দখল ও দূষণে বিপন্ন নদ-নদী
বিশেষ প্রতিনিধি

বাংলাদেশ একসময় নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, তিস্তা, করতোয়া, কুমার, আড়িয়াল খাঁসহ হাজার হাজার নদ-নদী দেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রাণনালী হিসেবে কাজ করত। নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠত শহর, বন্দর, গ্রাম, হাট-বাজার, জেলেপাড়া। নদী পথে মানুষের যাতায়াত, বাণিজ্য, মাছধরা, জীবন-জীবিকা- সবই নির্ভর করত নদীর প্রবাহের উপর। নদী শুধু পরিবেশ নয়, বাঙালি জীবনের সংস্কৃতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।
তবে বর্তমানে সেই নদীগুলো দখল ও দূষণে বিপন্ন। শহর ও নগরীর নালার পানি, শিল্প বর্জ্য, ট্যানারি, ওষুধ ও ডায়িং কারখানার রাসায়নিক নদীতে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। সবচেয়ে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, যা নদীর বুক ভর্তি করে দিয়েছে। এতে নদী হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক রূপ, নাব্য হ্রাস পাচ্ছে, জলজ প্রাণীর আবাস সংকুচিত হচ্ছে। অনেক নদী মরে যাচ্ছে বা শুকনো খালে পরিণত হচ্ছে।
মাদারীপুরে পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, পালরদী, টরকী ও ময়নাকাটা নদী দখল ও দূষণে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কুমার ও আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে গড়ে উঠেছে শহর। নদীর বুকভর্তি বালু ফেলে দখলদাররা অবৈধ বাড়িঘর, দোকানপাট, করাতকল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। পাঁচ শতাধিক দখলদার নদীকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছে, প্রশাসনের নজরদারি নেই। ময়নাকাটা নদীর বুকজুড়ে ফসলের আবাদ হয়েছে, আর টরকী ও পালরদীও একই অবস্থা।
সিলেটে সুরমা নদী একসময় শহরের লাইফলাইন ছিল। নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের পাইকারি হাট ও মোকাম। আজও তার আওয়াজ আছে, কিন্তু নদী দখল, দূষণ ও ভরাটের কারণে বিপন্ন। নদীর খননে দীর্ঘ সময় ধরে প্রকল্প আছে, তবে কাজ শুরু হয়নি।
কুষ্টিয়ায় পদ্মা-গড়াইয়ের শাখা নদীগুলো অবৈধ দখল, পলি জমা ও সংস্কারহীনতায় মৃতপ্রায় খালে পরিণত হয়েছে। নাটোরে নারদ, বারনই, আত্রাইসহ ৩২টি নদী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কিছু দখলদার উচ্ছেদ করা হলেও অনেক নদী এখনো দখলমুক্ত হয়নি।
লালমনিরহাটের তিস্তা নদীতে দখলের মহোৎসব চলছে। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে নদীর বুক কেটে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে নদীর বাঁ তীরের চ্যানেল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। খুলনায় রূপসা, ভৈরব, ময়ূর, ডুমুরিয়ার নদীগুলো প্রভাবশালীদের দখলে। নগরীর কাস্টম ঘাট, জেলখানা ঘাট ও নতুন বাজার চর এলাকায় ইটভাটা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পাকা স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। পদ্মা নদীর তীরে রাজশাহীতে দৈনন্দিন গৃহস্থালি বর্জ্য, প্লাস্টিক ও শিল্প বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ৫৯১ অবৈধ দখলদার চিহ্নিত হলেও কার্যকর উচ্ছেদ হয়নি।
