মোঃ মাজহারুল পারভেজ
সারাদেশে বাড়ছে মব জাস্টিস বা উন্মত্ত জনতার বিচার। মব জাস্টিসের নামে যেটা ঘটছে সেটা ভয়াবহ। এটাকে বিচার বলতে চান না কেউ। বিচার একটি পজিটিভ শব্দ। যে বিচারের অর্থ হয়ে উঠেছে গণপিটুনি, অপমান, হত্যা কিংবা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা। এতে করে বাড়ছে সারা দেশে আতংক। ২০২৪ সালে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য সুত্রে ১৪৬ মানুষ গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। গত ০৫ আগস্টের পর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ১৩৯ জন।
বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় কিছু ব্যক্তি এসব ঘটনার ইন্ধন জোগাচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা একটা বড় কারণ। হয়তো ইচ্ছা করেই এ বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। সর্বোপরি সরকারের উদাসীনতা ও কোনো পদক্ষেপ নিতে অনীহার কারণেই বেড়ে যাচ্ছে গণপিটুনি বা মব জাস্টিজ প্রবণতা।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রশাসনের নাগের ডগায় অহরহ ঘটছে এমন অসংখ্য ঘটনা। শুধু তাই নয় এখন প্রশাসনের লোকেরাও এই মব জাস্টিজের শিকার হচ্ছেন। কোনো ঘটনার পূর্বাপর না ভেবে জনতা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কী করতে হবে কিংবা না বুঝেই ছুটছে ঘটনার পেছনে। যার ফলাফল হত্যা, হেনস্তা কিংবা লাঞ্ছনা। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও মব জাস্টিসের নামে মারামারি, অত্যাচার কিংবা হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। কিন্তু যারা এসব কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তেমন উদাহরণও দেখা যাচ্ছে না।অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ঘটনায় সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি, আইনের শাসনের প্রতি অনীহা এবং ভবিষ্যতে প্রতিশোধ স্পৃহা তৈরি করতে পারে। যে কোনো মূল্যে এসব ঘটনা ঠেকানো না গেলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ধামরাইয়ে স্ত্রীর সামনে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার বড় কুশিয়াড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত মোহাম্মদ বাবুল মিয়া কুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ- সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য।
নিহত বাবুল মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম জানান দুপুরে আমি ও আমার স্বামী আকশীরনগর হাউজিংয়ের ভেতর সরিষা মাড়াই করছিলাম। এ সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী আফসার, আরশাদ, মনিরসহ আরও ৪-৫ জন লাঠি ও পাইপ দিয়ে আমার সামনে আমার স্বামীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে ও চোখ উপড়ে দেয়।'
সোমবার (৩ মার্চ) বগুড়ায় পারভেজ (২৫) নামে এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় কুপিয়ে তার বন্ধু আতিকুরকে (২২) আহত করা হয়। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বগুড়া শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মালতিনগর খন্দকারপাড়ার উল্কা মাঠ সংলগ্ন আর্ট কলেজের পাশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
সোমবার (৩ মার্চ) চট্টগ্রামে মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রাত ১০টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক। দুজনই জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলে জানায় স্থানীয়রা।
এদিকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে নানাভাবে হেনস্তা করছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। তাঁর দুই হাত এমনভাবে শক্ত করে ধরে রেখেছে, যাতে তিনি নড়াচড়ার করতে না পারেন। পেছন দিক থেকে একজনকে তাঁর চুল ধরে টানতে দেখা যায়। কেউ তাঁর পোশাক খুলে ফেলতে বলছিল। কেউ তাঁর প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে তল্লাশি করছিল। তাঁর মুঠোফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যেতে দেখা যায় উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে।
ইউসুফ বারবার চিৎকার করে বলছিলেন আমি পুলিশ। আমি পতেঙ্গা থানার পুলিশ কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল জনতা ইউসুফের কথা মানতে চাচ্ছিল না। তারা তাঁকে ভূয়া বলছিল। উচ্ছৃঙ্খল জনতার মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়,ভালো করে ভিডিও কর।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পতেঙ্গায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মব তৈরি করে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ইউসুফকে মারধরের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মোট ১২ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ত্রাস সৃষ্টি করে এসআই ইউসুফকে হেনস্তাসহ তাঁর মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও ওয়াকিটকি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত। তাঁরা মাদক সেবন ও ছিনতাইয়ে জড়িত। এসআই ইউসুফকে হেনস্তার ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা হয়েছে।
