পারভেজ আলিম আল রাজী
মেধাবী ও বিশ্বস্ত এক তরুণ রাজনীতিকের নাম আকরামুল হাসান মিন্টু। ধার্মিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠা তাঁর। দলীয় নীতি আদর্শ ও জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আনুগত্যশীল আকরাম একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আমৃত্যু সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিক ও সদ্য প্রয়াত জননেতা আলহাজ্ব সুলতান উদ্দিন মোল্লার কনিষ্ঠপুত্র আকরামুল হাসান মিন্টু। বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী, বিনয়ী, মিষ্টভাষী ও রুচিশীল একজন তরুণ রাজনীতিক তিনি। ছাত্র জীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন এই রাজনীতিক। ১/১১ এর পর থেকে প্রতিনিয়ত এ মেধার স্বাক্ষর রেখে চলছেন তিনি। স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষকদের পাশাপাশি সহপাঠীরাও তাকে খুব পছন্দ করতো। পছন্দ করে এলাকাবাসীও। ছোটবেলা থেকেই সকলের সাথে হাসিমাখা মুখে কথা বলতেন তিনি, যা এখনো অমলিন।
১৯৭৯ সালে তাঁত শিল্প, সাগরকলা ও লটকন সমৃদ্ধ জেলা নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের যোশর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মোল্লা বাড়ির লাল মাটির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। লাল মাটির এই মায়াবী অবয়বেই শৈশবের কিছুটা সময় কেটেছে তার। তবে এখনো পর্যন্ত এ অঞ্চলের মাটি ও মানুষের সাথেই মিশে আছে তার প্রাণ।
মরজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ায় হাতেখড়ি তার। প্রাথমিকের প্রথম দু’বছর ছায়া সুনিবিড় গ্রামের মেঠোপথ দিয়েই স্কুলেই যেতেন তিনি। বাড়ি ফিরতেন কাঁদামাটি মেখে। ছেলের হাসিমাখা মুখ দেখে মমতাময়ী মা শাসন বারণ ভুলে পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে নিতেন। পরবর্তীতে জেলা শহরের সাটির পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী ও ব্রাহ্মন্দী কামিনী কিশোর মৌলিক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে ৫ বিষয়ে লেটার মার্কসসহ ৮২২ নম্বর পেয়ে সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ঢাকা কমার্স কলেজে ভর্তি হন। সে কারণে কলেজ জীবনে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ হয়ে উঠেনি তার।
১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে ১৫তম মেধাস্থান অর্জন করে এইচএসসি পাশ করেন। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধীনে বিবিএ ও এমবিএ করেন। এরপর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি মাস্টার্স ইন হেলথ ইকোনোমিক্স-এ আবারও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল গবেষক হিসেবে এ অধ্যয়নরত।
১৯৯৭/৯৮ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। সেসময় আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলকে দমন-পীড়নে লিপ্ত। ঠিক সেই সময় মেধাবী এই ছাত্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হোন। তার মেধা, বিচক্ষণতা এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের কারণে খুব অল্প সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মেধাবী ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে ছাত্রদল নেতাদের লিখিত মতামতের ভিত্তিতে ঐতিহ্যবাহী মুজিব হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। অবাক করা বিষয় হলো, সংগঠনপ্রেমী এই ছাত্রনেতা দিনের পুরোটা সময় নিজ সংগঠনের কাজে ব্যস্ত থেকেও পড়ালেখা ঠিক রেখেছেন। ২০০৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র-যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। তুমুল জনপ্রিয় এই নেতা দলমত নির্বিশেষে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নন্দিত নেতায় পরিণত হোন। ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১/১১ এর সরকারের নজর পড়ে তার ওপর। সেসময় থেকেই শুরু হয় একরকম ফেরারি জীবন।
মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের বিরুদ্ধে ঢাবিতে আকরামুল হাসান মিন্টুদের নেতৃত্বেই প্রথম প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু হয়। সে প্রতিরোধ ছিলো চোখে পড়ার মতো। যার ফলে ক্যাম্পাস থেকে তখন সেনাবাহিনীও ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয় তৎকালীন ১/১১ সরকার। সেনা সমর্থিত ফখরুদদ্দিন সরকার তখন নির্বাচন নিয়ে শুরু করে নানা টালবাহানা। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এ সংশয় মেনে নেয়নি ছাত্রদল। ২০০৭ সালে নির্বাচনের দাবিতে আক্রামের নেতৃত্বে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ছাত্রদল। এরই প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ২২ আগস্ট ফখরুদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। সেই নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী পুলিশ আকরামকে গ্রেপ্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠে। কিন্তু দমেনি আকরাম। শুরু থেকেই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরোধিতা করেন তিনি। নানা অপকর্মের প্রতিবাদ জানান রাজপথে। দল তার প্রতি তুষ্ট হয়ে ২০১৩ সালে তাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক পদে মনোনীত করেন। এরপর সারাদেশে তারা জনপ্রিয়তা আরো ছড়িয়ে যায়।
