নারীর ইজ্জত লুটের অবিশ্বাস্য কাহিনী

প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৫, ১৫: ০৬
Thumbnail image
ছবি: সংগৃহীত

মুতা বিয়ার নামে কুমারীদের ইজ্জত নষ্ট করছে ধনাঢ্য এক শিল্পপতি। টানা ২০ বছর ধরে খোদ রাজধানীতে এ অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন তিনি। সব কিছু হারিয়ে তথ্য প্রমাণ থাকার পরও লোক লজ্জার ভয়ে বিচার চাইতে পারেনি ভুক্তভোগী নারীরা। মোটা অঙ্কের বেতন ও আকর্ষণীয় সুযোগ সুবিধার কথা বলে চাকুরি লোভ দেখান তিনি। এ প্রলোভনে আকৃষ্ট হয়ে তার এখানে চাকুরিতে যোগদান করে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করা স্মার্ট কুমারীরা। কিছুদিন যেতে না যেতেই পরে বের হয় তার আসল রূপ। নানা কৌশলে ফাঁদে ফেলে কুমারীর সর্বস্ব লুট করেন তিনি। অবস্থা বেগতিক দেখলে ওই নারীকে বিয়েও করেন তিনি। কয়েক মাস গেলেই বিয়ে করা স্ত্রীকে আবার চলে যেতে বলেন। এই বিয়ে নাকি মুতা বিয়ে। তখন তাদের আবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে।

দেশের শীর্ষ স্থানীয় আলেমদের সাথে কথা বলে জানা গেছে মুতা বিয়ে হলো একটি সাময়িক বা অস্থায়ী বিবাহ। মুতা বিয়ে নিয়ে ইসলামে ভিন্ন মত রয়েছে। শিয়া মুসলমানরা এটিকে বৈধ মনে করে, তবে সুন্নি মুসলমানরা এটিকে অবৈধ মনে করেন। মুতা বিয়ে ইসলামে প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত ছিল, কিন্তু মহানবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তার সময়ে মুতাকে কিয়ামত পর্যন্ত বাতিল করে গেছেন। অথচ মুতার নামে রাজধানীসহ সারা দেশে চলছে নারীদের ইজ্জত লুটের মহোৎসব।

নরসিংদীর এক শিক্ষিতা কুমারী। লেখাপড়া শেষ করে বড় গ্রুপ অব কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পিএস হিসেবে চাকুরিতে যোগদান করেন। চাকুরিতে যোগদানের মাসাধিকাল সময় খুব ভালোই কেটেছিল তাঁর।

হঠাৎ এমডি তার নবনিযুক্ত পিএস এর কাছে বাসা কোথায় জানতে চান। পিএস স্বরুপা (কল্পিত নাম ) জবাবে বলেন উত্তরা। একথা বলার সাথে সাথেই এমডি তার পিয়ন রফিককে ডাকতে শুরু করেন। রফিক আসা মাত্রই এমডি তাকে নির্দেশ দেন অফিসের পিছনে আগুরা ভবনের ফ্ল্যাটটি স্বরূপাকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। স্বরুপা ফ্ল্যাটে উঠতে অনীহা প্রকাশ করলেন। উত্তরা সে তার মায়ের সাথে থাকার কথা উল্লেখ করে স্বরুপা বলেন সেখান থেকে অফিসে আসতে তার কোনো সমস্যা হচ্ছে না। এতেই এমডি চটে গিয়ে খুবই স্টুপিড ওয়ার্ড ইউজ করে বকাবকি শুরু করলেন। এমডির এহেন আচরণে স্বরূপা খুবই মর্মাহত হলেন।

একপর্যায়ে এমডি বলেন, তোমার ভালোর জন্য তোমাকে ফ্ল্যাটে উঠাতে চাইলাম। অথচ তুমি মুখে মুখে না করে দিলে। তোমার মত বেয়াদব মেয়ের কোন দরকার নেই আমার এখানে।এই কথা শুনে স্বরূপার মাথায় হঠাৎ আকাশ ভেঙে পড়লো। চাকুরিটা তার খুবই প্রয়োজন। এসব ভেবে চিন্তে বাবার নির্দেশ মনে করে শেষপর্যন্ত তিনি রফিকের সাথে ফ্ল্যাট দেখার সম্মতি দেন।