উত্তরের পঞ্চগড়, নওগাঁ, দিনাজপুরে নদী দখল ও দূষণের ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে অনেক নদী পানি ছাড়াই শুকনো খাল হয়ে যাচ্ছে। বগুড়ার করতোয়া নদী দখল, ভরাট ও প্রবাহ পরিবর্তনের কারণে মৃতপ্রায়। পটুয়াখালী, কিশোরগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- প্রায় প্রতিটি জেলায় নদী দখল ও দূষণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। নদীর বুকজুড়ে চাষাবাদ চলছে, কোথাও অবৈধ বসতবাড়ি, দোকানপাট, ইটভাটা নির্মিত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী শিল্প বর্জ্যে দূষিত হয়ে গেছে। তুরাগ, চিলাই নদীও ধীরে ধীরে মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ মনির হোসাইন জানান, ‘অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। নদী পুনঃখনন ও স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনলেই প্রানোচ্ছল নদী বাঁচানো সম্ভব। নদী দখলমুক্ত হলে মাছ, পরিবেশ এবং মানুষের জীবন ফিরবে।’
নদী শুধু পরিবেশ নয়, মানুষের সভ্যতা ও ইতিহাসও বহন করে। মেসোপটেমীয় সভ্যতা দজলা নদীর তীরে, মিশরীয় সভ্যতা নীল নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। বাংলাদেশেও নদী একসময় জীবনপ্রবাহের প্রধান মাধ্যম ছিল। নদী রক্ষা, পুনঃখনন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ না করলে একদিন এই নদীগুলো শুধু ইতিহাসের পাতায় থাকবে। তাই নদী পুনরুদ্ধার এবং দূষণমুক্ত রাখা আজ দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

বাংলাদেশ একসময় নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, তিস্তা, করতোয়া, কুমার, আড়িয়াল খাঁসহ হাজার হাজার নদ-নদী দেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রাণনালী হিসেবে কাজ করত। নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠত শহর, বন্দর, গ্রাম, হাট-বাজার, জেলেপাড়া। নদী পথে মানুষের যাতায়াত, বাণিজ্য, মাছধরা, জীবন-জীবিকা- সবই নির্ভর করত নদীর প্রবাহের উপর। নদী শুধু পরিবেশ নয়, বাঙালি জীবনের সংস্কৃতিরও অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল।
তবে বর্তমানে সেই নদীগুলো দখল ও দূষণে বিপন্ন। শহর ও নগরীর নালার পানি, শিল্প বর্জ্য, ট্যানারি, ওষুধ ও ডায়িং কারখানার রাসায়নিক নদীতে ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে। সবচেয়ে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক, যা নদীর বুক ভর্তি করে দিয়েছে। এতে নদী হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক রূপ, নাব্য হ্রাস পাচ্ছে, জলজ প্রাণীর আবাস সংকুচিত হচ্ছে। অনেক নদী মরে যাচ্ছে বা শুকনো খালে পরিণত হচ্ছে।
মাদারীপুরে পদ্মা, আড়িয়াল খাঁ, কুমার, পালরদী, টরকী ও ময়নাকাটা নদী দখল ও দূষণে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কুমার ও আড়িয়াল খাঁ নদীর তীরে গড়ে উঠেছে শহর। নদীর বুকভর্তি বালু ফেলে দখলদাররা অবৈধ বাড়িঘর, দোকানপাট, করাতকল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করেছে। পাঁচ শতাধিক দখলদার নদীকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করছে, প্রশাসনের নজরদারি নেই। ময়নাকাটা নদীর বুকজুড়ে ফসলের আবাদ হয়েছে, আর টরকী ও পালরদীও একই অবস্থা।
সিলেটে সুরমা নদী একসময় শহরের লাইফলাইন ছিল। নদীর তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছিল ব্যবসা-বাণিজ্যের পাইকারি হাট ও মোকাম। আজও তার আওয়াজ আছে, কিন্তু নদী দখল, দূষণ ও ভরাটের কারণে বিপন্ন। নদীর খননে দীর্ঘ সময় ধরে প্রকল্প আছে, তবে কাজ শুরু হয়নি।
কুষ্টিয়ায় পদ্মা-গড়াইয়ের শাখা নদীগুলো অবৈধ দখল, পলি জমা ও সংস্কারহীনতায় মৃতপ্রায় খালে পরিণত হয়েছে। নাটোরে নারদ, বারনই, আত্রাইসহ ৩২টি নদী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কিছু দখলদার উচ্ছেদ করা হলেও অনেক নদী এখনো দখলমুক্ত হয়নি।
