জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাগেরহাটের চিংড়ি চাষীদের স্বপ্নভঙ্গ
অমিত পাল
একসময় বাগেরহাটের যে চিংড়ি ঘেরে জাল ফেললে উঠে আসতো কাড়ি কাড়ি ‘সাদা সোনা’, এখন সেখানে শুধুই হাহাকার। ক্রমাগত লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন আর ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ধ্বংসের পথে হাঁটছে কোটি কোটি টাকার চিংড়ি খাত। কমেছে বাগদা চিংড়ির উৎপাদন, বেড়েছে লোকসান। অধিকাংশ চাষীরা বলছেন গত বছরের ভাইরাসের ক্ষতিই তারা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
জেলার মোংলা, রামপাল, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ মিলিয়ে উপকূলীয় উপজেলায় অন্তত লক্ষাধিক বাগদা চিংড়ির ঘের রয়েছে। সমুদ্র উপকূলবর্তী হওয়ায় লোনা পানিতে এসব অঞ্চল প্লাবিত হয়। বাগদা চিংড়ি লোনা পানির অর্থকরী ফসল। তাই এক সময়ে এই এই লোনা পানিতেই চাষ করা হতো বাগদা চিংড়ির। প্রচুর ফলনের কারণে আয় হতো কোটি কোটি টাকা। এ কারণেই এই এলাকার মৎস্য চাষীরা চিংড়ি চাষে ঝুঁকতে শুরু করে।
কিন্তু একটু ঘুরে ঝুঁকতে গত ১০ বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যেতে থাকে চাষীদের স্বপ্ন। চিংড়ি ঘেরে দফায় দফায় ভাইরাসের সংক্রমণ, লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াতে ধ্বংস হতে শুরু করে বাগদা চিংড়ি খাত। এক সময়ের অর্থকরী ফসল হিসাবে খ্যাত বাগদা চিংড়ি চাষীদের চোখ জুড়ে নেমে আসে অন্ধকারের কালো ছায়া।
স্থানীয় বাগদা চিংড়ি চাষিরা বলছেন, এখন আর আগের মতো চাষ হচ্ছে না। অনেকেই চাষ ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় অনেকেই নিদারুণ দুরবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
এক সময়কার সফল চাষি রামপাল উপজেলার মোঃ সৈয়দ আলী বলেন, "আমার ঘেরটি ১৫ বিঘার। প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকার পোনা ছেড়েছি। গোন (পূর্ণিমা) মাছ ধরতে গিয়ে একটা মাছও পাইনি। আসল টাকাই উঠানো কষ্টকর সেখানে লাভের চিন্তা কি করে করব"।
মোংলা উপজেলার অপর এক চিংড়ি চাষি মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম বলেন, প্রথমে ঘেরে চিংড়ি পোনা ছেড়েছি, কিন্তু সেই পোনা সব মরে গেছে। তিন-চার জায়গা থেকে লোন করে আবারও মাছ ছেড়েছি। ঘেরের সব মাছ ভাইরাসে মরে গেছে। বউয়ের সোনা দানা বিক্রি করে এখন লোনের কিস্তি দিতে হচ্ছে।
মোড়েলগঞ্জের বহরবুনিয়া গ্রামের ইকলাস হাওলাদার বলেন,ঘেরে বাগদা চিংড়ির পোনা ছাড়লে বারবার ভাইরাসে বাগদা মরে যায়। আমাদের এখানের পানিতে লবণ অনেক বেশি তাই সাদামাছ বিশেষ করে রুই কাতলা এগুলা হয় না। বাধ্য হয়েই লস স্বীকার করে আবারও বাগদা চিংড়ি ছাড়তে হয়।
চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র বাগেরহাটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম তানবিরুল হক বলেন, দেশের মোট উৎপাদনের সিংহভাগই বাগেরহাট সাতক্ষীরা এই জোনে উৎপাদন হয়। উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যাটি হচ্ছে চিংড়িতে রোগাক্রান্ত হওয়া। সব ক্ষেত্রেই যে চিংড়ি ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যায় সেটি কিন্তু নয়। এর পেছনে আমি গবেষণাতে যেটি দেখেছি সেটি হচ্ছে মিস ম্যানেজমেন্ট বা ব্যবস্থাপনার অভাব। চিংড়ির চাষ ব্যবস্থাপনা কীভাবে উন্নত করা যায়, চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায় এসব নিয়ে বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধারে কাজ করছে। আমাদের বেশ কয়েকটি গবেষণা কাজ চলমান রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে কাটা শ্যাওলার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গবেষণা করে চিংড়ির উৎপাদন বাড়ানো নিয়েও আমরা সফলতার ইঙ্গিত পাচ্ছি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, গলদা