বিলাসবহুল ফার্নিচারে ঠাসা তিন বেডের ফ্ল্যাট পুরোটাই ফাঁকা। স্বরূপা রফিকের কাছে জানতে চান এখানে আর কে কে থাকেন? রফিক বলেন এখন থেকে আপনিই এই ফ্ল্যাটের মালিক। ড্রেসিংরুমের কর্নার জুড়ে কসমেটিকের কোনো অভাব নেই। স্বরূপা রফিকের কাছে জানতে চাইলো এসব জিনিসপত্র কার? রফিক তখন হাসতে হাসতে বললো, সবই স্যার আপনার জন্য আনতে বলেছেন। স্বরূপার কাছে এমডিকে তখন দেবতুল্য মনে হলো।

এমন সময়ে এমডি হাসতে হাসতে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করলেন। তখন চট করে বের হয়ে যায় রফিক। স্বরূপার মনে হলো বাইরে থেকে রফিক দরজাটা লাগিয়ে দিয়েছে। খুব ভয় পাচ্ছেন স্বরুপা। বাবার বয়সী এই বৃদ্ধের চেহারার মধ্যে যেমন কেমন ভয়ংকর এক রূপ দেখতে পাচ্ছেন স্বরূপা।

এমডি কাছে এসেই স্বরূপার কাঁধে হাত রেখে বললেন,আজ থেকে এই ফ্ল্যাট তোমার। স্বরূপা তখন চিৎকার করে বলল, স্যার আমি এখানে থাকতে চাইনা। তখন এমডি তাকে ঝড়িয়ে ধরে বললেন এখানে একবার আসলে আর কেউ ফিরে যেতে পারে না। স্যার আমাকে ছেড়ে দিন প্লিজ বলে চিৎকার চেঁচামিচি করতে করতে বলছে, স্যার আমি তখন নরসিংদীর ব্রাহ্মন্দী গার্লস স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী। তখন আপনার দুই মেয়ের একজন অষ্টম শ্রেণীতে মে-বি আরেকজন নবম শ্রেণীতে পড়তো। সত্যি আমি আপনার মেয়ের চেয়েও বয়সে ছোট।

আমাকে ক্ষমা করে দিন স্যার। আমার আর চাকুরির দরকার নেই বলে খুব কান্নাকাটি করছে স্বরূপা। একথা বলতে বলতে সে নিস্তেজ হয়ে যায়। দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর জ্ঞান ফিরে তার। ততক্ষণে তার সব শেষ। স্বরূপা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে বাথ শেষে তার এমডি ড্রেসিং টেবিলের সামনে হাফপ্যান্ট পড়ছে।

এসময় এমডি স্বরূপাকে আর লেইট না করে বাথ শেষ করার কথা বললেন। তখন স্বরূপার চোখের পানি গড়িয়ে পড়ছিল গাল বেয়ে। এমডি তখন কাছে এসে বললো আজ থেকে এই সহায় সম্পত্তির সবকিছুর মালিক হয়ে যাবে তুমি। আর যদি তাতে রাজি না হও তাহলে এই পচা দুর্গন্ধ শরীর নিয়ে বের হয়ে যাও।

স্বরুপা বললেন, আমি তখন এই নির্লজ্জ অমানুষের দিকে তাকিয়ে রইলাম। সিগারেট টানতে টানতে সে বললো যদি রাজি থাকো তাহলে এখনই কাজী ডাকবো। বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখি কাজী এসে হাজির। বিয়ে হলো। দীর্ঘ ৬ মাস কেটে গেলো এভাবে। অফিসের সবাই নানা কানাঘুষা করে। স্ত্রীর কোন মর্যাদাও পাইনি তার কাছ থেকে। যে-সব কাগজে সই দিয়েছিল, তা কি বিয়ের কাগজ ছিল নাকি তাও মনে করতে পারছে না সে। নাকি উলটো ফাঁসানোর দলিল-দস্তাবেজ বানালো এমন ভাবনায় অস্থির সময় কাটে তার। এরকম কৌশলে নাকি সে প্রতিনিয়ত আরো অনেক মেয়েদের ইজ্জত লুট করেছে।

স্বরূপা জানায়, এসব পাপের কারণে তার এই অফিসে তিনবার আগুন লেগেছে। অফিসের সবাই জানে স্বরূপা তাঁর ব্লেকমেইলের শিকার।

