১১৪ বছরের পুরোনো নীলফামারীর ঐতিহ্যবাহী সৈয়দপুর শিল্পসাহিত্য সংসদ। যা মিনি পার্লামেন্ট হিসাবে পরিচিত। একসময় প্রতিষ্ঠানটি বাঙালিদের সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। নাচ, গান, নাটক, নানা প্রতিযোগিতায় মুখর থাকতো সারাবছর। বেড়িয়ে আসতো নানা প্রতিভার শিল্পী, কলাকুশলী। কালের পরিক্রমায় সংগঠনটির বয়স বেড়েছে, নেতৃত্বের হাত বদল হয়েছে। সব সময় রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের ঠাঁই হয়েছে সদস্য হিসাবে। এবারও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি করে দলীয় আখড়ায় পরিণত করা হয়েছে। সংগঠনটির কর্মকর্তাদের নানা অনিয়মের কারণে বর্তমানে বিতর্কের সংগঠনে পরিণত হয়েছে।

সৈয়দপুর শিল্প সাহিত্য সংসদটি ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। লিবার্টি সিনেমা হলের পেছনে একটি বিল্ডিংয়ে কার্যক্রম শুরু হয়। তখন সংগঠনটি সিনেমা হলের ভাড়ার টাকায় চলতো। পরবর্তীতে সিনেমা হলে দর্শক কমে গেলে সিনোম হলটি ভেঙে সংগঠনের নামে শপিং মল তৈরি করা হয়। সদস্যরা লটারীরর মাধ্যমে তা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন। এ ভবনেই রাখা হয় শিল্প সাহিত্য সংসদটি।

১২০ জন সদস্য ও কার্যনির্বাহী কমিটি দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে সংগঠনটি। প্রায় এক বছর আগে শুন্যপদে সদস্য নিতে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার ৮০ জন ব্যক্তি ২ হাজার টাকায় নির্ধারিত ফরম কিনে আবেদন করেন। এতে সংগঠনের আয় হয় ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। দীর্ঘদিন পর গত ২৪ অক্টোবর হঠাৎ করে এক সভায় দুইজন নারী ও ২৩ জন পুরুষসহ ২৫ সদস্য কে নেয়া হয়। এতে অনেকে সংস্কৃতির সাথে জড়িত না থাকলেও স্বামী-স্ত্রী, একই পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, স্কুল-কলেজের শিক্ষক কে অর্থের বিনিময়ে ও চেনামুখে সদস্য করা হয়েছে। এতে অনেক আবেদনকারী অবাক হয়েছেন এবং সংগঠনের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন।

সংগঠনের ভোটের সময় টাকার ছড়াছড়ি ও উপহারের ছড়াছড়ি চলে। এতে করে প্রকৃত ব্যক্তি নির্বাচিত না হয়ে যে পদের জন্য যোগ্য নয় সে নির্বাচিত হয়ে থাকে। এ সংগঠনে কয়েকজন সদস্য রয়েছে যারা ঢাকায় থাকেন। তাঁরা বিমানে এসে ভোট দিয়ে কর্মস্থলে ফিরে যান। এ সংগঠনের সংগীত বিষয়ক সম্পাদক এম. ওমর ফারুক বলেন, যারা আবেদন করেছেন সবাই যোগ্য ছিলেন। এবার যাদের নেয়া হয়নি আগামীতে নেয়া হবে বলে শান্ত্বনা প্রদান করেন।