আব্দুল্লাহ আল মামুন
দিন দিন বেড়েই চলছে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির অপব্যবহার। বিনা সুদে ঋণের টাকায় বাড়িতে আছে দামি গাড়ি। সেই গাড়িতে চড়ছেন স্ত্রী-সন্তান। কেউ কেউ আবার সেই ঋণের গাড়ি খাটাচ্ছেন ভাড়ায়। আর নিয়ম ভেঙে কর্মস্থল থেকে সরকারি গাড়ি বরাদ্দ নিয়ে ব্যবহার করছেন কর্মকর্তা নিজেই। চালক, জ্বালানিসহ এসব গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করছে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সংশ্নিষ্ট দপ্তর বা সংস্থা।
ফলে খরচ কমার বদলে উল্টো এ খাতে সরকারের ব্যয় বেড়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের অন্তত তিন হাজার কর্মকর্তা গাড়ি কেনার সুদহীন এই ঋণসুবিধা নিয়ে অনিয়মের পথেই হেঁটেছেন। এই অনিয়ম রোধে সংশ্নিষ্ট আমলাদের কাছে তিন দফা চিঠি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে। এরপরও পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি নেওয়ার পরও পুলের গাড়ি ব্যবহার অনৈতিক। সরকার যেখানে সাশ্রয়ের জন্য কর্মকর্তাদের গাড়ি দিচ্ছে, সেখানে দুটো করে গাড়ি ব্যবহার এবং দুটোর জন্য আলাদা আলাদা রক্ষণাবেক্ষণ বা জ্বালানি খরচ নেওয়া বেআইনি কাজ। এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এর আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রাধিকারবহির্ভূত গাড়ি ব্যবহার বন্ধ করতে কয়েক দফায় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাঠানো হয়েছে চিঠি। অথচ বিষয়টি আমলে নেয়নি মন্ত্রণালয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের বেশ কিছু কর্মকর্তা সরকারি গাড়ি ব্যবহারে প্রচলিত আইন মানছেন না। এমনকি কোন কোন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর, সংস্থা, ব্যাংক-বিমা, কোম্পানি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়ি চেয়ে আনছেন। এছাড়াও অনেক কর্মকর্তা এখনো সুদমুক্ত গাড়ী ঋণ গ্রহণ ও তার রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেও অনৈতিক ও আইন বহির্ভূতভাবে এসব গাড়ি ব্যবহার করছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের এসব গাড়ি অপব্যবহারের ধরণ বহুমাত্রিক ও অস্বাভাবিক হওয়ায় এখনই যথাযথ নজরদারি না থাকলে দিন দিন লাগামহীন হয়ে পড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
পরিবহন পুল থেকে সচিবের গাড়ি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রশাসনিক কাজসহ নানা যুক্তি দেখিয়ে গাড়ি কেনা বাড়িয়েছে। ফলে খরচ সাশ্রয়ের যুক্তি দেখিয়ে আমলাদের জন্য সুদমুক্ত গাড়ির ঋণ চালু হলেও তা বিফলে গেছে। ২০১৭ সাল থেকে উপসচিবদেরও এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে। শুরুতে গাড়ি কিনতে ২০ লাখ টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণ, তেল ও চালকের বেতন বাবদ মাসে ৩০ হাজার টাকা পেতেন কর্মকর্তারা। ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে গাড়ি কিনতে ৩০ লাখ টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণ, তেল ও চালকের বেতন বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা দিচ্ছে সরকার। জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা আরও ২৫০ লিটার পেট্রোল বা অকটেন পাচ্ছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছেন প্রায় ৪ হাজার কর্মকর্তা। এর মধ্যে অধিকাংশ কর্মকর্তা অবৈধভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। এতে চালক, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে ২১ কোটি টাকা। সে হিসাবে বছরে সরকারের বাড়তি খরচ হচ্ছে ২৫২ কোটি টাকা। আবার কার ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করছেন সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি কেনা কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তর ও প্রকল্পের গাড়িতে চড়ছেন উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবরা। অনেক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়ায় খাটানোর