ফ্যাসিস্ট সরকার যাতে অবৈধ নির্বাচন করতে না পারে জীবন বাজি রেখে আবারো রাজপথে নামেন আকরাম। ফ্যাসিস্ট সরকার রাতবিরাতে তার বাসা বাড়িতে হানা দেয়া শুরু করে। মোবাইল ট্র্যাকিং করে অভিযান চালায়। তারপরও তাকে প্রতিহত করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত অনিয়মের নির্বাচন করে ফেলে আওয়ামী লীগ। দল তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার তুলে দেন আকরামের হাতে। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য। বিএনপির এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েও নির্লোভী, পরোপকারী এই নেতা শিবপুরের জনমানুষের বৃহত্তর কল্যাণের লক্ষ্যে শিবপুরের মাঠে ময়দানে রাতদিন চষে বেড়াচ্ছেন এবং দলের পাশাপাশি তৃণমূলকেও অধিকতর শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
এত আন্দোলন করার পরও একাডেমিক ফলাফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার মতো সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে (৩.৮০) অর্জন করেন তিনি।
ফলাফলের দিক দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। কিন্তু রাজনীতি করে সরাসরি জনকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখার প্রত্যয়ে বুদ্ধিজীবীর মত সম্মানিত পেশা পরিত্যাগ করেন আকরাম।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে আকরামের বিরুদ্ধে ১২৭টি মামলা হয়। তিনি ৩ বার গ্রেপ্তার হয়ে এক বছরের অধিক সময় কারবারণ করেন। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে টানা ৯৩ দিনের অবরোধে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের সার্বক্ষণিক নির্দেশনা ও তদারকিতে সারা বাংলাদেশে শতাব্দীর সেরা প্রতিরোধ গড়ে তুলে ছাত্রদল। তখন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গুমের লিস্টে আকরামুল হাসানের নাম প্রথম সারিতে থাকা স্বত্বেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের আস্থার মর্যাদা দিতে এবং তাদের নির্দেশ মোতাবেক গ্রেপ্তার এড়িয়ে মাঠে থাকতে তিনি সর্বদা ছিলেন বদ্ধপরিকর।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চরম দুঃসময়ে ছাত্রদলের ১০৮টি (তৎকালীন) সাংগঠনিক ইউনিটের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন তিনি। যার ফলে সারাদেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নামে যতগুলো মামলা হয়েছে তার প্রায় সবগুলোতে তাকে আসামি করা হয়েছে। এতো লম্বা আন্দোলন করতে গিয়ে ছাত্রদল অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার স্বীকার হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মী। অবরোধ আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সপ্তাহে ৩/৪দিন ঢাকা জজকোর্ট ও পরবর্তীতে বকশিবাজারস্থ অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়ার হাজিরার সময় আকরামুল হাসান মিন্টুর নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক গণজোয়ার তৈরি হতো। আর এজন্যই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তার নেতৃত্বের ওপর আস্থা রেখে ২ বছরের কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে প্রায় ৫ বছর করেছিলেন।
ফ্যাসিবাদের কবলে পরে ভঙ্গুর এই রাষ্ট্রকে মেরামতের জন্য দেশনায়ক তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা প্রদান করেছেন। জনমানুষের কাছে এই ৩১ দফা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে গঠন করেছেন কেন্দ্রীয় প্রচার কমিটি। এই প্রচার কমিটির টীম লিডার হিসেবে কাজ করছেন মেধাবী ছাত্র নেতা আকরামুল হাসান। অত্যন্ত বিনয়ী এই ছাত্রনেতা তার জীবনের সুবর্ণ সময়গুলো কাটিয়েছেন বৈরী রাজনীতির এক উত্তপ্ত মাঠে। যেখানে সর্বদা ছিলো গুম-খুন হয়ে যাওয়ার ভয়। ভয়ংকর সেই সময়ে এই আকরামুল হাসান মিন্টুরা জাতীয়তাবাদী দলকে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে জনমানুষের কাছে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন।
