মোঃ জাহিদ হোসেন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে যে অনিশ্চয়তা, অবিশ্বাস ও মুখোমুখি অবস্থানের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তার প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পরবর্তী প্রথম জনসমাবেশে দেওয়া বক্তব্য নিঃসন্দেহে একটি ভিন্ন সুর এনেছে। বহু বছর পর প্রকাশ্যে ও সরাসরি রাজনৈতিক বক্তব্যে তিনি যে ভাষা, দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রাধিকার তুলে ধরেছেন, তা শুধু দলীয় রাজনীতির সীমার মধ্যে আবদ্ধ নয়; বরং এটি সামগ্রিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে। এই বক্তব্যকে কেবল একটি দলের নেতার অবস্থান হিসেবে দেখলে এর তাৎপর্য পুরোপুরি অনুধাবন করা যাবে না। বরং এটিকে বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক সংকটে একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত যেখানে সংঘাতের বদলে সংলাপ, বিভাজনের বদলে ঐক্য এবং দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের কথা বলার প্রয়াস স্পষ্টভাবে লক্ষ করা যায়। শান্ত স্বরে দৃঢ় বার্তা
তারেক রহমানের বক্তব্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল এর ভাষা ও সুর। দীর্ঘ ১৭ বছর দেশান্তরে থেকে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার জেল-জুলুম, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও নানা প্রতিকূলতা সহ্য করে দেশে ফিরে তিনি যদি প্রতিশোধপরায়ণ, উত্তেজক বা বিভাজনমূলক ভাষা ব্যবহার করতেন, তাহলে তা হয়তো অনেকের কাছেই প্রত্যাশিত মনে হতো। কিন্তু বাস্তবে তিনি তার বিপরীত পথটি বেছে নিয়েছেন। তিনি ছিলেন শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় যেখানে বক্তব্যের মাধ্যমেই অনেক সময় উত্তেজনা তৈরি হয়, সেখানে এমন সংযত ও পরিমিত উচ্চারণ নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বক্তব্য বলতে প্রতিপক্ষের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ ও বিদ্বেষমূলক শব্দচয়ন শুনে অভ্যস্ত। সেই প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের বক্তব্য ভদ্রতা, সহনশীলতা ও পরিমিতবোধের এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এতে দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ ও রাষ্ট্রীয় চিন্তার পরিচয়ও স্পষ্ট হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের অঙ্গীকার
তারেক রহমান সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসতে হবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই। এই অবস্থান কেবল একটি রাজনৈতিক কৌশল নয়; বরং এটি একটি নীতিগত অবস্থান, যা রাষ্ট্র ও সমাজের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। গণতন্ত্রের পথ ধরে পরিবর্তনের কথা বলা মানে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করা। একজন জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতার মুখে শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের এই অঙ্গীকার সমাজে আস্থার জায়গা তৈরি করে। এটি জনগণকে আশ্বস্ত করে যে রাজনীতি কেবল ক্ষমতার লড়াই নয়, বরং এটি হতে পারে দায়িত্বশীল ও শৃঙ্খলাবদ্ধ। জনগণকেন্দ্রিক রাজনীতির পুনরুচ্চারণ
তার বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে একটি শব্দ—“জনগণ”। তিনি রাজনীতিকে ক্ষমতা দখলের খেলা হিসেবে নয়, বরং জনগণের অধিকার, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার একটি মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছেন। বিশেষভাবে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন, যা গণতন্ত্রের একটি মৌলিক ভিত্তি।
