শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা

আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে বৈঠকের ফলাফলের ওপর

প্রতিনিধি
নিজস্ব প্রতিবেদক
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে অবশেষে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনায় বসেছে দেশের পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার পর সচিবালয়ের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ বৈঠক শুরু হয়।

কারিগরি শিক্ষা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী রিফাত হোসেন জানিয়েছেন, ১৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়েছে। তিনি বলেন, "বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব কি না, তা নির্ভর করছে আজকের বৈঠকের ফলাফলের ওপর।"

এর আগে বুধবার সকাল ১০টার দিকে তেজগাঁও সাতরাস্তা মোড়ে অবস্থান নিয়ে ঢাকার রাজপথে বিক্ষোভে নামে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচিতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে মহাখালী, বনানী, গুলশান, মগবাজার, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, আগারগাঁও ও মিরপুরে যান চলাচলে চরম বিপর্যয় ঘটে।

ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরাও একযোগে এই অবরোধে অংশ নেন। জেলা পর্যায়ে সড়ক ও মহাসড়ক অবরোধের ফলে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

শুধু সড়ক নয়, রাজশাহীতে শিক্ষার্থীরা রেলপথ অবরোধ করায় ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে পড়ে। ফলে পরিবহন ব্যবস্থায় এক ধরনের অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।

এদিকে আন্দোলনের সাম্প্রতিক অবস্থান তুলে ধরে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র জুবায়ের পাটোয়ারী জানিয়েছেন, বুধবারের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি আপাতত প্রত্যাহার করা হলেও আন্দোলন এখনও চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, "আমরা এবার সারা দেশে রেলপথ অবরোধের প্রস্তুতি নিচ্ছি। এটি হবে আন্দোলনের পরবর্তী ধাপ।"

তিনি আরও জানান, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শোয়াইব আহমাদ খান, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বৈঠক হয়েছে। তবে আলোচনায় কোনো সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি। “আমাদের দাবিগুলো লিখিতভাবে মানা হয়নি। ফলে বৃহস্পতিবার আমরা রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছি,”- বলেছেন জুবায়ের। তিনি দেশের সব পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে একাত্ম হয়ে রেল অবরোধ কর্মসূচিকে সফল করার আহ্বান জানান।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি:

১. জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতির হাইকোর্টের রায় বাতিল।

২. ক্রাফট ইন্সট্রাক্টর পদবির পরিবর্তন এবং মামলার সঙ্গে জড়িতদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা।

৩. ২০২১ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সংশ্লিষ্ট নিয়োগবিধির সংস্কার।

৪. ডিপ্লোমা-ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে নির্ধারিত বয়সসীমা পুনর্বহাল এবং চার বছর মেয়াদি মানসম্মত কারিকুলাম চালু।

৫. ক্রমবর্ধমানভাবে সম্পূর্ণ ইংরেজি মাধ্যমে কোর্স পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ।

৬. উপসহকারী প্রকৌশলী (দশম গ্রেড) পদে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমাধারীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ এবং ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অবমূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা।

এ মুহূর্তে ছাত্রদের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে সচিবালয়ের আলোচনার ফলাফলের দিকে। আলোচনা সফল হলে হয়তো মাঠের আন্দোলন কিছুটা শিথিল হবে। তবে দাবি পূরণ না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

ক্যাম্পাস নিয়ে আরও পড়ুন

ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারা দেশে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন কারিগরি শিক্ষার্থীরা। আগামীকাল (রোববার) দেশব্যাপী এই কমসূচি পালন করবেন তারা।

৯ ঘণ্টা আগে

ছয় দফা দাবি আদায় ও কুমিল্লায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে গণমিছিল করেছে সরকারি ও বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।

১ দিন আগে

ছয় দফা দাবিতে আন্দোলনকারী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব রেহানা ইয়াছমিনের সঙ্গে বৈঠক করলেও সেই আলোচনায় সন্তুষ্ট নন তাঁরা।

২ দিন আগে

দীর্ঘদিনের দাবিদাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা শেষে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা তাদের অসন্তোষের কথা জানিয়ে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে, ছয় দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে বসেন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল।

২ দিন আগে