আকরামুল হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন, নির্বাচনী এলাকার মানুষ, দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। অনেক বৈরী সময় পার করে এখন আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছি। দলের প্রতি রয়েছে আমার পূর্ণ আস্থা। অতীতেও দল আমার ওপর আস্থা রেখেছিল। আশাকরি এখনো আমার প্রতি সে আস্থা অটুট আছে। আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমার নিজ নির্বাচনী এলাকায় মানুষের আর্থসামাজিক সমস্যা দূর করে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার চেষ্টা করবো। সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করবো। বিএনপির গৃহীত ৩১ দফা বাস্তবায়নে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আকরাম বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। তার চিকিৎসক বড় ভাই আশরাফুল হাসান আর বৃদ্ধ মাকে নিয়েই তাদের সংসার। বড় ভাই আশরাফুল হাসানও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। তিনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর কেন্দ্রীয় নেতা। কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন রাজধানীর মহানগর জেনারেল হাসপাতালে।
মেধাবী ও বিশ্বস্ত এক তরুণ রাজনীতিকের নাম আকরামুল হাসান মিন্টু। ধার্মিক ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে উঠা তাঁর। দলীয় নীতি আদর্শ ও জাতীয়তাবাদী নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আনুগত্যশীল আকরাম একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। নরসিংদীর শিবপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির আমৃত্যু সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিক ও সদ্য প্রয়াত জননেতা আলহাজ্ব সুলতান উদ্দিন মোল্লার কনিষ্ঠপুত্র আকরামুল হাসান মিন্টু। বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী, বিনয়ী, মিষ্টভাষী ও রুচিশীল একজন তরুণ রাজনীতিক তিনি। ছাত্র জীবনে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন এই রাজনীতিক। ১/১১ এর পর থেকে প্রতিনিয়ত এ মেধার স্বাক্ষর রেখে চলছেন তিনি। স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে শিক্ষকদের পাশাপাশি সহপাঠীরাও তাকে খুব পছন্দ করতো। পছন্দ করে এলাকাবাসীও। ছোটবেলা থেকেই সকলের সাথে হাসিমাখা মুখে কথা বলতেন তিনি, যা এখনো অমলিন।
১৯৭৯ সালে তাঁত শিল্প, সাগরকলা ও লটকন সমৃদ্ধ জেলা নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের যোশর গ্রামের সম্ভ্রান্ত মোল্লা বাড়ির লাল মাটির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। লাল মাটির এই মায়াবী অবয়বেই শৈশবের কিছুটা সময় কেটেছে তার। তবে এখনো পর্যন্ত এ অঞ্চলের মাটি ও মানুষের সাথেই মিশে আছে তার প্রাণ।
মরজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ায় হাতেখড়ি তার। প্রাথমিকের প্রথম দু’বছর ছায়া সুনিবিড় গ্রামের মেঠোপথ দিয়েই স্কুলেই যেতেন তিনি। বাড়ি ফিরতেন কাঁদামাটি মেখে। ছেলের হাসিমাখা মুখ দেখে মমতাময়ী মা শাসন বারণ ভুলে পরম মমতায় বুকে জড়িয়ে নিতেন। পরবর্তীতে জেলা শহরের সাটির পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী ও ব্রাহ্মন্দী কামিনী কিশোর মৌলিক সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে ৫ বিষয়ে লেটার মার্কসসহ ৮২২ নম্বর পেয়ে সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পাস করেন। পরে ছাত্র রাজনীতিমুক্ত ঢাকা কমার্স কলেজে ভর্তি হন। সে কারণে কলেজ জীবনে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার কোন সুযোগ হয়ে উঠেনি তার।
১৯৯৭ সালে অনুষ্ঠিত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে ১৫তম মেধাস্থান অর্জন করে এইচএসসি পাশ করেন। ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধীনে বিবিএ ও এমবিএ করেন। এরপর একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি মাস্টার্স ইন হেলথ ইকোনোমিক্স-এ আবারও মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল গবেষক হিসেবে এ অধ্যয়নরত।
১৯৯৭/৯৮ সেশনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। সেসময় আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলকে দমন-পীড়নে লিপ্ত। ঠিক সেই সময় মেধাবী এই ছাত্র জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সরাসরি যুক্ত হোন। তার মেধা, বিচক্ষণতা এবং সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের কারণে খুব অল্প সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মেধাবী ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন তিনি। পরবর্তীতে ২০০৩ সালে ছাত্রদল নেতাদের লিখিত মতামতের ভিত্তিতে ঐতিহ্যবাহী মুজিব হল শাখা ছাত্রদলের সভাপতি নির্বাচিত হন। অবাক করা বিষয় হলো, সংগঠনপ্রেমী এই ছাত্রনেতা দিনের পুরোটা সময় নিজ সংগঠনের কাজে ব্যস্ত থেকেও পড়ালেখা ঠিক রেখেছেন। ২০০৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র-যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। তুমুল জনপ্রিয় এই নেতা দলমত নির্বিশেষে তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নন্দিত নেতায় পরিণত হোন। ২০০৬ সালে বিএনপি ক্ষমতা হারানোর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১/১১ এর সরকারের নজর পড়ে তার ওপর। সেসময় থেকেই শুরু হয় একরকম ফেরারি জীবন।
মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের বিরুদ্ধে ঢাবিতে আকরামুল হাসান মিন্টুদের নেতৃত্বেই প্রথম প্রতিরোধ আন্দোলন শুরু হয়। সে প্রতিরোধ ছিলো চোখে পড়ার মতো। যার ফলে ক্যাম্পাস থেকে তখন সেনাবাহিনীও ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয় তৎকালীন ১/১১ সরকার। সেনা সমর্থিত ফখরুদদ্দিন সরকার তখন নির্বাচন নিয়ে শুরু করে নানা টালবাহানা। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এ সংশয় মেনে নেয়নি ছাত্রদল। ২০০৭ সালে নির্বাচনের দাবিতে আক্রামের নেতৃত্বে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ছাত্রদল। এরই প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ২২ আগস্ট ফখরুদ্দিন জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। সেই নির্বাচনে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতায় এসেই আওয়ামী পুলিশ আকরামকে গ্রেপ্তার করতে মরিয়া হয়ে উঠে। কিন্তু দমেনি আকরাম। শুরু থেকেই ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরোধিতা করেন তিনি। নানা অপকর্মের প্রতিবাদ জানান রাজপথে। দল তার প্রতি তুষ্ট হয়ে ২০১৩ সালে তাকে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক পদে মনোনীত করেন। এরপর সারাদেশে তারা জনপ্রিয়তা আরো ছড়িয়ে যায়।
ফ্যাসিস্ট সরকার যাতে অবৈধ নির্বাচন করতে না পারে জীবন বাজি রেখে আবারো রাজপথে নামেন আকরাম। ফ্যাসিস্ট সরকার রাতবিরাতে তার বাসা বাড়িতে হানা দেয়া শুরু করে। মোবাইল ট্র্যাকিং করে অভিযান চালায়। তারপরও তাকে প্রতিহত করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত অনিয়মের নির্বাচন করে ফেলে আওয়ামী লীগ। দল তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার তুলে দেন আকরামের হাতে। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য। বিএনপির এই গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েও নির্লোভী, পরোপকারী এই নেতা শিবপুরের জনমানুষের বৃহত্তর কল্যাণের লক্ষ্যে শিবপুরের মাঠে ময়দানে রাতদিন চষে বেড়াচ্ছেন এবং দলের পাশাপাশি তৃণমূলকেও অধিকতর শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
এত আন্দোলন করার পরও একাডেমিক ফলাফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার মতো সিজিপিএ ৪ এর মধ্যে (৩.৮০) অর্জন করেন তিনি।
ফলাফলের দিক দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। কিন্তু রাজনীতি করে সরাসরি জনকল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখার প্রত্যয়ে বুদ্ধিজীবীর মত সম্মানিত পেশা পরিত্যাগ করেন আকরাম।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের আমলে আকরামের বিরুদ্ধে ১২৭টি মামলা হয়। তিনি ৩ বার গ্রেপ্তার হয়ে এক বছরের অধিক সময় কারবারণ করেন। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি থেকে টানা ৯৩ দিনের অবরোধে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানের সার্বক্ষণিক নির্দেশনা ও তদারকিতে সারা বাংলাদেশে শতাব্দীর সেরা প্রতিরোধ গড়ে তুলে ছাত্রদল। তখন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর গুমের লিস্টে আকরামুল হাসানের নাম প্রথম সারিতে থাকা স্বত্বেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের আস্থার মর্যাদা দিতে এবং তাদের নির্দেশ মোতাবেক গ্রেপ্তার এড়িয়ে মাঠে থাকতে তিনি সর্বদা ছিলেন বদ্ধপরিকর।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চরম দুঃসময়ে ছাত্রদলের ১০৮টি (তৎকালীন) সাংগঠনিক ইউনিটের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন তিনি। যার ফলে সারাদেশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নামে যতগুলো মামলা হয়েছে তার প্রায় সবগুলোতে তাকে আসামি করা হয়েছে। এতো লম্বা আন্দোলন করতে গিয়ে ছাত্রদল অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার স্বীকার হয়েছে অসংখ্য নেতাকর্মী। অবরোধ আন্দোলন পরবর্তী সময়ে সপ্তাহে ৩/৪দিন ঢাকা জজকোর্ট ও পরবর্তীতে বকশিবাজারস্থ অস্থায়ী আদালতে খালেদা জিয়ার হাজিরার সময় আকরামুল হাসান মিন্টুর নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এক গণজোয়ার তৈরি হতো। আর এজন্যই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তার নেতৃত্বের ওপর আস্থা রেখে ২ বছরের কমিটির মেয়াদ বাড়িয়ে প্রায় ৫ বছর করেছিলেন।