এই বক্তব্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় একটি মৌলিক গণতান্ত্রিক সত্য: সরকার বা বিরোধী দল নয়, রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষাপটে এ ধরনের জনগণকেন্দ্রিক বক্তব্য মানুষের মধ্যে নতুন করে সম্পৃক্ততার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। রাজনীতির প্রতি যে অনীহা ও হতাশা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এ ধরনের ভাষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সহিংসতার অধ্যায় নতুন নয়। আন্দোলন, নির্বাচন কিংবা ক্ষমতার পালাবদলের সময় সহিংসতার চর্চা রাজনীতিকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট হয়েছে এবং সমাজে দীর্ঘস্থায়ী বিভাজন তৈরি হয়েছে। এই বাস্তবতায় তারেক রহমানের বক্তব্যে সহিংসতা পরিহারের আহ্বান বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে শত্রুতায় রূপ না দেওয়ার কথা বলেছেন এবং গণতান্ত্রিক নিয়মের মধ্যেই মতপার্থক্য মীমাংসার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এটি শুধু একটি দলের জন্য নয়; বরং সমগ্র রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।
ঐক্যের বার্তা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি
তারেক রহমানের বক্তব্যে একটি স্পষ্ট ঐক্যের সুর লক্ষ করা যায়। তিনি কেবল দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলেননি; বরং সব শ্রেণি-পেশা ও মতাদর্শের মানুষকে রাষ্ট্র গঠনের অংশীদার হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। এই অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমান সময়ের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক বিভাজন যখন সামাজিক সম্পর্ক, পরিবার ও কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত প্রভাবিত করে, তখন ঐক্যের বার্তা রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকেই আসা প্রয়োজন। তার বক্তব্য সেই প্রয়োজনীয় জায়গাটিকেই স্পর্শ করেছে এবং জাতীয় ঐক্যের সম্ভাবনাকে সামনে এনেছে।
রাজনৈতিক পরিপক্বতা ও ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিভঙ্গি
দীর্ঘ সময় সরাসরি দেশের রাজনীতির বাইরে থাকার পরও তার বক্তব্যে যে পরিপক্বতা ও দায়িত্ববোধ ফুটে উঠেছে, তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি অতীতের বিতর্ক ও অভিযোগে আটকে না থেকে ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। উন্নয়ন, গণতন্ত্র, প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কারের কথা তুলে ধরে তিনি রাজনীতিকে একটি বৃহত্তর জাতীয় প্রেক্ষাপটে দেখার চেষ্টা করেছেন।
এটি প্রমাণ করে যে রাজনীতি কেবল তাৎক্ষণিক লাভ বা ক্ষমতার হিসাব নয়; বরং এটি দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রচিন্তা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দায়িত্বশীল পরিকল্পনার বিষয়।
গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা
তার বক্তব্যে সবচেয়ে শক্তিশালী যে বার্তাটি উঠে এসেছে, তা হলো গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা। নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতি গঠনের বিষয় তিনি বারবার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। এই আস্থা শুধু একটি রাজনৈতিক অবস্থান নয়; বরং এটি জনগণের জন্য একটি আশার জায়গা তৈরি করে। যখন রাজনৈতিক নেতারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আস্থা রাখেন, তখন সেই আস্থা ধীরে ধীরে সমাজেও প্রতিফলিত হয়। গণতন্ত্রের ওপর মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে এই ধরনের বক্তব্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