চিংড়ি উৎপাদনে বাগেরহাট জেলা প্রথম। আমরা ১৯৭১৬ মেট্রিক টন গলদা উৎপাদন করি, জাতীয়ভাবে এটা ৩৪ শতাংশ। প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন বাগদা বাগেরহাট থেকে উৎপাদন হয়। যে-সব চিংড়ির চাষি আছে তাদের ঘেরগুলোকে উন্নয়নের জন্য আমরা ক্লাস্টার ভাবে কাজ করেছি। চাষীদের দক্ষতা বাড়াতে উন্নত প্রশিক্ষণ, ঘেরের বেড়িবাধ প্রশস্ত করণ, বিনামূল্যে উপকরণ দেওয়া সহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি। তাদের দেখাদেখি যাতে আশপাশের চাষিরা ও এতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে আমরা মাঠপর্যায়ে সেটির উন্নয়নে কাজ করছি।
চিংড়ি উৎপাদনে দেশের ২৭ শতাংশ আসে বাগেরহাট থেকে। এই খাতে সংকট তৈরি হলে সেটির প্রভাব পড়ে জাতীয় রাজস্ব ও অর্থনীতিতেও। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা, আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার এবং নিয়মিত মনিটরিং নিশ্চিত করতে না পারলে চিংড়ি চাষ আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় চাষীরা।
একসময় বাগেরহাটের যে চিংড়ি ঘেরে জাল ফেললে উঠে আসতো কাড়ি কাড়ি ‘সাদা সোনা’, এখন সেখানে শুধুই হাহাকার। ক্রমাগত লবণাক্ততা, জলবায়ু পরিবর্তন আর ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ধ্বংসের পথে হাঁটছে কোটি কোটি টাকার চিংড়ি খাত। কমেছে বাগদা চিংড়ির উৎপাদন, বেড়েছে লোকসান। অধিকাংশ চাষীরা বলছেন গত বছরের ভাইরাসের ক্ষতিই তারা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
জেলার মোংলা, রামপাল, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ মিলিয়ে উপকূলীয় উপজেলায় অন্তত লক্ষাধিক বাগদা চিংড়ির ঘের রয়েছে। সমুদ্র উপকূলবর্তী হওয়ায় লোনা পানিতে এসব অঞ্চল প্লাবিত হয়। বাগদা চিংড়ি লোনা পানির অর্থকরী ফসল। তাই এক সময়ে এই এই লোনা পানিতেই চাষ করা হতো বাগদা চিংড়ির। প্রচুর ফলনের কারণে আয় হতো কোটি কোটি টাকা। এ কারণেই এই এলাকার মৎস্য চাষীরা চিংড়ি চাষে ঝুঁকতে শুরু করে।
কিন্তু একটু ঘুরে ঝুঁকতে গত ১০ বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাবে পুড়ে ছাই হয়ে যেতে থাকে চাষীদের স্বপ্ন। চিংড়ি ঘেরে দফায় দফায় ভাইরাসের সংক্রমণ, লবণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াতে ধ্বংস হতে শুরু করে বাগদা চিংড়ি খাত। এক সময়ের অর্থকরী ফসল হিসাবে খ্যাত বাগদা চিংড়ি চাষীদের চোখ জুড়ে নেমে আসে অন্ধকারের কালো ছায়া।
স্থানীয় বাগদা চিংড়ি চাষিরা বলছেন, এখন আর আগের মতো চাষ হচ্ছে না। অনেকেই চাষ ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু বিকল্প কর্মসংস্থান না থাকায় অনেকেই নিদারুণ দুরবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
এক সময়কার সফল চাষি রামপাল উপজেলার মোঃ সৈয়দ আলী বলেন, "আমার ঘেরটি ১৫ বিঘার। প্রায় ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকার পোনা ছেড়েছি। গোন (পূর্ণিমা) মাছ ধরতে গিয়ে একটা মাছও পাইনি। আসল টাকাই উঠানো কষ্টকর সেখানে লাভের চিন্তা কি করে করব"।
মোংলা উপজেলার অপর এক চিংড়ি চাষি মোহাম্মদ দিদারুল ইসলাম বলেন, প্রথমে ঘেরে চিংড়ি পোনা ছেড়েছি, কিন্তু সেই পোনা সব মরে গেছে। তিন-চার জায়গা থেকে লোন করে আবারও মাছ ছেড়েছি। ঘেরের সব মাছ ভাইরাসে মরে গেছে। বউয়ের সোনা দানা বিক্রি করে এখন লোনের কিস্তি দিতে হচ্ছে।
মোড়েলগঞ্জের বহরবুনিয়া গ্রামের ইকলাস হাওলাদার বলেন,ঘেরে বাগদা চিংড়ির পোনা ছাড়লে বারবার ভাইরাসে বাগদা মরে যায়। আমাদের এখানের পানিতে লবণ অনেক বেশি তাই সাদামাছ বিশেষ করে রুই কাতলা এগুলা হয় না। বাধ্য হয়েই লস স্বীকার করে আবারও বাগদা চিংড়ি ছাড়তে হয়।
চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র বাগেরহাটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এ এস এম তানবিরুল হক বলেন, দেশের মোট উৎপাদনের সিংহভাগই বাগেরহাট সাতক্ষীরা এই জোনে উৎপাদন হয়। উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যাটি হচ্ছে চিংড়িতে রোগাক্রান্ত হওয়া। সব ক্ষেত্রেই যে চিংড়ি ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা যায় সেটি কিন্তু নয়। এর পেছনে আমি গবেষণাতে যেটি দেখেছি সেটি হচ্ছে মিস ম্যানেজমেন্ট বা ব্যবস্থাপনার অভাব। চিংড়ির চাষ ব্যবস্থাপনা কীভাবে উন্নত করা যায়, চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায় এসব নিয়ে বাগেরহাট চিংড়ি গবেষণা কেন্দ্র দীর্ঘদিন ধারে কাজ করছে। আমাদের বেশ কয়েকটি গবেষণা কাজ চলমান রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে কাটা শ্যাওলার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গবেষণা করে চিংড়ির উৎপাদন বাড়ানো নিয়েও আমরা সফলতার ইঙ্গিত পাচ্ছি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, গলদা চিংড়ি উৎপাদনে বাগেরহাট জেলা প্রথম। আমরা ১৯৭১৬ মেট্রিক টন গলদা উৎপাদন করি, জাতীয়ভাবে এটা ৩৪ শতাংশ। প্রায় ২১ হাজার মেট্রিক টন বাগদা বাগেরহাট থেকে উৎপাদন হয়। যে-সব চিংড়ির চাষি আছে তাদের ঘেরগুলোকে উন্নয়নের জন্য আমরা ক্লাস্টার ভাবে কাজ করেছি। চাষীদের দক্ষতা বাড়াতে উন্নত প্রশিক্ষণ, ঘেরের বেড়িবাধ প্রশস্ত করণ, বিনামূল্যে উপকরণ দেওয়া সহ নানা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছি। তাদের দেখাদেখি যাতে আশপাশের চাষিরা ও এতে উদ্বুদ্ধ হতে পারে আমরা মাঠপর্যায়ে সেটির উন্নয়নে কাজ করছি।
চিংড়ি উৎপাদনে দেশের ২৭ শতাংশ আসে বাগেরহাট থেকে। এই খাতে সংকট তৈরি হলে সেটির প্রভাব পড়ে জাতীয় রাজস্ব ও অর্থনীতিতেও। সরকারিভাবে পর্যাপ্ত আর্থিক সহায়তা, আধুনিক পদ্ধতির ব্যবহার এবং নিয়মিত মনিটরিং নিশ্চিত করতে না পারলে চিংড়ি চাষ আরও বিপন্ন হয়ে পড়বে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় চাষীরা।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ৪০ জেলা প্রতিনিধিকে চাকরি থেকে কেন বহিষ্কার করা হয়েছে- তার কারণ দর্শানোর জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
৩ দিন আগেদেশের বৃহৎ আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা কম খরচে পণ্য পরিবহন, দ্রুত পণ্য ছাড় ব্যবস্থাসহ আর্থিক সাশ্রয় সুবিধা পাওয়ায় ভোমরা বন্দরকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে
৫ দিন আগেভোক্তাপর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের মূল্য ১ হাজার ২৭৩ টাকা থেকে ৩ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
৫ দিন আগেনীলফামারীতে হু হু করে ভোগ্যপণ্যের মুল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতা সাধারণ দিশেহারা হয়ে পরেছে। ব্যবসায়ীরা এই মুল্যবৃদ্ধিকে অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণ বলে অজুহাত তুলছেন।
৫ দিন আগেবাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ৪০ জেলা প্রতিনিধিকে চাকরি থেকে কেন বহিষ্কার করা হয়েছে- তার কারণ দর্শানোর জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
দেশের বৃহৎ আমদানি-রপ্তানিকারক ব্যবসায়ীরা কম খরচে পণ্য পরিবহন, দ্রুত পণ্য ছাড় ব্যবস্থাসহ আর্থিক সাশ্রয় সুবিধা পাওয়ায় ভোমরা বন্দরকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছে
ভোক্তাপর্যায়ে এলপি গ্যাসের নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি মাসের জন্য প্রতি ১২ কেজি সিলিন্ডারের মূল্য ১ হাজার ২৭৩ টাকা থেকে ৩ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নীলফামারীতে হু হু করে ভোগ্যপণ্যের মুল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতা সাধারণ দিশেহারা হয়ে পরেছে। ব্যবসায়ীরা এই মুল্যবৃদ্ধিকে অপর্যাপ্ত সরবরাহের কারণ বলে অজুহাত তুলছেন।