ফ্যাসিবাদের কবলে পরে ভঙ্গুর এই রাষ্ট্রকে মেরামতের জন্য দেশনায়ক তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতের জন্য ৩১ দফা প্রদান করেছেন। জনমানুষের কাছে এই ৩১ দফা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে গঠন করেছেন কেন্দ্রীয় প্রচার কমিটি। এই প্রচার কমিটির টীম লিডার হিসেবে কাজ করছেন মেধাবী ছাত্র নেতা আকরামুল হাসান। অত্যন্ত বিনয়ী এই ছাত্রনেতা তার জীবনের সুবর্ণ সময়গুলো কাটিয়েছেন বৈরী রাজনীতির এক উত্তপ্ত মাঠে। যেখানে সর্বদা ছিলো গুম-খুন হয়ে যাওয়ার ভয়। ভয়ংকর সেই সময়ে এই আকরামুল হাসান মিন্টুরা জাতীয়তাবাদী দলকে অত্যন্ত সুনিপুণভাবে নেতৃত্ব দিয়ে বিএনপিকে জনমানুষের কাছে আরো গ্রহণযোগ্য করে তুলেছেন।
আকরামুল হাসান এ প্রতিবেদককে বলেন, নির্বাচনী এলাকার মানুষ, দেশ এবং দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। অনেক বৈরী সময় পার করে এখন আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছি। দলের প্রতি রয়েছে আমার পূর্ণ আস্থা। অতীতেও দল আমার ওপর আস্থা রেখেছিল। আশাকরি এখনো আমার প্রতি সে আস্থা অটুট আছে। আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমার নিজ নির্বাচনী এলাকায় মানুষের আর্থসামাজিক সমস্যা দূর করে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার চেষ্টা করবো। সন্ত্রাস ও মাদকমুক্ত শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করবো। বিএনপির গৃহীত ৩১ দফা বাস্তবায়নে যে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে আমার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
আকরাম বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক। তার চিকিৎসক বড় ভাই আশরাফুল হাসান আর বৃদ্ধ মাকে নিয়েই তাদের সংসার। বড় ভাই আশরাফুল হাসানও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। তিনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর কেন্দ্রীয় নেতা। কনসালটেন্ট হিসেবে কর্মরত আছেন রাজধানীর মহানগর জেনারেল হাসপাতালে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আজ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় মশক নিধন ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়।
১ ঘণ্টা আগেসারাদেশে বলির পাঠা হতে যাচ্ছেন বিসিএস এডমিন ক্যাডারের কিছু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (জুনিয়র)। সোমবার নরসিংদীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ার পর এমন শঙ্কাই করছেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৮ জুলাই ২০২৪ সালে নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহমিদ ভুঁইয়
১০ দিন আগেকারিগরি ত্রুটির কারণে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে। এর ১৭ ঘণ্টা পর শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় একটি ইউনিট থেকে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।
১৩ দিন আগেফিলিস্তিনের জন্য কাঁদলেন রাজধানী ঢাকা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অশং নিয়ে ফিলিস্তিনের জন্যকাঁদলেন লাখো মানুষ। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় করা বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের চোখে ছিল অশ্রু।
১৩ দিন আগেঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আজ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) ধানমন্ডি আবাসিক এলাকায় মশক নিধন ও বিশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সারাদেশে বলির পাঠা হতে যাচ্ছেন বিসিএস এডমিন ক্যাডারের কিছু নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (জুনিয়র)। সোমবার নরসিংদীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ার পর এমন শঙ্কাই করছেন তারা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ১৮ জুলাই ২০২৪ সালে নরসিংদীতে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহমিদ ভুঁইয়
কারিগরি ত্রুটির কারণে ভারতের ঝাড়খন্ড রাজ্যের গোড্ডায় নির্মিত আদানি গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) রাতে। এর ১৭ ঘণ্টা পর শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া ছয়টায় একটি ইউনিট থেকে আবার বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়।
ফিলিস্তিনের জন্য কাঁদলেন রাজধানী ঢাকা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অশং নিয়ে ফিলিস্তিনের জন্যকাঁদলেন লাখো মানুষ। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও শান্তি কামনায় করা বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেওয়া লাখো মানুষের চোখে ছিল অশ্রু।