তারেক রহমানের ৩০০ ফিট রাস্তায় দেওয়া এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক আলোচনার সূচনা করেছে। এটি কোনো চূড়ান্ত সমাধান নয়; বরং একটি সম্ভাবনার দরজা—যার ভেতর দিয়ে সংলাপ, শান্তি ও জনগণকেন্দ্রিক রাজনীতির পথে এগোনো যেতে পারে।
এই বক্তব্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়, রাজনীতি মানেই সংঘাত নয়; রাজনীতি হতে পারে দায়িত্বশীল, মানবিক ও ভবিষ্যতমুখী। এখন প্রয়োজন এই বক্তব্যের ধারাবাহিকতা, বাস্তব প্রয়োগ এবং সব রাজনৈতিক শক্তির সম্মিলিত সদিচ্ছা। যদি এই ইতিবাচক সুর বাস্তব রাজনীতিতে প্রতিফলিত হয়, তবে তা কেবল একটি দলের জন্য নয়—পুরো বাংলাদেশের জন্যই আশাব্যঞ্জক হবে।
মোঃ জাহিদ হোসেন
উপমহাব্যবস্হাপক
হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজম্যান্ট বিভাগ,
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে যে অনিশ্চয়তা, অবিশ্বাস ও মুখোমুখি অবস্থানের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তার প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পরবর্তী প্রথম জনসমাবেশে দেওয়া বক্তব্য নিঃসন্দেহে একটি ভিন্ন সুর এনেছে। বহু বছর পর প্রকাশ্যে ও সরাসরি রাজনৈতিক বক্তব্যে তিনি যে ভাষা, দৃষ্টিভঙ্গি ও অগ্রাধিকার তুলে ধরেছেন, তা শুধু দলীয় রাজনীতির সীমার মধ্যে আবদ্ধ নয়; বরং এটি সামগ্রিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে। এই বক্তব্যকে কেবল একটি দলের নেতার অবস্থান হিসেবে দেখলে এর তাৎপর্য পুরোপুরি অনুধাবন করা যাবে না। বরং এটিকে বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক সংকটে একটি সম্ভাব্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবেই বিবেচনা করা উচিত যেখানে সংঘাতের বদলে সংলাপ, বিভাজনের বদলে ঐক্য এবং দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের কথা বলার প্রয়াস স্পষ্টভাবে লক্ষ করা যায়। শান্ত স্বরে দৃঢ় বার্তা
তারেক রহমানের বক্তব্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ দিক ছিল এর ভাষা ও সুর। দীর্ঘ ১৭ বছর দেশান্তরে থেকে, ফ্যাসিস্ট হাসিনার জেল-জুলুম, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও নানা প্রতিকূলতা সহ্য করে দেশে ফিরে তিনি যদি প্রতিশোধপরায়ণ, উত্তেজক বা বিভাজনমূলক ভাষা ব্যবহার করতেন, তাহলে তা হয়তো অনেকের কাছেই প্রত্যাশিত মনে হতো। কিন্তু বাস্তবে তিনি তার বিপরীত পথটি বেছে নিয়েছেন। তিনি ছিলেন শান্ত, সংযত ও দায়িত্বশীল। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় যেখানে বক্তব্যের মাধ্যমেই অনেক সময় উত্তেজনা তৈরি হয়, সেখানে এমন সংযত ও পরিমিত উচ্চারণ নিঃসন্দেহে স্বস্তিদায়ক। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বক্তব্য বলতে প্রতিপক্ষের প্রতি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ ও বিদ্বেষমূলক শব্দচয়ন শুনে অভ্যস্ত। সেই প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের বক্তব্য ভদ্রতা, সহনশীলতা ও পরিমিতবোধের এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এতে দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ ও রাষ্ট্রীয় চিন্তার পরিচয়ও স্পষ্ট হয়েছে।
গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের অঙ্গীকার
তারেক রহমান সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসতে হবে গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই। এই অবস্থান কেবল একটি রাজনৈতিক কৌশল নয়; বরং এটি একটি নীতিগত অবস্থান, যা রাষ্ট্র ও সমাজের দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। গণতন্ত্রের পথ ধরে পরিবর্তনের কথা বলা মানে সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতার রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করা। একজন জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতার মুখে শান্তিপূর্ণ পরিবর্তনের এই অঙ্গীকার সমাজে আস্থার জায়গা তৈরি করে। এটি জনগণকে আশ্বস্ত করে যে রাজনীতি কেবল ক্ষমতার লড়াই নয়, বরং এটি হতে পারে দায়িত্বশীল ও শৃঙ্খলাবদ্ধ। জনগণকেন্দ্রিক রাজনীতির পুনরুচ্চারণ
