রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার গণকপাড়ায় হোটেল পদ্মাসহ কয়েকটি আবাসিক হোটেল দীর্ঘদিন ধরে দেহ ব্যবসা ও মাদক সেবনের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে শিক্ষা নগরীতে অন্যান্য জেলার কলেজ শিক্ষার্থীরা ইয়াবা ও অন্যান্য নিষিদ্ধ মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। হোটেলগুলো তরুণ–তরুণীদের ‘রুম ডেটিং’ বা ব্যক্তিগত সম্পর্কের আশ্রয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হোটেল মালিক আজাদ প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে দীর্ঘদিন ধরে এই কার্যক্রম চালাচ্ছেন। হোটেল পদ্মার আশপাশে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও নিয়মিত কোনো অভিযান হয়নি। কিছু বছর আগে ডিবি পুলিশ একবার অভিযান চালালেও থানা বা ফাঁড়ি পুলিশের উপস্থিতি চোখে পড়েনি। স্থানীয়রা জানান, রাজশাহীর অন্যান্য আবাসিক হোটেলের মতো হোটেল পদ্মাতেও ছাত্র-ছাত্রীরা অবাধে প্রবেশ ও বের হচ্ছে, আর প্রশাসনের নিয়মিত তদারকি না থাকায় তারা সহজেই বিপথগামী হচ্ছে।

হোটেল মালিক আজাদ স্বীকার করেছেন, তিনি প্রশাসন ও স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতায় ব্যবসা চালাচ্ছেন এবং বর্তমানে মাত্র দুইজন নারী কর্মী রেখেছেন। তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো রাখার কারণে তার ব্যবসা নির্বিঘ্নে চলছে।

ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, আজাদকে একাধিকবার আটক করা হয়েছে। তিনি প্রশাসনকে বিভ্রান্ত করতে হোটেলের নাম বা অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। মামলাও চলমান, তবে জামিনে বের হয়ে একই কার্যক্রম আবার শুরু করেছেন। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, আজাদের মধ্যে লজ্জা বা অনুশোচনার কোনো চিহ্ন দেখা যায় না।

রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পুলিশ কমিশনার মাঈনুল ইসলাম বলেন, “আমাদের অভিযান নিয়মিত চলছে। প্রতি মাসে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়। খুব শিগগিরই হোটেল পদ্মাসহ সংশ্লিষ্ট স্থানে অভিযান হবে।”

স্থানীয়রা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, দেহ ব্যবসা ও মাদক লেনদেনের কারণে বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। তারা যুব সমাজকে বিপথগামী হওয়া থেকে রক্ষার জন্য দ্রুত প্রশাসনিক অভিযান, সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার এবং হোটেলসহ জড়িত বাণিজ্যিক স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।