অভিযোগও রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ ব্যবহার করছেন ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা দামের বিলাসবহুল জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৮৪৪০৪) ল্যান্ড ক্রুজার ভিএক্স-ভিএইট। ইঞ্জিনের ধারণক্ষমতা (সিসি) ৪ হাজার ৫০০। ২০১৮ সালে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সময়ে বরাদ্দের ৭ গুণ দামে এই গাড়ি কেনা হয়। একই ব্র্যান্ডের পরিবহন পুলের জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩৬৫২৩) ব্যবহার করছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান। পরিবহন পুল থেকে ২০২১ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সচিব কেএম আলী আজম এই গাড়ি নেন। এর পর যিনিই মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন সচিব হচ্ছেন, তিনি এই দুই গাড়ির বরাদ্দ ছাড়ছেন না।
খাদ্য সচিব মাসুদুল হাসান ব্যবহার করছেন মন্ত্রণালয়ের জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৫৬৩৪৭)। তাঁর পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করেন খাদ্য অধিদপ্তরের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ-১২২১০৭)। তাঁর পিএস চলেন অধিদপ্তরের বাহন (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৪১৮৬২)। এসব গাড়ির জ্বালানি খরচ দেয় খাদ্য অধিদপ্তর। গাড়ির চালক খাদ্য অধিদপ্তরের জিল্লুর, দ্বীন ইসলাম ও কামাল। খাদ্য অধিদপ্তরের এমন ৯ চালক মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। চালক কামাল বলেন, ‘আমি সচিব স্যারের বাসায় গাড়ি চালাই। দ্বীন ইসলাম পিএসের এবং জিল্লুর সচিবের গাড়িচালক।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব কামরুল হাসান রোহিঙ্গাদের জন্য নেওয়া জাতিসংঘের একটি প্রকল্পের গাড়ি (অজ-২০১০৫) ব্যবহার করছেন। তাঁর পিএস দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩৩৬৫৪) চড়ছেন। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, অধিদপ্তরে গাড়ির অনেক সংকট। এর মধ্যেও মন্ত্রণালয়কে গাড়ি সরবরাহ করতে হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মুশফিকুর রহমান ব্যবহার করছেন টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩৫৬৯০)। তাঁর পিএস চড়েন বিটিসিএলের গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৭০০০৮)। রেলপথ সচিব ফাহিমুল ইসলাম ব্যবহার করছেন প্রকল্পের বড় জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৮৫৪৩১)। রেলপথ সচিব দপ্তরের ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও বিভিন্ন প্রকল্পের গাড়িতে চড়ছেন।
সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পরিবহন কমিশনার আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর বলেন, সচিবদের গাড়ি ব্যবহার বিষয়ে আইন আছে কিনা, জানি না। তবে সচিবরা পুলের গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। এখন শুধু জনপ্রশাসন সচিব ব্যবহার করছেন। অন্য সচিবরা নিজেদের মন্ত্রণালয়ের একাধিক গাড়ি হয়তো ব্যবহার করছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি অপব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান নিখাদ খবরকে বলেন, সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে যারা গাড়ি কিনেছেন, আবার সবার জন্য যে গাড়ি তাও ব্যবহার করছেন মূল অনিয়মের বিষয়টি এখানে।
তিনি বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তারা এ ধরনের ঋণই পান না, যেহেতু তারা উপসচিব নন। তবে প্রকল্প শেষ হওয়ার পর পরিবহন পুলে গাড়ি জমা দেওয়ার যে বিধান আছে, মাঝেমধ্যেই তার ব্যত্যয় হয় বলে শোনা যায়। আমার দপ্তরের আওতাধীন কোনো প্রকল্পের গাড়ির ক্ষেত্রে এ ব্যত্যয় হতে দেব না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতাসহ ছয় ব্যাংক এবং বিশেষায়িত আরও ১০ ব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সাধারণ বীমা করপোরেশন, জীবন বীমা করপোরেশন, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি সংস্থা। এসব ব্যাংক ও সংস্থার গাড়ি নিয়মিতভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ব্যবহার করার উদাহরণ আছে বলে জানা গেছে।