তার বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে একটি শব্দ—“জনগণ”। তিনি রাজনীতিকে ক্ষমতা দখলের খেলা হিসেবে নয়, বরং জনগণের অধিকার, মর্যাদা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার একটি মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরেছেন। বিশেষভাবে তিনি রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন, যা গণতন্ত্রের একটি মৌলিক ভিত্তি।
এই বক্তব্য আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় একটি মৌলিক গণতান্ত্রিক সত্য: সরকার বা বিরোধী দল নয়, রাষ্ট্রের প্রকৃত মালিক জনগণ। দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতিবিদ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তার প্রেক্ষাপটে এ ধরনের জনগণকেন্দ্রিক বক্তব্য মানুষের মধ্যে নতুন করে সম্পৃক্ততার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। রাজনীতির প্রতি যে অনীহা ও হতাশা তৈরি হয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে এ ধরনের ভাষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সহিংস রাজনীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সহিংসতার অধ্যায় নতুন নয়। আন্দোলন, নির্বাচন কিংবা ক্ষমতার পালাবদলের সময় সহিংসতার চর্চা রাজনীতিকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট হয়েছে এবং সমাজে দীর্ঘস্থায়ী বিভাজন তৈরি হয়েছে। এই বাস্তবতায় তারেক রহমানের বক্তব্যে সহিংসতা পরিহারের আহ্বান বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে শত্রুতায় রূপ না দেওয়ার কথা বলেছেন এবং গণতান্ত্রিক নিয়মের মধ্যেই মতপার্থক্য মীমাংসার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এটি শুধু একটি দলের জন্য নয়; বরং সমগ্র রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা।
ঐক্যের বার্তা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি
তারেক রহমানের বক্তব্যে একটি স্পষ্ট ঐক্যের সুর লক্ষ করা যায়। তিনি কেবল দলীয় সমর্থকদের উদ্দেশে কথা বলেননি; বরং সব শ্রেণি-পেশা ও মতাদর্শের মানুষকে রাষ্ট্র গঠনের অংশীদার হিসেবে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। এই অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি বর্তমান সময়ের রাজনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজনৈতিক বিভাজন যখন সামাজিক সম্পর্ক, পরিবার ও কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত প্রভাবিত করে, তখন ঐক্যের বার্তা রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছ থেকেই আসা প্রয়োজন। তার বক্তব্য সেই প্রয়োজনীয় জায়গাটিকেই স্পর্শ করেছে এবং জাতীয় ঐক্যের সম্ভাবনাকে সামনে এনেছে।
রাজনৈতিক পরিপক্বতা ও ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিভঙ্গি
দীর্ঘ সময় সরাসরি দেশের রাজনীতির বাইরে থাকার পরও তার বক্তব্যে যে পরিপক্বতা ও দায়িত্ববোধ ফুটে উঠেছে, তা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি অতীতের বিতর্ক ও অভিযোগে আটকে না থেকে ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন। উন্নয়ন, গণতন্ত্র, প্রতিষ্ঠান শক্তিশালীকরণ ও রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কারের কথা তুলে ধরে তিনি রাজনীতিকে একটি বৃহত্তর জাতীয় প্রেক্ষাপটে দেখার চেষ্টা করেছেন।
এটি প্রমাণ করে যে রাজনীতি কেবল তাৎক্ষণিক লাভ বা ক্ষমতার হিসাব নয়; বরং এটি দীর্ঘমেয়াদি রাষ্ট্রচিন্তা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দায়িত্বশীল পরিকল্পনার বিষয়।
গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা
তার বক্তব্যে সবচেয়ে শক্তিশালী যে বার্তাটি উঠে এসেছে, তা হলো গণতন্ত্রের প্রতি অবিচল আস্থা। নির্বাচন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অধিকার এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতি গঠনের বিষয় তিনি বারবার স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন। এই আস্থা শুধু একটি রাজনৈতিক অবস্থান নয়; বরং এটি জনগণের জন্য একটি আশার জায়গা তৈরি করে। যখন রাজনৈতিক নেতারা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আস্থা রাখেন, তখন সেই আস্থা ধীরে ধীরে সমাজেও প্রতিফলিত হয়। গণতন্ত্রের ওপর মানুষের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে এই ধরনের বক্তব্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
তারেক রহমানের ৩০০ ফিট রাস্তায় দেওয়া এই বক্তব্য নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি ইতিবাচক আলোচনার সূচনা করেছে। এটি কোনো চূড়ান্ত সমাধান নয়; বরং একটি সম্ভাবনার দরজা—যার ভেতর দিয়ে সংলাপ, শান্তি ও জনগণকেন্দ্রিক রাজনীতির পথে এগোনো যেতে পারে।
এই বক্তব্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়, রাজনীতি মানেই সংঘাত নয়; রাজনীতি হতে পারে দায়িত্বশীল, মানবিক ও ভবিষ্যতমুখী। এখন প্রয়োজন এই বক্তব্যের ধারাবাহিকতা, বাস্তব প্রয়োগ এবং সব রাজনৈতিক শক্তির সম্মিলিত সদিচ্ছা। যদি এই ইতিবাচক সুর বাস্তব রাজনীতিতে প্রতিফলিত হয়, তবে তা কেবল একটি দলের জন্য নয়—পুরো বাংলাদেশের জন্যই আশাব্যঞ্জক হবে।
মোঃ জাহিদ হোসেন
উপমহাব্যবস্হাপক
হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজম্যান্ট বিভাগ,
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক।

৫ আগস্ট ধৈর্য পরবর্তী যে ধৈর্য্য দেখিয়েছেন তা মাথায় রাখতে হবে। ৭৫ পরবর্তী ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশে বিশৃঙ্খলার সুযোগে, বাহিনী প্রধান ক্ষমতা হাতে তুলে নিয়েছে। এবারই ব্যতিক্রম
২৬ অক্টোবর ২০২৫
বাঙলাকবিতা থেকে শামসুর রাহমানের প্রস্থান এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করেছে যা কোনো দিন পূরণ হবার নয়।
১৮ আগস্ট ২০২৫
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট। ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসান ঘটে। ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গোটা বিশ্বে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।
০৪ আগস্ট ২০২৫
আজ হুমায়ন আহমেদের ১৩ তম মৃত্যুবার্ষিকী। আজ তাকে গভীরভাবে স্মরণ করেছেন এ প্রজন্মের জনিপ্রিয় নাট্য শফিকুর রহমান শান্তনু। তাঁর ফেসবুক থেকে তুলে ধরা হলো, কেমন ছিলো হুমায়ন আহমেদের নাটকের চরিত্ররা
১৯ জুলাই ২০২৫বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে যে অনিশ্চয়তা, অবিশ্বাস ও মুখোমুখি অবস্থানের সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, তার প্রেক্ষাপটে তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন পরবর্তী প্রথম জনসমাবেশে দেওয়া বক্তব্য নিঃসন্দেহে একটি ভিন্ন সুর এনেছে।
৫ আগস্ট ধৈর্য পরবর্তী যে ধৈর্য্য দেখিয়েছেন তা মাথায় রাখতে হবে। ৭৫ পরবর্তী ২০০৭ সাল পর্যন্ত দেশে বিশৃঙ্খলার সুযোগে, বাহিনী প্রধান ক্ষমতা হাতে তুলে নিয়েছে। এবারই ব্যতিক্রম
বাঙলাকবিতা থেকে শামসুর রাহমানের প্রস্থান এক অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি করেছে যা কোনো দিন পূরণ হবার নয়।
২০১৯ সালের ৫ আগস্ট। ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসান ঘটে। ঐতিহাসিক এই সিদ্ধান্ত নিয়ে গোটা বিশ্বে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছিল।