখ্য, ১২ ডিসেম্বর ওসমান হাদিকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করা হয়। প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়, যেখানে ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পরে তার মরদেহ দেশে আনা হয় এবং লক্ষ জনতার উপস্থিতিতে জানাজা নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে দাফন করা হয়।