মায়ার বাড়িতে মাদক আনতো পুলিশ

প্রতিনিধি
নরসিংদী
Thumbnail image

পুলিশের গাড়িতে করে পুলিশই মাদক পৌঁছে দেয় মায়ার বাড়িতে।মাল পৌছার সাথে সাথেই পুলিশ পায় নগদ টাকা। সাব ইন্সপেক্টর থেকে শুরু করে পুলিশের প্রায় শতাধিক সদস্যের সাথে মায়ার সখ্যতা রয়েছে। মায়া সাধারণত পুলিশের কাছ থেকে ইয়াবা,গাঁজা ও ফেন্সিডিল ক্রয় করে থাকেন।পুলিশের অনেক বড় কর্তার সাথে মায়ার সখ্যতা রয়েছে। সময় পেলেই আরাম আয়েশ করতে মায়ার বাড়িতে উঠেন। পুলিশ যত কেনেন এই মায়া। মায়া কখনো কোথাও গিয়ে মাদক ক্রয় করেন না। মায়ার মায়াভরা চোখের নেশায় পড়ে মায়ার হাতেই পুলিশ পৌছে দেয় মাদক। মায়া একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন, জেল খেটেছেন। তবে পুলিশ উদ্ধার দেখিয়েছে অল্পস্বল্প মাদক। সে কারণে বেশি দিন জেল খাটতে হয়নি তাকে। এত ঘটনার পরও নরসিংদীর মাধবদীর এই মাদক সম্রাজ্ঞীকে পুলিশ গ্রেফতার করছে না। মায়াকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনলেই পুলিশের মাদক ব্যবসার সকল গোপনীয়তা বের হয়ে যাবে। সে কারণে মায়াকে ধরতে যত অনিহা পুলিশের। পুলিশের সাথে সখ্যতা থাকায় মায়ার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী। তার বিরুদ্ধে এলাকার কেউ মুখ খুললেই বাড়িতে পুলিশ আসে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, সন্ধ্যা হলেই দামি দামি গাড়ি আসে মায়ার বাড়িতে। কারো সাহস নেই তাদেরকে কোন কিছু জিজ্ঞাসা করার। অহরহ পুলিশের গাড়ি আসে এই বাড়িতে । সে কারণে এদিকে কেউ তাকায় না। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে মায়াকে আর এই বাড়িতে দেখা যায় না। রাতের আঁধারে পালিয়ে গেছে মায়া। তবে সে এখন কোথায় আছে কেউ জানে না।

মাধবদী থানার সাবেক এক ওসি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মাধবদীতে ঝামেলা হলেই মায়া পার্শ্ববতী থানা আড়াই হাজারে চলে যান। সেখানে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন তিনি। এছাড়াও ঢাকার আফতাব নগরের তার একটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

মায়া বেগম বাংলাদেশ তাঁতী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলীর আপন ছোটভাই মৃত মোহাম্মদ আলীর মেয়ে । তিনি মনোহরপুর এলাকার মাদক ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম হৃদয়ের স্ত্রী। হৃদয়ের আগে মায়ার আরো দুটি বিয়ে হয়েছিল। হৃদয়কে নিয়ে এ পর্যন্ত তিনি তিন তিনটি বিয়ে করেছেন।আগের স্বামীরাও মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। সর্বশেষ হৃদয় নামে যাকে বিয়ে করেছেন এ হৃদয় তার চাইতে বয়সে ১০ বছরের ছোট। তিনিও একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। ইঞ্জিনিয়ার শওকত আলীর ভাতিজি হওয়ার সুবাদে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আওয়ামী লীগের পুরোটা সময় ধরে জেলায় একাই এই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করেছেন মায়া। ৫ আগস্টের পর পরিস্থিতি পাল্টে গেলে তার বাড়িতে ছাত্রদলের সাবেক এক নেতাকে ঘন ঘন আসতে দেখা যায়। এলাকাবাসীর ধারণা এই ছাত্রনেতাও মায়ার সাথে মাদক ব্যবসায় জড়িয়েছেন।

নরসিংদী সদর ও মাধবদী থানা সুত্রে জানা যায়, মায়ার বিরদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে জেলার বিভিন্ন থানায় ডজনাধিক মামলা রয়েছে। তার মাদক ব্যবসায় কেউ বাঁধা সৃষ্টি করলে সে নানা অপবাদ দিয়ে হয়রানি করে। পুলিশের একটি সুত্র জানায়, মায়াকে আটক করার জন্য হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। তবে তার কোন হদিস পাচ্ছে না। একাধিক সুত্র থেকে জানা যায়, নরসিংদীতে আগে চাকুরী করে গেছে এমন একাধিক পরিদর্শকের সাথে মায়ায় গভীর সম্পর্ক রয়েছে। ডিবির সদ্য বিদায়ী পরিদর্শক এস এম কামরুজ্জামানের সাথেও রয়েছে তার গভীর সম্পর্ক। তবে মায়ার সাথে সম্পর্ক থাকার কথা অস্বীকার করেছেন কামরুজ্জামান।

এদিকে জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, মায়াকে আমাদের লাগবেই। যেখানেই থাকুক তাকে পুলিশের হাতে ধরা দিতেই হবে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

মাদক নিয়ে আরও পড়ুন

ঝিনাইদহের মহেশপুরে চার বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার আদমপুর আবাসন প্রকল্পে এ ঘটনা ঘটে।

২ দিন আগে

ধানমন্ডিতে ঝটিকা মিছিল পরিকল্পনাকারী সজীবুল ইসলাম হৃদয়সহ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের আরও আট নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে ডিবি

২ দিন আগে

আটক ফারদিন মিয়ার বরাতে ডিবি পরিদর্শক ছগির হোসেন জানান, নিহত বাবু ও আটক ফারদিন সপ্তাহ খানিক আগে কক্সবাজারে ঘুরতে যান। সেখান থেকে তারা মোটরসাইকেলযোগে সড়কপথে ফেরার পথে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার চালান বহন করছিল

২ দিন আগে

কোপা মাসুদ ও তার সহযোগীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ ছিল সাধারণ মানুষ। প্রকাশ্য অস্ত্রের মহড়া দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রাখতেন তারা

২ দিন আগে