শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকে রংপুরের বদরগঞ্জের গোপালপুর ইউনিয়নের নয়পাড়া গ্রামে ঢাকায় নৃশংসভাবে খুন হওয়া আশরাফুল হকের জানাজা ও দাফন ঘিরে এলাকায় গভীর শোক নেমে আসে।

ভোর থেকেই হাজারো মানুষ উপস্থিত হন এবং সকাল সাড়ে আটটার দিকে জানাজা সম্পন্ন হয়। স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) গভীর রাতে আশরাফুলের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। জানাজায় অংশ নিতে দূরদূরান্ত থেকে মুসল্লিরা ছুটে আসেন। জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তাঁর দাফন সম্পন্ন করা হয়।

পরিবারের দাবি, আশরাফুলকে তাঁর বাল্যবন্ধু জরেজুল ইসলাম (জরেজ) নৃশংসভাবে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আশরাফুলের বোন আনজিনা বেগম শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) সকালে ঢাকার শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ইতিমধ্যে জরেজ ও শামীমা নামের এক নারীকেও গ্রেফতার করেছে।

নিহতের স্ত্রী লাকী বেগম জানিয়েছেন, “আমরা সব কিছু দিয়েও চেষ্টা করেছি, কিন্তু নিজের স্বামীকে বাঁচানো গেল না। যিনি আমাদের ছেলেমেয়ের জীবন দেখবেন, তিনি আর নেই। আমার স্বামীর হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।”

আশরাফুলের বাবা আবদুর রশিদ বিলাপ করে বলেন, “জরেজ খুব তাগদা দিয়ে ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে গেছে। জানতাম কিছু হবে, তাহলে নিজে ঢাকায় যেতাম না।” নিহতের মা এছরা খাতুন মূর্ছা যাচ্ছেন এবং স্বজনরা একে অপরকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন।

পরিবার ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানা যায়, আশরাফুল হক ছিলেন একমাত্র ছেলে। তিনি কাঁচামাল ব্যবসা করতেন এবং দেশের বিভিন্ন আড়তে কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। তিনি মানবিক ও নম্র স্বভাবের ছিলেন, ঈদ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানে গরিবদের উপহার দিতেন।

বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, আশরাফুল হকের লাশ তার নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। মামলায় প্রধান আসামি হিসেবে জরেজ ও শামীমাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১১ নভেম্বর মালয়েশিয়া ফেরত বন্ধু জরেজুল ইসলামের সঙ্গে আশরাফুল ঢাকায় যান। এরপর বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের পাশে একটি ড্রাম থেকে তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়।