তুরস্কের ভূমিকম্প প্রস্তুতিতে যুগান্তকারী অগ্রগতি, নতুন আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা মাত্র কয়েক সেকেন্ডে সতর্ক বার্তা পাঠাচ্ছে।

তুরস্কের বোয়াজিচি ইউনিভার্সিটির কান্দিলি অবজারভেটরি অ্যান্ড আর্থকোয়াক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (কেআরডিএই) সম্প্রতি ভূমিকম্প সতর্কতা ব্যবস্থায় এক গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিগত অগ্রগতি অর্জন করেছে। নতুন এই সিস্টেমের মাধ্যমে ২ অক্টোবর মারমারা অঞ্চলে ৫.০ মাত্রার ভূমিকম্পের শুরু থেকে মাত্র ৮.৪ সেকেন্ডের মধ্যে প্রথম সতর্কবার্তা পাঠানো সম্ভব হয়েছে।

ডেইলি সাবাহ’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইনস্টিটিউটটি এমন একটি আধুনিক অবকাঠামো তৈরি করেছে, যা প্রাথমিক ভূমিকম্প তরঙ্গ শনাক্ত করে মুহূর্তের মধ্যে সতর্কতা প্রদান করতে সক্ষম। এই ব্যবস্থার ফলে কর্তৃপক্ষ ও জনসাধারণ কিছু অতিরিক্ত সময় পাবে, যা ভূমিকম্পের প্রভাব কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কেআরডিএই মারমারা অঞ্চলের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ভূমিকম্প প্রভাবিত এলাকা হিসেবে এই গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে। সিস্টেমটির কার্যকারিতা বাড়াতে মারমারা অঞ্চলের ভূমিকম্প পরিমাপ কেন্দ্রের ডেটা ট্রান্সমিশন অবকাঠামো আপগ্রেড করা হয়েছে, যার ফলে সংকেত পৌঁছাতে সময় লাগছে মাত্র ০.২ সেকেন্ড।

রিয়েল-টাইম ডেটা সংগ্রহের সঙ্গে সঙ্গে ‘আর্লি ওয়ার্নিং সফটওয়্যার’ তা বিশ্লেষণ করে কেন্দ্রস্থল ও সম্ভাব্য মাত্রা নির্ধারণ করে, এবং সিস্টেম প্রায় তাৎক্ষণিক সতর্কবার্তা পাঠাতে সক্ষম। সাম্প্রতিক ভূমিকম্প এই ব্যবস্থার কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে, যেখানে সতর্কবার্তা পাঠানো হয় মাত্র ৮.৪ সেকেন্ডের মধ্যে।

এছাড়া, কেআরডিএই একটি আইওএস ভিত্তিক মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে, যা ব্যবহারকারীদের সরাসরি সতর্কবার্তা প্রদান করবে। বর্তমানে এটি প্রায় ২,৫০০ ডিভাইসে পাইলট টেস্টে রয়েছে। ভবিষ্যতে তুরস্কজুড়ে আরও স্টেশন স্থাপন, অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ এবং বিপুল সংখ্যক ব্যবহারকারীর কাছে সতর্কবার্তা পৌঁছে দিতে সক্ষম সফটওয়্যার অবকাঠামো সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতি তুরস্কের ভূমিকম্প প্রস্তুতি এবং মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে একটি বড় রূপান্তরমূলক পদক্ষেপ হতে যাচ্ছে।