দিন দিন বেড়েই চলছে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির অপব্যবহার। বিনা সুদে ঋণের টাকায় বাড়িতে আছে দামি গাড়ি। সেই গাড়িতে চড়ছেন স্ত্রী-সন্তান। কেউ কেউ আবার সেই ঋণের গাড়ি খাটাচ্ছেন ভাড়ায়। আর নিয়ম ভেঙে কর্মস্থল থেকে সরকারি গাড়ি বরাদ্দ নিয়ে ব্যবহার করছেন কর্মকর্তা নিজেই। চালক, জ্বালানিসহ এসব গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করছে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সংশ্নিষ্ট দপ্তর বা সংস্থা।
ফলে খরচ কমার বদলে উল্টো এ খাতে সরকারের ব্যয় বেড়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের অন্তত তিন হাজার কর্মকর্তা গাড়ি কেনার সুদহীন এই ঋণসুবিধা নিয়ে অনিয়মের পথেই হেঁটেছেন। এই অনিয়ম রোধে সংশ্নিষ্ট আমলাদের কাছে তিন দফা চিঠি দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনও (দুদক) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে। এরপরও পরিস্থিতির কোন উন্নতি হয়নি। সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি নেওয়ার পরও পুলের গাড়ি ব্যবহার অনৈতিক। সরকার যেখানে সাশ্রয়ের জন্য কর্মকর্তাদের গাড়ি দিচ্ছে, সেখানে দুটো করে গাড়ি ব্যবহার এবং দুটোর জন্য আলাদা আলাদা রক্ষণাবেক্ষণ বা জ্বালানি খরচ নেওয়া বেআইনি কাজ। এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এর আওতাধীন দপ্তর বা সংস্থার কর্মকর্তাদের প্রাধিকারবহির্ভূত গাড়ি ব্যবহার বন্ধ করতে কয়েক দফায় নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাঠানো হয়েছে চিঠি। অথচ বিষয়টি আমলে নেয়নি মন্ত্রণালয়।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারের বেশ কিছু কর্মকর্তা সরকারি গাড়ি ব্যবহারে প্রচলিত আইন মানছেন না। এমনকি কোন কোন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যৌক্তিক কারণ ছাড়াই বিভিন্ন দপ্তর, অধিদপ্তর, সংস্থা, ব্যাংক-বিমা, কোম্পানি ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান থেকে গাড়ি চেয়ে আনছেন। এছাড়াও অনেক কর্মকর্তা এখনো সুদমুক্ত গাড়ী ঋণ গ্রহণ ও তার রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ৫০ হাজার টাকা গ্রহণ করেও অনৈতিক ও আইন বহির্ভূতভাবে এসব গাড়ি ব্যবহার করছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের এসব গাড়ি অপব্যবহারের ধরণ বহুমাত্রিক ও অস্বাভাবিক হওয়ায় এখনই যথাযথ নজরদারি না থাকলে দিন দিন লাগামহীন হয়ে পড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা।
পরিবহন পুল থেকে সচিবের গাড়ি সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পর বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ প্রশাসনিক কাজসহ নানা যুক্তি দেখিয়ে গাড়ি কেনা বাড়িয়েছে। ফলে খরচ সাশ্রয়ের যুক্তি দেখিয়ে আমলাদের জন্য সুদমুক্ত গাড়ির ঋণ চালু হলেও তা বিফলে গেছে। ২০১৭ সাল থেকে উপসচিবদেরও এ ঋণ দেওয়া হচ্ছে। শুরুতে গাড়ি কিনতে ২০ লাখ টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণ, তেল ও চালকের বেতন বাবদ মাসে ৩০ হাজার টাকা পেতেন কর্মকর্তারা। ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে গাড়ি কিনতে ৩০ লাখ টাকা এবং রক্ষণাবেক্ষণ, তেল ও চালকের বেতন বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা দিচ্ছে সরকার। জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তারা আরও ২৫০ লিটার পেট্রোল বা অকটেন পাচ্ছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, সরকারিভাবে সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছেন প্রায় ৪ হাজার কর্মকর্তা। এর মধ্যে অধিকাংশ কর্মকর্তা অবৈধভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। এতে চালক, জ্বালানি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ প্রতি মাসে খরচ হচ্ছে ২১ কোটি টাকা। সে