লালমনিরহাটের তিস্তা নদীতে দখলের মহোৎসব চলছে। সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের নামে নদীর বুক কেটে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। এর ফলে নদীর বাঁ তীরের চ্যানেল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। খুলনায় রূপসা, ভৈরব, ময়ূর, ডুমুরিয়ার নদীগুলো প্রভাবশালীদের দখলে। নগরীর কাস্টম ঘাট, জেলখানা ঘাট ও নতুন বাজার চর এলাকায় ইটভাটা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পাকা স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। পদ্মা নদীর তীরে রাজশাহীতে দৈনন্দিন গৃহস্থালি বর্জ্য, প্লাস্টিক ও শিল্প বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ৫৯১ অবৈধ দখলদার চিহ্নিত হলেও কার্যকর উচ্ছেদ হয়নি।
উত্তরের পঞ্চগড়, নওগাঁ, দিনাজপুরে নদী দখল ও দূষণের ফলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে অনেক নদী পানি ছাড়াই শুকনো খাল হয়ে যাচ্ছে। বগুড়ার করতোয়া নদী দখল, ভরাট ও প্রবাহ পরিবর্তনের কারণে মৃতপ্রায়। পটুয়াখালী, কিশোরগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, মেহেরপুর, সাতক্ষীরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া- প্রায় প্রতিটি জেলায় নদী দখল ও দূষণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। নদীর বুকজুড়ে চাষাবাদ চলছে, কোথাও অবৈধ বসতবাড়ি, দোকানপাট, ইটভাটা নির্মিত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী শিল্প বর্জ্যে দূষিত হয়ে গেছে। তুরাগ, চিলাই নদীও ধীরে ধীরে মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ মনির হোসাইন জানান, ‘অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে দ্রুত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন। নদী পুনঃখনন ও স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনলেই প্রানোচ্ছল নদী বাঁচানো সম্ভব। নদী দখলমুক্ত হলে মাছ, পরিবেশ এবং মানুষের জীবন ফিরবে।’
নদী শুধু পরিবেশ নয়, মানুষের সভ্যতা ও ইতিহাসও বহন করে। মেসোপটেমীয় সভ্যতা দজলা নদীর তীরে, মিশরীয় সভ্যতা নীল নদীর তীরে গড়ে উঠেছিল। বাংলাদেশেও নদী একসময় জীবনপ্রবাহের প্রধান মাধ্যম ছিল। নদী রক্ষা, পুনঃখনন ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ না করলে একদিন এই নদীগুলো শুধু ইতিহাসের পাতায় থাকবে। তাই নদী পুনরুদ্ধার এবং দূষণমুক্ত রাখা আজ দেশের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

নীলফামারীতে অবস্থিত নীলসাগরের সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ শুরু হয়েছে
৫ ঘণ্টা আগে
১১ অক্টোবর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নাজিরের মাধ্যমে ডিক্রিদার উপস্থিতিতে ৪ শতাংশ নালিশীয় জমির ওপর ৩টি টিনের চালাঘর উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল
৫ ঘণ্টা আগে
সাতক্ষীরার কলারোয়া সরকারী হাইস্কুলে ২-৪ নভেম্বর তাফসির মাহফিল আয়োজনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে
৫ ঘণ্টা আগে
ওই দুই শিশু পরিবারের অজান্তে খেলা করতে করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর পাশে নবগঙ্গা নদীতে গোসল করতে নেমে ডুবে যায়
৫ ঘণ্টা আগেনীলফামারীতে অবস্থিত নীলসাগরের সৌন্দর্য বর্ধণের কাজ শুরু হয়েছে
১১ অক্টোবর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নাজিরের মাধ্যমে ডিক্রিদার উপস্থিতিতে ৪ শতাংশ নালিশীয় জমির ওপর ৩টি টিনের চালাঘর উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল
সাতক্ষীরার কলারোয়া সরকারী হাইস্কুলে ২-৪ নভেম্বর তাফসির মাহফিল আয়োজনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে
ওই দুই শিশু পরিবারের অজান্তে খেলা করতে করতে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর পাশে নবগঙ্গা নদীতে গোসল করতে নেমে ডুবে যায়