পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়া যাবে না : প্রধান উপদেষ্টা

প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২৫, ১৫: ৪৮
Thumbnail image
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, 'আমরা যুদ্ধাবস্থায় আছি। এই বাস্তবতা মনে রেখেই পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ষড়যন্ত্রকারীরা এই সুযোগে শান্তি বিনষ্টের চেষ্টা করবে, তাই পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে।' আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মাঠপর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যত টিম আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিম হলো পুলিশ।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আমরা ইতোমধ্যে সাত মাস পার করে এসেছি। আমরা বলছি, ডিসেম্বরে নির্বাচন হবে। কাজেই কী কী সংস্কার দরকার, করে ফেলতে হবে।

নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ষড়যন্ত্রও ততই তীব্র হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পুলিশকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।

পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারাও সংস্কারের কথা বলেছেন। কারও জন্য অপেক্ষা করে কোনো ফায়দা হবে না। কাজটা করতে হবে এবং সেটা আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

ড. ইউনূস বলেন, দেশ বদলাতে হলে একক নির্দেশে নয়, বরং সবাইকে নিয়ে এক একটি টিম হয়ে কাজ করতে হবে। সরকার যা কিছুই করতে চায়, শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাত দিয়েই করতে হয়। তারা সব করে দেয় না, তারা পরিবেশটা সৃষ্টি করে। যে পরিবেশটা না থাকলে কোনো কাজই আর হয় না।

তিনি বলেন, পুলিশের কথা প্রসঙ্গে বারবার আমরা দুটো শব্দ বলছি- আইনশৃঙ্খলা। পুলিশের হাতেই এটাকে এক্সিকিউট করতে হবে। এই পরিবেশ সৃষ্টি করা না গেলে সরকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, মানুষের অধিকার, নাগরিকের অধিকার- কিছুই থাকে না। পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়া যাবে না। তারাই সম্মুখসারির মানুষ। তারা ক্ষেত্র প্রস্তুত করলেই বাকি জিনিসগুলো হয়। আইনশৃঙ্খলা না থাকলে যত বড় বড় চিন্তাই হোক, যত টাকাই থাকুক, কোনো কাজে আসবে না

জুলাই আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, এই গণঅভ্যুত্থানের ফলে আমরা মস্ত বড় সুযোগ পেয়েছি। এটাকে যেন হারিয়ে না ফেলি। আমরাও সেটা চেষ্টা করব, ভবিষ্যতে যারা আসবে তারাও আশা করি চেষ্টা করবে। পথটা যেন আমরা সৃষ্টি করে দেই। এই পথ সৃষ্টির ক্ষেত্রে পুলিশ বাহিনী একটা মস্ত বড় ভূমিকা পালন করতে পারে।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে পুলিশ বাহিনীর মুশকিল হলো, ওই অন্ধকার যুগে তারা একটিভ পার্টিসিপেন্ট ছিল- নিজের ইচ্ছায় না, সরকারি কাজ করতে গিয়ে হয়েছে। কাজেই নতুন বাংলাদেশে পুলিশকে দেখিয়ে দিতে হবে- আমরা মানুষ খারাপ না, খারাপ মানুষের পাল্লায় পড়েছিলাম, সেখান থেকে বের হয়ে এসেছি। দেখো আমরা কী করতে পারি। কাজের মাধ্যমে আমরা দেখাব যে, আমাদের হাত দিয়েই এই নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে। আমরা বড় রকম ভূমিকা পালন করব। কারণ আমাদের কাছেই রয়েছে আইনশৃঙ্খলা- এটা প্রতিষ্ঠা করব।

ড. ইউনূস আরও বলেন, পুলিশ হবে বন্ধু। কারণ, আমি আইনের পক্ষের মানুষ। আমি আইন প্রতিষ্ঠা করার মানুষ। আইন হলো আমাদের সবার আশ্রয়। পুলিশ হলো আশ্রয়দাতা। আমরা এই ইমেজটা যদি প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, মানুষ অতীতের সব কথা ভুলে যাবে।

সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি ও পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ ও রাজশাহী পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সরকার নিয়ে আরও পড়ুন

ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার মাধ্যমে কীভাবে জীবন বদলে দেয়া সম্ভব সেই গল্প কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনে শোনালেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

১ ঘণ্টা আগে

কাতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে ৭২৫ জন সেনাসদস্য নেবে। আগামী দুই মাসের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এই সেনাসদস্য নেয়া শুরু হবে।

২ ঘণ্টা আগে

আওয়ামী সরকার আমলের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে এবারে ‘রেড নোটিশ’ জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।

৩ ঘণ্টা আগে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বলেছেন, বাংলাদেশ এখন এমন এক অবস্থায় দাঁড়িয়ে, যেখানে একটি নতুন সামাজিক চুক্তি করার সুযোগ এসেছে।

৩ ঘণ্টা আগে