স্বরূপা আরো জানায়,তাঁর এখানে একবার আসলে জীবন শেষ না করে আর ফেরাও যায় না। সাড়ে ৪ বছর পর জীবন শেষ করে ফিরে এসেছি অসাহায়ের মত।

কোম্পানির এই অফিসে দীর্ঘ ১২/১৩ বছর যাবত নামাজ পড়ান মাওলানা মাসুদুর রহমান। নামাজ পড়ানোর পাশাপাশি তিনি মুতা বিয়াও পড়িয়ে থাকেন। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তিনি গত একযুগে কত গুলো বিয়ে পড়িয়েছেন। জবাবে তিনি জানান, সঠিক সংখ্যা তাঁর জানা নেই। তবে অ্যাডমিনের স্যারেরা ভালো বলতে পারবেন। এই মাওলানাও পিয়ন রফিকের মত এই বহুল আলোচিত শিল্পপতির নানা অপকর্মের দীর্ঘ এক যুগের সাক্ষী।

মুতা বিয়ে রহিত করার বিষয়ে হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ইবনু আবূ আমর‌ রা. বলেন, ইসলামের প্রাথমিক যুগে নিরুপায় অবস্থায় এটার (মুতা বিয়ের) অনুমতি ছিল। (যেমন নিরুপায় অবস্থায়) মৃত জীব, রক্ত ও শূকরের (গোশ্‌ত ভক্ষণের) ন্যায়। অতঃপর আল্লাহ‌ তার দীনকে শক্তিশালী ও সুদৃঢ় করলেন এবং তা নিষিদ্ধ করলেন। ইবনু শিহাব রহ. বলেন, রাবী’ ইবনু সাব‌রাহ‌ আল জুহানী আমাকে জানিয়েছেন যে, তাঁর পিতা বলেছেন, নবী করিম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে আমি দুটি লাল চাদরের বিনিময়ে আমির গোত্রের একটি স্ত্রীলোকের সাথে মুতা‌ করেছিলাম। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের মুতা ‌ করতে নিষেধ করেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩২০)

* আলী ইবনু আবূ তালিব রা. থেকে বর্ণিত, খাইবারের যুদ্ধের দিন নারীদের সাথে মুতা বিয়ে করতে ও গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। (জামে তিরমিজি, হাদিস নং ১১২১)

* সাবরাহ আল জুহানী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। তিনি বললেন, হে লোক সকল! আমি তোমাদের স্ত্রীলোকদের সাথে মুতা বিয়ের অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু অচিরেই আল্লাহ তায়ালা তা হারাম করেছেন কিয়ামাতের দিন পর্যন্ত। অতএব যার নিকট এ ধরনের বিয়ের সূত্রে কোন স্ত্রীলোক আছে, সে যেন তার পথ ছেড়ে দেয়। আর তোমরা তাদের যা কিছু দিয়েছ তা কেড়ে নিও না । (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ৩৩১৩)

বিষয়:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

বিবিধ নিয়ে আরও পড়ুন

মুতা বিয়ার নামে কুমারীদের ইজ্জত নষ্ট করছে ধনাঢ্য এক শিল্পপতি। টানা ২০ বছর ধরে খোদ রাজধানীতে এ অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন তিনি। সব কিছু হারিয়ে তথ্য প্রমাণ থাকার পরও লোক লজ্জার ভয়ে বিচার চাইতে পারেনি ভুক্তভোগী নারীরা।

৩ দিন আগে

নিবন্ধন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিআর) খান মো. আব্দুল মান্নান এর পাশে এখন আর কেউ নেই। আদালত খান মো. আব্দুল মান্নান ও তার স্ত্রী সাকিলা বেগমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দেয়ার পর একদিনেই পরিস্থিতি একেবারে পাল্টে গেছে।

৯ দিন আগে

হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গড়ে তোলা শিল্পকারখানা নিয়ে এখন চরমভাবে শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা। জ্বালানি সংকট, ঋণের উচ্চ সুদহার, ডলার সংকট, নিরাপত্তাহীনতা, মামলা-হামলাসহ নানান রকম সংকটে ব্যবসায়ীরা। চরম গ্যাস ও ব্যাংকিং সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দেশের কল-কারখানাগুলো।

১৯ দিন আগে

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিসরির বরাতে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) একমত হয়েছেন— উভয়পক্ষই বিকাল ৫টা থেকে স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে সব ধরনের সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করবে।

১০ মে ২০২৫