হিসাবে বছরে সরকারের বাড়তি খরচ হচ্ছে ২৫২ কোটি টাকা। আবার কার ও মাইক্রোবাস ব্যবহার করছেন সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি কেনা কর্মকর্তারা। একই সঙ্গে বিভিন্ন দপ্তর ও প্রকল্পের গাড়িতে চড়ছেন উপসচিব, যুগ্ম সচিব ও অতিরিক্ত সচিবরা। অনেক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়ি ভাড়ায় খাটানোর অভিযোগও রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ ব্যবহার করছেন ৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা দামের বিলাসবহুল জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৮৪৪০৪) ল্যান্ড ক্রুজার ভিএক্স-ভিএইট। ইঞ্জিনের ধারণক্ষমতা (সিসি) ৪ হাজার ৫০০। ২০১৮ সালে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের সময়ে বরাদ্দের ৭ গুণ দামে এই গাড়ি কেনা হয়। একই ব্র্যান্ডের পরিবহন পুলের জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩৬৫২৩) ব্যবহার করছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোখলেস উর রহমান। পরিবহন পুল থেকে ২০২১ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন জ্যেষ্ঠ সচিব কেএম আলী আজম এই গাড়ি নেন। এর পর যিনিই মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন সচিব হচ্ছেন, তিনি এই দুই গাড়ির বরাদ্দ ছাড়ছেন না।
খাদ্য সচিব মাসুদুল হাসান ব্যবহার করছেন মন্ত্রণালয়ের জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৫৬৩৪৭)। তাঁর পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করেন খাদ্য অধিদপ্তরের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ-১২২১০৭)। তাঁর পিএস চলেন অধিদপ্তরের বাহন (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৪১৮৬২)। এসব গাড়ির জ্বালানি খরচ দেয় খাদ্য অধিদপ্তর। গাড়ির চালক খাদ্য অধিদপ্তরের জিল্লুর, দ্বীন ইসলাম ও কামাল। খাদ্য অধিদপ্তরের এমন ৯ চালক মন্ত্রণালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। চালক কামাল বলেন, ‘আমি সচিব স্যারের বাসায় গাড়ি চালাই। দ্বীন ইসলাম পিএসের এবং জিল্লুর সচিবের গাড়িচালক।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব কামরুল হাসান রোহিঙ্গাদের জন্য নেওয়া জাতিসংঘের একটি প্রকল্পের গাড়ি (অজ-২০১০৫) ব্যবহার করছেন। তাঁর পিএস দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩৩৬৫৪) চড়ছেন। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, অধিদপ্তরে গাড়ির অনেক সংকট। এর মধ্যেও মন্ত্রণালয়কে গাড়ি সরবরাহ করতে হয়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মুশফিকুর রহমান ব্যবহার করছেন টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৩৫৬৯০)। তাঁর পিএস চড়েন বিটিসিএলের গাড়িতে (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৭০০০৮)। রেলপথ সচিব ফাহিমুল ইসলাম ব্যবহার করছেন প্রকল্পের বড় জিপ (ঢাকা মেট্রো ঘ-১৮৫৪৩১)। রেলপথ সচিব দপ্তরের ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও বিভিন্ন প্রকল্পের গাড়িতে চড়ছেন।
সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরের পরিবহন কমিশনার আবুল হাছানাত হুমায়ুন কবীর বলেন, সচিবদের গাড়ি ব্যবহার বিষয়ে আইন আছে কিনা, জানি না। তবে সচিবরা পুলের গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। এখন শুধু জনপ্রশাসন সচিব ব্যবহার করছেন। অন্য সচিবরা নিজেদের মন্ত্রণালয়ের একাধিক গাড়ি হয়তো ব্যবহার করছেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি অপব্যবহার সম্পর্কে জানতে চাইলে আইআরডি সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান নিখাদ খবরকে বলেন, সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে যারা গাড়ি কিনেছেন, আবার সবার জন্য যে গাড়ি তাও ব্যবহার করছেন মূল অনিয়মের বিষয়টি এখানে।
