দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলায় শ্রমিক নিয়ন্ত্রিত সংগঠন মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘ (রেজি: ২১৪৩) কে কেন্দ্র করে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব তীব্র আকার ধারণ করেছে। মঙ্গলবার সংগঠনের নেতৃত্ব নিয়ে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। যার জেরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বন্দর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রেক্ষিতে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়েছে। বন্দর বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান এক প্রেস নোটে জানান, মোংলা বন্দর শ্রমিক কর্মচারী সংঘ নামক সংগঠনটি যদিও নামমাত্রে বন্দর শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব করে, তবে এটি মূলত স্টিভেডর নিয়ন্ত্রিত শ্রমিক দ্বারা পরিচালিত একটি সংগঠন। বন্দরে আগত প্রতিটি বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে পণ্য খালাস-বোঝাইয়ের কাজ এ সমস্ত শ্রমিকরা করে থাকেন, যাদের নিয়োগ, পরিচালনা ও পাওনা পরিশোধ করে থাকেন স্টিভেডর প্রতিষ্ঠানসমূহ। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সরাসরি কোনো শ্রমিক নিয়োগ বা পরিচালনায় সম্পৃক্ত নয়।

তিনি আরো বলেন, “মোংলা বন্দরে প্রতিবছর প্রায় এক হাজার বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আসে। এই বন্দরের মাধ্যমে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে—বিশেষত ইপিজেড, শিল্পকারখানা ও সরবরাহ চেইনে। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্যিক স্থিতিশীলতার পেছনে মোংলা বন্দরের একটি বিশাল অবদান রয়েছে।”

উপপরিচালক মাকরুজ্জামান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, “শ্রমিকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়েও মোংলা বন্দরের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে। যার পরিণতিতে বন্দরে জাহাজ আগমন কমে গেলে হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে এবং দেশের অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।”

বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভেদ না ছড়িয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে বন্দরের উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে। প্রেস নোটে উল্লেখ করা হয়, “দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে মোংলা বন্দরকে ঘিরে এই ধরনের নেতিবাচক প্রচারণা ও অন্তকোন্দল থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”

প্রসঙ্গত, সোমবার সংঘর্ষের ঘটনার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোংলা থানা পুলিশ ও বন্দর সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বন্দর চত্বরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।