ফিরে দেখা ১৫ জুলাই

হলগুলো ছাত্রলীগমুক্ত হলো রক্ত দিয়ে

প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

আজ মঙ্গলবার ১৫ জুলাই। এক বছর আগে এই দিনে, একদিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের ভয়াবহ হামলা, আর অন্যদিকে মন্ত্রীদের উস্কানিমূলক বক্তব্য—সব মিলিয়ে “জুলাই স্মৃতি ক্যালেন্ডার”-এ ১৫ তারিখটি সেই দিন, যেদিন থেকে ছাত্রদের আন্দোলন রূপ নিতে থাকে জনতার গণআন্দোলনে।

রক্তের দাগ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটপাত আর দেয়ালে যে ইতিহাস লেখা হয়, তার আজ ১ বছর। ২৪ এর এদিনে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয় কয়েকশো' শিক্ষার্থী। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় হলপাড়া, ভিসি চত্বরসহ আশপাশের এলাকা। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসে কেউ কেউ। তবে, সেদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে ছাত্রলীগ মুক্ত করা হয়।

দিগ্বিদিক ছোটাছুটি, রক্ত, অসহায়ত্ব আর অপমান। ১৫ জুলাই ২০২৪। শতবর্ষী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যা আগে প্রত্যক্ষ করেনি কখনও।

সেদিন বিকেলে ভিসি চত্বরে লাল বাস নয় যেন অপেক্ষায় ছিল জলাতঙ্ক। ছোপ ছোপ রক্তের দাগ দিয়ে ফুটপাত আর দেয়ালে লিখা হয় নয়া ইতিহাস।

রাজাকার ট্যাগিংয়ের উত্তরে আগের রাতেই ফুঁসে ওঠা বিক্ষোভে, কেঁপে ওঠে স্বৈরশাসকের মসনদ। উত্তাপ ছড়ানো রাত শেষে তাই সকালটা ছিল থমথমে।

দুপুরে ডাকা দুপক্ষের কর্মসূচি ঘিরে হঠাৎই বাঁধে হট্টগোল। খবর আসে, হলগুলোতে আটকে রাখা হয় আন্দোলনের পক্ষের শিক্ষার্থীদের। তাদের ছাড়াতে গিয়ে প্রথম উত্তেজনা ছড়ায় হলপাড়ায়।

ইটপাটকেল নিক্ষেপ আর লাঠির লড়াই নৃশংসতায় রূপ নেয় তৎকালীন ছাত্রলীগের নগ্ন হামলায়। ভিসি চত্বর, মল চত্বর ও হলপাড়ায় আহত হয় শতাধিক শিক্ষার্থী। সেদিন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসেন সলিমুল্লাহ হলের রায়হান।

রায়হান বলেন, ‘আমার মাথায় ৯টি সেলাই লেগেছে। মাথার ভিতরে ভেইন কেটে গিয়েছিল সেখানে সেলাই লেগেছে। বাকি জায়গায় মাথা থেলে গিয়েছিল সেখানে আলাদা আলাদা তিনটি ব্যান্ডেজ করে দিয়েছিল। ছাত্রলীগ নারীদের প্রতিও ন্যূনতম সংবেদনশীলতা দেখায়নি। নারীদের আমি আসলে রক্ষা করার চেষ্টা করছিলাম। যার জন্য ওরা আমাকে বেশি টার্গেট করে।’

বাদ যায়নি নারী শিক্ষার্থীরাও। নিজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের এমন হামলা নারীর মর্যাদা ও জাগরণের সামনে এক বিশাল প্রশ্নবোধক চিহ্ন হয়ে আছে এখনও। ছাত্রলীগের নৃশংসতা থেকে বেঁচে ফেরা সানজিদা ত্বন্বীর চোখের নীচের ক্ষত যেন মোছার নয়।

সানজিদা ত্বন্বী বলেন, ‘ওরা আমাদের লক্ষ্য করে ইট মারছিল। একটা ইট এসে আমার মুখের ওপর পড়ে। যেটা আসলে আমার চোখের নিচে লাগে এবং আমার চশমার একটা কাঁচ ভেঙে যায়।’

আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে পুনরায় হামলার শিকার হয়। এমন নৃশংসতার খবর ছড়িয়ে পড়লে হলগুলোতে উঠে নব জোয়ার। ছাত্রলীগের অনেকেই পদত্যাগ করে যোগ দেন আন্দোলনকারীদের সাথে।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাতেও হাসপাতালে রোগিদের ওপর হামলা করা হয় না। আমরা দেখেছি যারা আহত হয়েছিল তাদের কেউ হাসপাতালে গিয়ে হামলা করা হয়েছে।’

সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে রাজনৈতিক কর্মী। নয়া বন্দোবস্তে এমন পুনরাবৃত্তি চায় না কেউই।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

অন্যান্য দল নিয়ে আরও পড়ুন

মতামতের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় থেকে প্রার্থীর নাম ঘোষণা

২ ঘণ্টা আগে

রণক্ষেত্রে পরিণত হয় হলপাড়া, ভিসি চত্বরসহ আশপাশের এলাকা। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণ থেকে ফিরে আসে কেউ কেউ। তবে, সেদিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোকে ছাত্রলীগ মুক্ত করা হয়।

৭ ঘণ্টা আগে

সাংবাদিকের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা

৯ ঘণ্টা আগে