কেউ যেন আইন নিজ হাতে তুলে না নেয়, সে জন্য সবাইকে সতর্ক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মবের প্রতিটি ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
গত মঙ্গলবার গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে পিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে টঙ্গীর স্টেশনরোড এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে নিহত ওই যুবকের নাম–ঠিকানা জানাতে পারেনি পুলিশ।
পরে তাঁকে স্টেশনরোডসংলগ্ন একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে পিটুনি দেন উপস্থিত লোকজন। এ সময় ওই যুবকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
গত শুক্রবার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মৎস্যঘেরের জমির বিরোধ নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে একটি সালিস বৈঠকের প্রস্তুতি চলছিল। বৈঠক শুরু আগেই দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মহিউদ্দিন মহারাজ (৫০) নামের এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
গত ৬ আগস্ট গভীর রাতে কুমিল্লার তিতাস থানা-পুলিশের দুই সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। স্থানীয় উৎসুক জনতা তিতাস থানা ঘেরাও করতে গেলে থানা-পুলিশ আত্মরক্ষার্থে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানায় পৌঁছে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন।
৩১ আগস্ট চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গণপিটুনিতে মো. রফিক নামে এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়। জানা যায়, ডাকাত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন বিএনপি নেতা ও তার সহযোগীদের আটক করে গণপিটুনি দেন।
সম্প্রতি রাজধানীর শ্যামলীতে ভ্রাম্যমাণ যৌনকর্মী সন্দেহে কয়েকজন নারীকে মারধর করে এইচ এম রাসেল সুলতান নামে এক ব্যক্তি নিজের ফেসবুক আইডিতে ভিডিও প্রকাশ করে। কক্সবাজার সৈকতে এক নারীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আমরা অবশ্যই তাকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।
এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেস্ট রুমে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন শামীম মোল্লা নামে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা। কিছুদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতাকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের (২০২৪) আগস্ট থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত গণপিটুনিতে ১২১ জন নিহত হয়েছেন।
আরেক মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে দেশে গণপিটুনিতে সর্বোচ্চ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে গত বছর। ২০২৪ সালে গণপিটুনিতে নিহত হন ১৪৬ জন, যা আগের বছরের প্রায় তিন গুণ। ২০২৩ সালে নিহত হয়েছিলেন ৫১ জন।
মানবাধিকারকর্মীদের মতে, গত ৫ আগস্টের পর মব ভায়োলেন্স বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতার পরিমাণ বেড়ে গেছে। সরকার তা বন্ধ করতে তেমন পদক্ষেপ নেয়নি। কখনো কখনো কাউকে জোর করে কোনো পদ থেকে নামিয়ে দেওয়াসহ নানাভাবে মবের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। এ কারণেই বেড়েছে এসব মবকেন্দ্রিক সহিংসতা বা গণপিটুনি।
সারাদেশে বাড়ছে মব জাস্টিস বা উন্মত্ত জনতার বিচার। মব জাস্টিসের নামে যেটা ঘটছে সেটা ভয়াবহ। এটাকে বিচার বলতে চান না কেউ। বিচার একটি পজিটিভ শব্দ। যে বিচারের অর্থ হয়ে উঠেছে গণপিটুনি, অপমান, হত্যা কিংবা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা। এতে করে বাড়ছে সারা দেশে আতংক। ২০২৪ সালে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য সুত্রে ১৪৬ মানুষ গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। গত ০৫ আগস্টের পর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ১৩৯ জন।
বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় কিছু ব্যক্তি এসব ঘটনার ইন্ধন জোগাচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা একটা বড় কারণ। হয়তো ইচ্ছা করেই এ বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। সর্বোপরি সরকারের উদাসীনতা ও কোনো পদক্ষেপ নিতে অনীহার কারণেই বেড়ে যাচ্ছে গণপিটুনি বা মব জাস্টিজ প্রবণতা।
দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রশাসনের নাগের ডগায় অহরহ ঘটছে এমন অসংখ্য ঘটনা। শুধু তাই নয় এখন প্রশাসনের লোকেরাও এই মব জাস্টিজের শিকার হচ্ছেন। কোনো ঘটনার পূর্বাপর না ভেবে জনতা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কী করতে হবে কিংবা না বুঝেই ছুটছে ঘটনার পেছনে। যার ফলাফল হত্যা, হেনস্তা কিংবা লাঞ্ছনা। প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও মব জাস্টিসের নামে মারামারি, অত্যাচার কিংবা হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকেও বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। কিন্তু যারা এসব কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার তেমন উদাহরণও দেখা যাচ্ছে না।অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব ঘটনায় সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরি, আইনের শাসনের প্রতি অনীহা এবং ভবিষ্যতে প্রতিশোধ স্পৃহা তৈরি করতে পারে। যে কোনো মূল্যে এসব ঘটনা ঠেকানো না গেলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার ধামরাইয়ে স্ত্রীর সামনে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার বড় কুশিয়াড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহত মোহাম্মদ বাবুল মিয়া কুল্লা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ- সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য।
নিহত বাবুল মিয়ার স্ত্রী ইয়াসমিন বেগম জানান দুপুরে আমি ও আমার স্বামী আকশীরনগর হাউজিংয়ের ভেতর সরিষা মাড়াই করছিলাম। এ সময় স্থানীয় সন্ত্রাসী আফসার, আরশাদ, মনিরসহ আরও ৪-৫ জন লাঠি ও পাইপ দিয়ে আমার সামনে আমার স্বামীকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে ও চোখ উপড়ে দেয়।'
সোমবার (৩ মার্চ) বগুড়ায় পারভেজ (২৫) নামে এক যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় কুপিয়ে তার বন্ধু আতিকুরকে (২২) আহত করা হয়। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বগুড়া শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের মালতিনগর খন্দকারপাড়ার উল্কা মাঠ সংলগ্ন আর্ট কলেজের পাশে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
সোমবার (৩ মার্চ) চট্টগ্রামে মাইকে ডাকাত ঘোষণা দিয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। রাত ১০টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- নেজাম উদ্দিন ও আবু ছালেক। দুজনই জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলে জানায় স্থানীয়রা।
এদিকে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী একটি ভিডিওতে দেখা যায়, পুলিশের পোশাক পরা এক ব্যক্তিকে নানাভাবে হেনস্তা করছে উচ্ছৃঙ্খল জনতা। তাঁর দুই হাত এমনভাবে শক্ত করে ধরে রেখেছে, যাতে তিনি নড়াচড়ার করতে না পারেন। পেছন দিক থেকে একজনকে তাঁর চুল ধরে টানতে দেখা যায়। কেউ তাঁর পোশাক খুলে ফেলতে বলছিল। কেউ তাঁর প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে তল্লাশি করছিল। তাঁর মুঠোফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে যেতে দেখা যায় উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে।
ইউসুফ বারবার চিৎকার করে বলছিলেন আমি পুলিশ। আমি পতেঙ্গা থানার পুলিশ কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল জনতা ইউসুফের কথা মানতে চাচ্ছিল না। তারা তাঁকে ভূয়া বলছিল। উচ্ছৃঙ্খল জনতার মধ্যে একজনকে বলতে শোনা যায়,ভালো করে ভিডিও কর।
গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পরিচালক) ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পতেঙ্গায় ২৮ ফেব্রুয়ারি মব তৈরি করে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য ইউসুফকে মারধরের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মোট ১২ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে ত্রাস সৃষ্টি করে এসআই ইউসুফকে হেনস্তাসহ তাঁর মুঠোফোন, মানিব্যাগ ও ওয়াকিটকি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িত। তাঁরা মাদক সেবন ও ছিনতাইয়ে জড়িত। এসআই ইউসুফকে হেনস্তার ঘটনায় পতেঙ্গা থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা হয়েছে।
কেউ যেন আইন নিজ হাতে তুলে না নেয়, সে জন্য সবাইকে সতর্ক করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মবের প্রতিটি ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
গত মঙ্গলবার গাজীপুরের টঙ্গীতে ছিনতাইকারী সন্দেহে পিটুনিতে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে টঙ্গীর স্টেশনরোড এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। প্রাথমিকভাবে নিহত ওই যুবকের নাম–ঠিকানা জানাতে পারেনি পুলিশ।
পরে তাঁকে স্টেশনরোডসংলগ্ন একটি ফাঁকা জায়গায় নিয়ে পিটুনি দেন উপস্থিত লোকজন। এ সময় ওই যুবকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে।
