স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হাবিবের যত অনিয়ম

আপডেট : ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৯: ৪২
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে আবারও আলোচনায় এসেছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. হাবিবুর রহমানের নাম। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একাধিক মামলা রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তারপরও একজন চার্জশীটভুক্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্টে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আবারও এমডি করা হয়।

ইউনিয়ন ব্যাংকে ২০২১-২২ সালে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) ও বিনিয়োগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ঋণ অনুমোদনের দায়ে ফেঁসেছেন স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাবিবুর রহমান। ইউনিয়ন ব্যাংকের ঋণপ্রস্তাবের অফিস নোটে তখন হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষর দেখা গিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক পরিদর্শন প্রতিবেদনে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাবিবুর রহমান ইউনিয়ন ব্যাংকে ছিলেন এবং তিনি সরাসরি জড়িত ছিলেন এস আলম গ্রুপের পক্ষে ২৬০৭ কোটি টাকার অনিয়মিত ঋণ অনুমোদনে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন বিভাগ–৭ এর রিপোর্ট বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রিত প্রায় ৩০টি নামসর্বস্ব’ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পৃথকভাবে ২৩ কোটি টাকা থেকে ১৪৮ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ অনুমোদন করা হয়। এসব ঋণের মোট পরিমাণ দাঁড়ায় ২ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। এখন ওই ঋণগুলো খেলাপি হয়ে গেছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই অস্তিত্বহীন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে।

এক বিবরণে বলা হয়েছে, ২০০০ সালে তিনি মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ক্রেডিট বিভাগে থাকাকালে প্যাট্রিক ফ্যাশনস’ নামের এক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ গোপন করে নতুনভাবে আট কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনের জন্য মিথ্যা তথ্য দেয়ার অভিযোগ ওঠে। অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, যোগসাজশ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মামলা দায়ের করা হয় (মামলা নং ২৭২/২২)।

২০২৪ সালে ওই মামলায় চার্জশিট দাখিলের পর হাইকোর্ট (রিট নং ৫২১৭/২০২৪) বাংলাদেশ ব্যাংককে ৬০ দিনের মধ্যে হাবিবুর রহমান সম্পর্কে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। এরপর তিনি স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যে তিনি পুনরায় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্বে ফিরে আসেন।

অভিযোগ আছে, হাবিবুর রহমান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে ইউনিয়ন ব্যাংকের কয়েকজন বিতর্কিত কর্মকর্তা পুনর্নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান মানবসম্পদ প্রধান মনসুর আহমেদ ও প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো. সালাহ উদ্দিন। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে তাদের নামও এস আলম গ্রুপের অনুকূলে অনুমোদিত ঋণের তালিকায় আছে।

দুদক সম্প্রতি হাবিবুর, মনসুর ও সালাহ উদ্দিনকে ইউনিয়ন ব্যাংকের অর্থপাচার সংক্রান্ত তদন্তে তলব করেছে বলে জানা গেছে।

আইনগত ও নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিভঙ্গের অভিযোগও রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিআরপিডি সার্কুলার নং ৩ ও ৪১ অনুযায়ী ব্যাংকের সিএফও পদে থাকা জরুরি শর্ত হলো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হওয়া। বর্তমান সিএফও সালাহ উদ্দিন এই যোগ্যতা ছাড়া নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন—এটি সার্কুলার লঙ্ঘন।

একইভাবে প্রধান আইন কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামানও সুপ্রিম কোর্টে তিন বছরের অভিজ্ঞতা ও বার কাউন্সিলের সদস্যপদ ছাড়া নিয়োগ পেয়েছেন। এটি নিয়োগনীতির সরাসরি লঙ্ঘন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

দুর্নীতি নিয়ে আরও পড়ুন

চট্টগ্রামের রাউজানে র‍্যাবের অভিযানে এক বিএনপি নেতার বাড়ি থেকে বন্দুকসহ বড় পরিমাণ ধারালো অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে

৬ ঘণ্টা আগে

মা বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে

৬ ঘণ্টা আগে

করিম শরীফ বাহিনীর অস্ত্র সরবরাহকারী ওই ব্যাক্তি হারবাড়িয়া সংলগ্ন নন্দবালা খাল এলাকা দিয়ে সুন্দরবনে প্রবেশ করবে এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযানে নামে কোস্টগার্ড

১০ ঘণ্টা আগে

সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১,৪৩২ জনকে গ্রেফতার করেছে

১ দিন আগে