মানিকগঞ্জে এক বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্টে ল্যাব ইনচার্জ হিসেবে এমন একজন চিকিৎসকের সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে, যিনি তিন বছর আগে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে গেছেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট সেন্টারের কার্যক্রম নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ ওঠেছে। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো একই রোগীর একই পরীক্ষা তিনটি ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে করানোর পর তিন ভিন্ন ফলাফল আসায় ল্যাব পরীক্ষার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

রুনা আক্তার (৩৪) নামের এক নারী এলার্জি সমস্যায় ভুগছিলেন। ১২ ডিসেম্বর তিনি মানিকগঞ্জের আল শেফা এক্স-রে অ্যান্ড প্যাথলজি সেন্টারে চিকিৎসক মো. মীর হোসেনের পরামর্শে এসজিপিটি পরীক্ষা করান। সেখানে ফল আসে ৫২ ইউ/এল। চিকিৎসক এক সপ্তাহ ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন। সন্দেহজনক ফলাফল দেখে রুনা একই পরীক্ষা আবার করান সেন্ট্রাল স্পেশালিস্ট হাসপাতালে—ফল আসে ৩০ ইউ/এল। পরে বেউথা রোডের আফরোজা বেগম জেনারেল হাসপাতালে পরীক্ষা করালে ফল আসে ২৫ ইউ/এল। তিনটি ভিন্ন ফলাফলে তিনি ও পরিবার চরম বিভ্রান্তিতে পড়েন।

আল শেফা সেন্টারের রিপোর্টে ল্যাব ইনচার্জ হিসেবে ডা. এটিএম মুক্তার হোসাইনের সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে। তবে তিনি তিন বছর আগে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে গেছেন এবং বর্তমানে যোগাযোগের কোনো তথ্য নেই। বর্তমানে ল্যাব ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শরীফুল ইসলাম। তিনি জানান, তিনি ‘কনফিডেন্স’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, কিন্তু রিপোর্টের ভিন্নতার বিষয় ব্যাখ্যা করতে পারেননি।

এক কর্মকর্তা বলেন, কনফিডেন্সের মতো প্রশিক্ষণ স্বীকৃত নয়। সিভিল সার্জন ডা. এ কে এম মোফাখখারুল ইসলাম জানান, নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে এবং আল শেফা সেন্টারে শিগগিরই তদন্ত হবে। কোনও অনিয়ম পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন অনিয়ম রোগীর চিকিৎসাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তাই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মান নিয়ন্ত্রণ ও সরকারি তদারকি আরও জোরদার করার প্রয়োজন রয়েছে।