গত শুক্রবার বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মৎস্যঘেরের জমির বিরোধ নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে একটি সালিস বৈঠকের প্রস্তুতি চলছিল। বৈঠক শুরু আগেই দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় মহিউদ্দিন মহারাজ (৫০) নামের এক কৃষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
গত ৬ আগস্ট গভীর রাতে কুমিল্লার তিতাস থানা-পুলিশের দুই সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। স্থানীয় উৎসুক জনতা তিতাস থানা ঘেরাও করতে গেলে থানা-পুলিশ আত্মরক্ষার্থে এলোপাতাড়ি গুলি করে। এতে কমপক্ষে ৩০ জন গুলিবিদ্ধ হন। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা থানায় পৌঁছে পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন।
৩১ আগস্ট চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে গণপিটুনিতে মো. রফিক নামে এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়। জানা যায়, ডাকাত সন্দেহে স্থানীয় লোকজন বিএনপি নেতা ও তার সহযোগীদের আটক করে গণপিটুনি দেন।
সম্প্রতি রাজধানীর শ্যামলীতে ভ্রাম্যমাণ যৌনকর্মী সন্দেহে কয়েকজন নারীকে মারধর করে এইচ এম রাসেল সুলতান নামে এক ব্যক্তি নিজের ফেসবুক আইডিতে ভিডিও প্রকাশ করে। কক্সবাজার সৈকতে এক নারীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। আইন নিজের হাতে তুলে নিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে আমরা অবশ্যই তাকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।
এরপর ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেস্ট রুমে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন শামীম মোল্লা নামে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা। কিছুদিন আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতাকেও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) হিসাব অনুযায়ী, গত বছরের (২০২৪) আগস্ট থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত গণপিটুনিতে ১২১ জন নিহত হয়েছেন।
আরেক মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে দেশে গণপিটুনিতে সর্বোচ্চ নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে গত বছর। ২০২৪ সালে গণপিটুনিতে নিহত হন ১৪৬ জন, যা আগের বছরের প্রায় তিন গুণ। ২০২৩ সালে নিহত হয়েছিলেন ৫১ জন।
মানবাধিকারকর্মীদের মতে, গত ৫ আগস্টের পর মব ভায়োলেন্স বা উচ্ছৃঙ্খল জনতার সহিংসতার পরিমাণ বেড়ে গেছে। সরকার তা বন্ধ করতে তেমন পদক্ষেপ নেয়নি। কখনো কখনো কাউকে জোর করে কোনো পদ থেকে নামিয়ে দেওয়াসহ নানাভাবে মবের সাহায্য নেওয়া হয়েছে। এ কারণেই বেড়েছে এসব মবকেন্দ্রিক সহিংসতা বা গণপিটুনি।
জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ২০ কোটি টাকার প্লট হাতিয়ে নিতে এসে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) হাতে ধরা পড়লেন নিবন্ধক অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিআর) খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান।
২ দিন আগেএক বহুমুখী প্রতারকের নাম আবু সাদেক। যিনি এসএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গত ২ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু তিন দিনের মাথায় তিনি আবার জামিনে মুক্তি পান। ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে
৩ দিন আগেশনিবার মধ্যরাতে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বের মেয়াদ শেষ হয়। এরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় নতুন করে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকরে রাজি থাকার কথা জানায়।
৪ দিন আগেসারাদেশে বাড়ছে মব জাস্টিস বা উন্মত্ত জনতার বিচার। মব জাস্টিসের নামে যেটা ঘটছে সেটা ভয়াবহ। এটাকে বিচার বলতে চান না কেউ। বিচার একটি পজিটিভ শব্দ। যে বিচারের অর্থ হয়ে উঠেছে গণপিটুনি, অপমান, হত্যা কিংবা আইনের প্রতি অশ্রদ্ধা। এতে করে বাড়ছে সারা দেশে আতংক।
জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ২০ কোটি টাকার প্লট হাতিয়ে নিতে এসে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) হাতে ধরা পড়লেন নিবন্ধক অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিআর) খান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান।
এক বহুমুখী প্রতারকের নাম আবু সাদেক। যিনি এসএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। গত ২ ফেব্রুয়ারি অভিযান চালিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু তিন দিনের মাথায় তিনি আবার জামিনে মুক্তি পান। ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে
শনিবার মধ্যরাতে গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্বের মেয়াদ শেষ হয়। এরপরই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় নতুন করে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকরে রাজি থাকার কথা জানায়।