তিনি বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তারা এ ধরনের ঋণই পান না, যেহেতু তারা উপসচিব নন। তবে প্রকল্প শেষ হওয়ার পর পরিবহন পুলে গাড়ি জমা দেওয়ার যে বিধান আছে, মাঝেমধ্যেই তার ব্যত্যয় হয় বলে শোনা যায়। আমার দপ্তরের আওতাধীন কোনো প্রকল্পের গাড়ির ক্ষেত্রে এ ব্যত্যয় হতে দেব না।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতাসহ ছয় ব্যাংক এবং বিশেষায়িত আরও ১০ ব্যাংক রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে সাধারণ বীমা করপোরেশন, জীবন বীমা করপোরেশন, বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি সংস্থা। এসব ব্যাংক ও সংস্থার গাড়ি নিয়মিতভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ব্যবহার করার উদাহরণ আছে বলে জানা গেছে।
চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয় লেন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। আধুনিক, প্রযুক্তি নির্ভর টেকসই মহাসড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু হলেও কাজের কোন অগ্রগতি নেই। ভৌত কাজ বাস্তবায়ন, পুনর্বাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, আয় ও জীবিকা পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্
১ দিন আগেজামালপুরের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক ঘুষ-লেনদেনের বিষয়টি ধামাপাচা দেয়ার চেষ্টা করছে অধিদপ্তরের কর্মকার্তারা। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-"জামালপুরের খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ঘুঘ-লেনদেনের অডিও ফাঁস" এই শিরনামে একটি নিউজ প্রাকাশিত হলেও এ বিষয়ে তারা কেউ কিছু জানেন না।
৪ দিন আগেসাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে গত কয়েক মাসে ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতার হার বেড়েছে, যা জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচারহীনতা, সামাজিক অবক্ষয় ও আইন প্রয়োগের দুর্বলতার কারণে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে
৪ দিন আগেসারাদেশে বাড়ছে মব জাস্টিস বা উন্মত্ত জনতার বিচার। মব জাস্টিসের নামে যেটা ঘটছে সেটা ভয়াবহ। এটাকে বিচার বলতে চান না কেউ। বিচার একটি পজিটিভ শব্দ। যে বিচারের অর্থ হয়ে উঠেছে গণপিটুনি, অপমান, হত্যা কিংবা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা। এতে করে বাড়ছে সারা দেশে আতংক।
১০ দিন আগেচলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয় লেন প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। আধুনিক, প্রযুক্তি নির্ভর টেকসই মহাসড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ শুরু হলেও কাজের কোন অগ্রগতি নেই। ভৌত কাজ বাস্তবায়ন, পুনর্বাসন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, আয় ও জীবিকা পুনর্বাসন কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং সড়ক নিরাপত্তা নিশ্
দিন দিন বেড়েই চলছে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ির অপব্যবহার। বিনা সুদে ঋণের টাকায় বাড়িতে আছে দামি গাড়ি। সেই গাড়িতে চড়ছেন স্ত্রী-সন্তান। কেউ কেউ আবার সেই ঋণের গাড়ি খাটাচ্ছেন ভাড়ায়। আর নিয়ম ভেঙে কর্মস্থল থেকে সরকারি গাড়ি বরাদ্দ নিয়ে ব্যবহার করছেন কর্মকর্তা নিজেই। চালক, জ্বালানিসহ এসব গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করছে
জামালপুরের ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক ঘুষ-লেনদেনের বিষয়টি ধামাপাচা দেয়ার চেষ্টা করছে অধিদপ্তরের কর্মকার্তারা। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-"জামালপুরের খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ঘুঘ-লেনদেনের অডিও ফাঁস" এই শিরনামে একটি নিউজ প্রাকাশিত হলেও এ বিষয়ে তারা কেউ কিছু জানেন না।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ধর্ষণের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে গত কয়েক মাসে ধর্ষণসহ নারীর প্রতি সহিংসতার হার বেড়েছে, যা জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিচারহীনতা, সামাজিক অবক্ষয় ও আইন প্রয়োগের দুর্বলতার কারণে অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে